বরিশাল

ভোলায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে যুবক নিখোঁজ: দুই কনস্টেবল বরখাস্ত

  প্রতিনিধি ২৪ নভেম্বর ২০২২ , ৭:৪৪:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

নিয়াজ মাহমুদ জয়, ভোলা প্রতিনিধি:

ভোলার দৌলতখান উপজেলায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে পড়ে মো. নোমান (২৭) নামে এক যুবক নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মো. রাসেল (পুলিশের গাড়ি চালক) ও মো. সজীব নামে দুই পুলিশ কনস্টেবলকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঘটনার পর দৌলতখান ফায়ারসার্ভিস ও বরিশাল কোষ্টগার্ডের একটি ডুবুরি দল নোমানকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার পাতার খাল মাছ ঘাট সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভোলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আসাদুজ্জামান দুই কনস্টেবল বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিখোঁজ নোমান দৌলতখান উপজেলার চর খলিফা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আবুল কালাম বেপারির ছেলে এবং এক সন্তানের জনক৷ তিনি পেশায় দিন শ্রমিক। দৌলতখান পাতার খাল মাছ ঘাটে শ্রমিকের কাজ করতেন নোমান।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে স্থানীয় দিন শ্রমিক ইসমাঈল, ফারুক, গুণী ও নোমানসহ আরো ৭/৮ জন পাতার খাল মাছ ঘাট মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় জুয়া খেলছিল। এসময় দৌলতখান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) স্বরুপ কান্তি পালের নেতৃত্বে পুলিশ কনস্টেবল রাসেল ও সজীব নোমানদের জুয়ার আসরে গিয়ে তাদেরকে ধাওয়া করে। এসময় ফারুক, ইসমাইল, রুবেল ও নোমান পুলিশের ধাওয়া খেয়ে মেঘনা নদীতে পড়ে যায়। এদের মধ্যে ফারুক, ইসমাইল ও রুবেল সাঁতরে তীরে উঠতে আসতে পারলেও নোমান পানিতে ডুবে যায়।

ফারুক ও রুবেল জানান, পুলিশের ধাওয়া খেয়ে তাঁরা ৪ জন মেঘনা নদীতে পড়ে যায়। এদের মধ্যে তাঁরা ৩ জন সাঁতরে তীরে উঠতে যায়। এরই মধ্যে পুলিশ উপর থেকে নোমানকে লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়তে থাকে। তাদের ধারণা পুলিশের নিক্ষেপ করা ইট নোমানের মাথায় লেগে মাথা আঘাতপ্রাপ্ত হয়। যাঁর কারনে নোমান সাঁতরে তীরে উঠতে পারেনি।

দৌলতখান পৌরসভা ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আমিন মাঝির ছেলে মো. রিয়াজ উদ্দিন, নদীর মধ্যে পড়ে নোমান বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিল। এসময় তিনি (রিয়াজ) নোমানকে নদী থেকে উদ্ধারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এসময় এসআই স্বরুপ কান্দি পাল তাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়।

এদিকে নোমানের নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তাঁর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তাঁর স্ত্রী, ছেলে, বাবা-মা এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানান। তাঁরা এ ঘটনায় জড়িত পুলিশের উপযুক্ত বিচারের দাবি জানান।

ঘটনার পর দৌলতখান ফায়ারসার্ভিস ও বরিশালের একটি ডুবুরি দল নোমানকে উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছেন।

দৌলতখান ফায়ারসার্ভিসের লিডার মো. শাহাদাত হোসেন জানান, বিকেল ৫টা থেকে ডুবুরি দল নোমানকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এখনো নোমানের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

ভোলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান (প্রশাসন ও অর্থ) খান জানান, এ ঘটনায় ভোলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে কনস্টেবল রাসেল ও সজীবকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটির তদন্ত চলমান রয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি বলেও জানান পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by