বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে যশোর এক অনন্য ইতিহাস সৃষ্টিকারী জেলা। মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ এবং মুক্তিকামী মানুষের প্রতিরোধে এই জেলা দেশের মধ্যে প্রথম শত্রুমুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধে যশোর রোড ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ইতিহাসের পাতায়। ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রসঙ্গ এলে যশোর রোডের কথা আসবেই। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যশোর রোডের শরণার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্দশা ও যুদ্ধচিত্র নিয়ে মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ রচিত কবিতা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। মার্কিন কবি অ্যালেন গিন্সবার্গের সেই কালজয়ী কবিতা অবলম্বনে গীতি নৃত্যনাট্য পরিবেশন করবে যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় একাডেমির মিলনায়তনে এই গীতি নৃত্যনাট্য মঞ্চায়ন হবে। জেলা প্রশাসনের অফিসিয়াল ফেসবুক ও সিটি ক্যাবলে তা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। করোনার সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিবেচনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি ভার্চুয়াল ও ক্যাবল টিভির মাধ্যমে গীতি নৃত্যনাট্যটির মঞ্চায়ন ও প্রচার করা হবে।

আয়োজক সূত্রে জানাগেছে, যশোরের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অধ্যাপক সুকুমার দাস গীতি নৃত্যনাট্যটির স্ক্রিপ্ট রচনা করেছেন। এটির নাচের অংশের পরিচালনায় রয়েছেন নৃত্যগুরু সঞ্জীব চক্রবর্তী জন ও খাদিজা ইসলাম। গানের অংশ পরিচালনায় আছেন তাওহিদুল ইসলাম ও শায়ন্তনী দেবনাথ। এছাড়া নাট্যাংশের পরিচালনায় কামরুল হাসান রিপন ও ভিডিও সম্পাদনায় রয়েছেন অসীম সাহা।
জনসমাগম এড়াতে আয়োজনটি জেলা প্রশাসন যশোরের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে (facebook.com/dcjashore) এবং সিটি কেবল নেটওয়ার্কে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহ-সভাপতি অধ্যাপক সুকুমার দাস বার্তা ২৪.কম-কে জানান, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যশোর রোডের শরণার্থীদের অবর্ণনীয় দুর্দশা ও যুদ্ধচিত্র নিয়ে লেখা ‘সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’ কবিতাটি খান মোহাম্মদ ফারাবি বাংলায় ভাষান্তর করেন। এর অনেক পরে ১৯৯৯ সালে ভারতীয় সংগীত শিল্পী কবিতাটি ভাবানুবাদ করে গানে রূপ দেন। আট থেকে সাড়ে আট মিনিটের এই গান নিয়ে নির্মিত হয়েছে গীতি নৃত্যনাট্য ’সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড’। যেখানে বৃটিশ আমল থেকে ৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধের দৃশ্যপট মেলে ধরা হয়েছে। শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে মুজিব বর্ষের সেপ্টেম্বরেই আয়োজিত এ অনুষ্ঠান স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ সকল মুক্তিযোদ্ধা ও গিন্সবার্গের মতো বন্ধুদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ বলে মনে করছেন শিল্পকলা কর্তৃপক্ষ।