প্রতিনিধি ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ , ৫:৩৪:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ
ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুরে ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে গৌরীপুর সরকারি কলেজের ছাত্র শহিদ আজিজুল হক হারুনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবিতে শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম গৌরীপুর উপজেলা শাখা’র উদ্যোগে নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের ছামারুল্লাহ গ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
৬৯’র ২৭ জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে শহিদ হন ছামারুল্লাহ গ্রামের মিয়া বক্স সরকারের পুত্র হারুন।বক্তারা বলেন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হারুনের আজও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মিলে নাই। ৬৯’র গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসেও আজ ঠাঁই পায়নি তার অনন্য গাঁথা কৃতিত্ব । ৫৫বছরেও হারুনের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পাওয়া দু:দুঃখজনক।
এছাড়াও তার নামে গৌরীপুর বা নান্দাইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন বা নামকরণ, নান্দাইল ও আঠারবাড়ি সড়কটিকে শহিদ হারুন সড়ক নামকরণ, হারুনের কবরের পাশে স্মৃতিফলক নির্মাণের দাবি জানায়। মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ) কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও উপজেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মো. রইছ উদ্দিন।
বক্তব্য রাখেন কালের কণ্ঠের আঞ্চলিক প্রতিনিধি আলম ফরাজী, প্রথম আলোর নান্দাইল প্রতিনিধি রমেশ কুমার পার্থ, শহিদ হারুনের ছোট ভাই শফিকুল আলম চাঁন মিয়া, চন্ডীপাশা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার বিএমএসএফ গৌরীপুরের সহসভাপতি মো. আব্দুল কাদির (বিডি ২৪ লাইভ), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বুরহান (আজকালের খবর), হলি সিয়াম শ্রাবণ (দ্য মর্নিং গ্লোরী), সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশিকুর রহমান রাজিব (আজকের শতাব্দী), কার্যনির্বাহী সদস্য মাহফুজুর রহমান (প্রেস নিউজ ২৪), তাসাদদুল করিম (বাংলার নেত্র), শামীম আনোয়ার (ফুলতারা)।
এছাড়াও মানববন্ধনে পরিবারের পক্ষে থেকে অংশ নেন ইফতেখার হোসেন, মো. রফিকুল ইসলাম. মো. সোহেল রানা, মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, মো. সুরুজ মিয়া, মো. আজহারুল ইসলাম, নাদির শাহ, মো. আব্দুল কাইয়ুম, মো. মোস্তফা কামাল, মো. এরশাদ মিয়া প্রমুখ। ৬৯’র গনঅভ্যুত্থানের পুলিশের গুলিতে শহিদ হন গৌরীপুর কলেজের ছাত্র আজিজুল হক হারুন। ‘জয় বাংলা, তুমি কে আমি কে, বাঙালি বাঙালি, জেলের তালা ভাঙবো, শেখ মুজিবকে আনবো, ৬দফা-১১দফা মানতে হবে-মেনে নাও এই শ্লোগানে ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে মিছিলটি মধ্যবাজারে আসা মাত্রই কণ্ঠরোধ করতে তৎকালীন মহকুমার প্রশাসক এম, এ সামাদের নির্দেশে গৌরীপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এম.এ মল্লিক গুলি চালায়।
হারুনের রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ। শহিদ হারুনের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার চন্ডীপাশা ইউনিয়নের ছামারুল্লাহ গ্রামে। মিয়া বক্স সরকারের পুত্র হারুনদের ৬ ভাই, ৩ বোন। নান্দাইল-আঠারবাড়ি সড়কের পাশেই চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন। গণঅভ্যুত্থানে শহিদ আসাদ, মিন্টু রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেলেও আজও হারুনের স্বীকৃতি মিলেনি।
একই সময়ে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও শহিদ হারুনের পরিবারের সদস্যরা কবর জিয়ারত, হারুন স্তম্ভে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ ও তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মো. হাফিজ উল্লাহ। এছাড়াও হারুন স্মৃতি পরিষদের সদস্যরা ২৭ জানুয়ারি সকাল ১১টায় শহিদ হারুন পার্কে নির্মিত হারুণ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।