দেশজুড়ে

সিংড়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের

  প্রতিনিধি ১২ জুন ২০২৪ , ৫:৩৪:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

সিংড়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের

কুরবানির ঈদ এলেই টুংটাং শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে দেশের কামার পট্টিগুলো। বেড়ে যায় কামারদের ব্যস্ততা। হাতুড়ি পেটা শব্দে মুখর নাটোরের সিংড়া উপজেলার কামারপট্টিগুলো। সারাদিন তপ্ত ইস্পাত গলিয়ে চলছে দা, বটি, ছুরি তৈরির কাজ।

সরেজমিনে উপজেলাব্যাপী ঘুরে দেখা যায়, দম ফেলারও সময় নেই কামারদের। নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ করছেন তারা। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন। কামারপাড়ায় এখন গেলেই শোনা যায় হাতুড়ি পেটানোর শব্দ। কেউ ভারি হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরঙা লোহার খ-। কেউ ভোঁতা হয়ে পড়া দা ও ছুরিতে শাণ দিচ্ছেন। কেউবা হাপর টানছেন। কেউ আবার কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন।

সিংড়ার বিভিন্ন কামারের দোকান ঘুরে দেখা যায় দা, ছুরি, চাকু ও বটির বেচাকেনা বেড়েছে। দামও সন্তোষজনক। তবে কামারপট্টির কারিগররা অভিযোগ করেন, তাদের পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম। সারা দিন আগুনের পাশে বসে থাকতে হয়। ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। তারা আরও বলেন, সারাবছর আমাদের মোটামুটি কাজ হয়।

তবে এই সময় বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। উৎপাদন ও প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ায় লাভ আগের চেয়ে কম।সিংড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে কামারপট্টিতে কাজ করেন দুই ভাই রাম ও লক্ষণ। তারা বলেন, সারাবছর বেচাকেনা কিছুটা কম থাকে। কোনোরকম দিন যায়। এই সময়ের জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকি। কুরবানির ঈদের আগে বেচাকেনা ভালো হয়।

উপজেলার কয়েকজন কামার জানান, কুরবানি ঈদে তারা প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তৈরি করেন। বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম অনেক বেড়েছে। সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। এছাড়া আধুনিকতার ছোঁয়ায় এসব পণ্য তৈরির বেশকিছু প্রযুক্তি-নির্ভর হওয়ায় কামার সম্প্রদায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে।

আশিকুর রহমান নামে একজন ক্রেতা জানান, কুরবানি ঈদের বেশ কিছুদিন বাকি থাকলেও অনেকে পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম কেনার কাজটি সেরে ফেলছেন। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার ছুরি, চাকু, বটির দাম একটু বেশি। সোহরাব হোসেন নামে একজন বলেন, দাম কিছুটা বেশি তবুও তো ছুরি-বটি কিনতে হবে।