রংপুর

সৈয়দপুরে শহীদ আমিনুল হকের স্মৃতিফলক উন্মোচন

  প্রতিনিধি ২৮ জুন ২০২১ , ৮:১৪:৩১ প্রিন্ট সংস্করণ

ওবায়দুল ইসলাম, নীলফামারী :

সৈয়দপুরে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ আমিনুল হকের স্মৃতিফলক সোমবার উন্মোচন করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের এ দিনে সৈয়দপুরের সেনানিবাসে হত্যা করা হয় ওই বুদ্ধিজীবীকে। প্রজন্ম ৭১ এর সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা শাখার উদ্যোগে স্মৃতিফলকটি উন্মোচন করেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ রাবেয়া আলিম।

বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন শহীদ আমিনুল হক ওরফে গোলে ভাই। অনেকে তাঁকে গোলে ডাক্তার বলে ডাকতেন। শহরের নতুন বাবুপাড়ায় বেড়ে ওঠেন তিনি। তরুণ বয়সে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সময় রাজনৈতিক মামলায় ৬ মাস তিনি কারাভোগ করেন। পরে পূর্ব পাকিস্তানে থানা আ.লীগের কোষাধ্যক্ষ হন। ১৯৭০ সালে নির্বাচন এবং পরে স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সৈয়দপুর উপজেলার পাড়া মহল্লা এবং গ্রামগঞ্জে প্রচার করে নিরব থাকা বাঙালিকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করেন। ওই সময় হাজারীহাট বাজারে মুসলিম লীগের গুন্ডাবাহিনীর আক্রমণের শিকার হন তিনি। ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ পাক হানাদার বাহিনী তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় সৈয়দপুর সেনানিবাসে। সেখানে তাঁকে নির্মম নির্যাতন করা হয়।

পরে সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। সেখান থেকে প্রতিদিন ট্রাকে তুলে তাকে নেয়া হয় সৈয়দপুর বিমানবন্দরের মাটিকাটার কাজে। শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হয় তাকে। সারাদিন কাজের বিনিময়ে দেয়া হতো একটি মাত্র রুটি। কাজে ভুল করলে খান সেনার সুবেদার ফতেহ খান চাবুক দিয়ে তাকে নির্যাতন করতেন। পরে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে পাক বাহিনীর দোসররা। ২৮ জুন আবার তাকে সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নিয়ে যাওয়া হয় সৈয়দপুর সেনানিবাসে। সেখানে দফায় দফায় তাকে করা হয় নির্যাতন। সেখান থেকে আবার তাকে আনা হয় শহরের ভুলিয়া মাড়োয়ারীর পাটগুদামে।

 

সেখানে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এ সৈনিকের প্রথমে চোখ তুলে নেয় দোসসরা। এরপর কান, হাত ও পা কেটে মাটি চাপা দেয়া হয়। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে শহীদ আমিনুল হকের অবদান স্মরণীয় রাখতে সেই পাট গুদামে স্মৃতিফলক উন্মোচন করা হয়। প্রজন্ম ৭১ এর সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন জানান বিভিন্ন কর্মসুচির মধ্য দিয়ে শহীদ আমিনুলের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়। তার স্মৃতি ধরে রাখতে সরকারি উদ্যোগের আশা করেন তিনি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by