প্রতিনিধি ২৯ জুন ২০২১ , ৭:৫১:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ
প্রখ্যাত লেখক, পরিচালক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের আঁকা ছবি আত্মসাতের অভিযোগে দুই জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার স্ত্রী অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন। আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে মামলাটি তিনি এ মামলা দায়ের করেন।
আদালত বাদিনীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে আগামি ২৯ আগস্ট প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আসামিরা হলেন- জনৈক রুমা চৌধুরী এবং তার প্রাক্তন স্বামী পুস্তক ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সাহা।
মামলার অভিযোগ বলা হয়, হুমায়ূন আহমেদ ২০১২ সালে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় অবস্থানকালে অবসর সময়ে পুত্র নিষাদকে নিয়ে বেশ কিছু ছবি এঁকেছিলেন। সে সময় রুমা এবং বিশ্বজিতের সাথে ঘনিষ্ঠতা হয় তার। এরই সূত্রে হুমায়ূন আহমেদ তার আঁকা ২৪টি ছবি প্রদর্শনী আয়োজনের উদ্দেশ্যে আসামিদের ২০১২ সালের জুন মাসে প্রদান করেন। শর্ত ছিল, প্রদর্শনী শেষে তারা সেই ছবিগুলো ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু আসামিদের উদ্দেশ্য ছিল ছবিগুলো বিক্রি করে কমিশন লাভ করা এবং পরবর্তীতে সেগুলো বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করা। তারা হুমায়ূন আহমেদকে বারবার প্রস্তাব করলেও তিনি তাতে কর্ণপাত করেননি।
অভিযোগে বলা হয়, ছবিগুলো বিক্রি করে অর্থ লাভের জন্য নয়, নিজের ও পুত্র নিষাদের আনন্দের জন্য এঁকেছেন বলে আসামিদের জানিয়ে দেন হুমায়ূন আহমেদ। হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর মেহের আফরোজ মাওন সন্তানসহ দেশে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে শাওন আসামিদের কাছে ছবিগুলো ফেরত চাইলে আসামিরা টালবাহানা শুরু করে। উপায়ান্তর না পেয়ে শাওন বিষয়টি তৎকালীন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের জানিয়ে সহযোগিতা কামনা করেন। এর ফলশ্রুতিতে রুমা তার প্রাক্তন স্বামী বিশ্বজিৎকে দিয়ে হুমায়ূন আহমেদের মা আয়েশা ফয়েজের মিরপুরের পল্লবীর বাসায় ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ২৪টি ছবির মধ্যে ২০টি ফেরত দেয়। বাকী চারটি ছবি ফেরত না দিয়ে আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে প্রতারণা ও অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ করেন।
অভিযোগে শাওন আরও বলেন, আত্মসাৎ করা হুমায়ূন আহমেদের অঙ্কিত ছবিগুলোর মূল্য শৈল্পিক বা আর্থিক নিক্তিতে পরিমাপ করা সম্ভব না। যা হুমায়ূন আহমেদের জীবনের শেষ দিনগুলোতে তার সাথে পুত্র নিষাদের কাটানো সময়ের স্মৃতি বিজড়িত। আসামিদের কাছ থেকে ছবিগুলো উদ্ধার করা না গেলে তা বেহাত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত বা ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। আর এতে শুধু প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের পরিবারই নয়, সর্বোপরি দেশ ও জাতির অপূরনীয় ক্ষতি হবে।