আন্তর্জাতিক

৫ দিন পরও উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকে ৪০ শ্রমিক

  প্রতিনিধি ১৬ নভেম্বর ২০২৩ , ৩:১৩:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

৫ দিন পরও উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকে ৪০ শ্রমিক

ভারতের উত্তরাখণ্ডে নির্মাণাধীন টানেলের ভেতর এখনও আটকে আছেন ৪০ জন শ্রমিক। রোববার (১২ নভেম্বর) ভোরে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটির একটি অংশ ধসে পড়ে। এরপর কেটে গেছে ৯৬ ঘণ্টা।

এখনও উদ্ধার করা যায়নি উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের। তবে দিল্লি থেকে আনা হয়েছে মার্কিন ড্রিল। বুধবার উদ্ধারকারীরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, একদিনের মধ্যেই আটকা শ্রমিকদের বের করার ব্যবস্থা করা যাবে।

কিন্তু পাহাড়ে একের পর এক ধস নামতে থাকায় বুধবারও তা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে একটি বিশেষ যন্ত্র আনা হয়েছে। এই বিশেষ ধরনের মার্কিন ড্রিলের সাহায্যে অনেক সহজে আটকা শ্রমিকদের কাছে পর্যন্ত রাস্তা তৈরি করা সম্ভব হবে বলে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন।

বস্তুত, ওই ড্রিলের সাহায্যে একটি লম্বা পাইপ ঢুকিয়ে দেওয়া হবে ধস ভেদ করে। তার ভেতর দিয়ে শ্রমিকেরা বাইরে বেরিয়ে আসতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে যে কোনও সময় আবার ধস নামার আশঙ্কা আছে। ধস নামলে পাইপ ঢোকানোর কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, উদ্ধারকারীদের সঙ্গে বিশেষজ্ঞ দল থাকা প্রয়োজন। পাহাড়ের চরিত্র বুঝে ড্রিলের কাজ যারা করাতে পারবেন।

এদিকে পাঁচদিন ধরে ৪০ জন শ্রমিক আটকে থাকায় ঘটনাস্থলে উত্তেজনাও দেখা দিয়েছে। বুধবার বেশ কিছু সংগঠন ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ করেন। বৃহস্পতিবারও তারা ওই এলাকায় পৌঁছেছেন। পুলিশ অবশ্য জায়গাটি ঘিরে দিয়েছে।

উদ্ধারকারী এবং বিশেষজ্ঞ ছাড়া আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আটকা শ্রমিকেরা যাতে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারেন, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন।

উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গের এই ধস আরও ব্যাপক কিছু প্রশ্ন সামনে নিয়ে এসেছে। মূলত চারধাম যাত্রা প্রজেক্টের জন্যই ওই সুড়ঙ্গ কাটা হচ্ছিল। এর ফলে ৫০ মিনিটের রাস্তা পাঁচ মিনিটে যাওয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছিল প্রশাসন। বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, ৫০ মিনিট বাঁচানোর জন্য এই ভয়াবহ ধ্বংসলীলা চালানোর কী প্রয়োজন?

ঘটনাস্থলে গেছেন ইঞ্জিনিয়ার এবং পরিবেশবিদ বিভাংসু কাপারওয়ান। তিনি জানিয়েছেন, ‘যে অঞ্চলে এই সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ চলছে, সেখানে পাথর নরম। এমনিতেই এই অঞ্চল ধসপ্রবণ। তার মধ্যে এমন সুড়ঙ্গ তৈরি অত্যন্ত বিপজ্জনক।’

বিভাংসুর বক্তব্য, সুড়ঙ্গ তৈরি হওয়ার পরেও বিপদের আশঙ্কা আছে। আরও বেশি ধস নামারও আশঙ্কা আছে।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞ দীপায়ন দে জানিয়েছেন, ‘উন্নয়নের নামে সরকার পরিবেশকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিচ্ছে। যেভাবে হিমালয় কাটা হচ্ছে তা ভয়াবহ।’

দীপায়নের বক্তব্য, পাহাড়ে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। তারপরও কারও টনক নড়ছে না। এই মুহূর্তে এই ধরনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া উচিত।

বস্তুত, দীপায়নের বক্তব্য, যে ধরনের সয়েল টেস্ট করে এই ধরনের প্রজেক্ট হওয়া উচিত, অনেক ক্ষেত্রেই তা হচ্ছে না। হলে এমন বিপর্যয় ঘটতো না। ওই অঞ্চলে এমন সুড়ঙ্গের নির্মাণই হতো না।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by