রংপুর

পানকৌড়ির নিরাপদ আশ্রয়স্থল শিমুল গাছ

  প্রতিনিধি ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৮:১৩:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

আশরাফুল আলম, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) :

চারদিকে সবুজে শ্যামলে সমারোহ। মাঝখানে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে একটি বিশাল আকারের শিমুল গাছ। বিকেলের সোনালি রোদে শিমুলের ডালে ডালে পানকৌড়ির পালক জ্বল জ্বল করছে। এ যেন পানকৌড়ির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।

উপজেলার কেউটান গ্রামের এ শিমুলগাছটি যেন পানকৌড়ির নিরাপদ আশ্রয়স্থল। একটি গাছে একসঙ্গে এত পানকৌড়ি দেখে শত ব্যস্ততার মধ্যেও অনেক পথচারী একটু দাঁড়িয়ে চোখ জুড়িয়ে নিচ্ছেন। আর তা দেখে প্রাণজুড়ায় ওই গাছের মালিক যাদব রায়ের।

যাদব রায়ের বাড়ি উপজেলার শান্তিপুর হয়ে কাঠালডাঙ্গী যাওয়ার সড়ক ঘেঁষা কেউটান গ্রামে।
যাদব রায় বলেন, পাখি সংরক্ষণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আর এখানে পাখি আসে বলেই প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অগনিত পাখিপ্রেমী শুধু পাখিই দেখতে আসে। এ দেখে ভালো লাগে। শীতের মৌসুম শেষের সঙ্গে সঙ্গে পাখিদের উপস্থিতিও কমে যায়। এক সময় ধীরে ধীরে শিমুল গাছ পাখি শুণ্য হয়ে পড়ে। তখন বুকটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আবার যখন গরম শেষে শীত মৌসুম ফিরে আসে তখন এই পাখিগুলোও ফিরে আসে। তখন বুকটা ভরে যায়। পাখির কারণে কিছু ক্ষতি হলেও, সব ক্ষতি আমি মেনে নিয়েছি।

সরেজমিনে দেখা যায়, কুলিক নদীর পাশে সব গাছ ছাড়িয়ে মাথা উঁচু করে আছে একটি শিমুল গাছ। গাছের ডালে ডালে শুধু পানকৌড়ি আর পানকৌড়ি। কত যে পানকৌড়ি, তার হিসাব নেই। পানকৌড়ির কলকাকলিতে মুখর চারদিক। আর এই দৃশ্য দেখতে ভিড় করেন অনেকেই।

আর এই পাখির নিরাপদ অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে গাছটি। তবে স্থানীদের অভিযোগ, আগের মতো এবারে একটু কম দেখা মিলছে এই পাখিদের। কারণ ইদানিং কিছু মানুষ বন্দুক দিয়ে পাখিগুলো শিকার করছেন। পাখি শিকারে তাদের বারণ করা হলেও তারা কোন কথা শোনে না। কেউটান গ্রামের বাসিন্দা দুলাল বলেন, রাতে পাখিগুলো শিমুল গাছটিতেই থাকে। সকাল হলেই পাখিগুলো বেড়িয়ে পরে খাদ্যের খোঁজে।

আবার সন্ধ্যা হলেই ফিরে আসে গাছটিতে। দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। এই পানকৌড়ি পাখিগুলো শিমুল গাছটিকে তাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল মনে করে বাস করছে।

সাবেক অধ্যক্ষ ও পাখিপ্রেমী তাজুল ইসলাম বলেন, পাখিগুলোর কারণে ওই এলাকা সৌন্দর্য ফিরে পায়। পাখি আমাদের পরিবেশ রক্ষায় প্রচুর ভূমিকা রাখে। তাই পানকৌড়ি পাখিগুলোর নিরাপত্তা সহকারে পরিচর্যা করলে পাখির সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলকান জুলকার নাইন কবির বলেন, পাখি শিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি পাখিগুলোর নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনিক তৎপরতা আরও জোরদার করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content