দেশজুড়ে

ভাঙন থামছে না তিস্তা পাড়ে

  প্রতিনিধি ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩:৫৪:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

আব্দুল বারী বাবু, গঙ্গাচড়া (রংপুর):

 

তীব্র ভাঙন ও বন্যায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তাপাড়ের মানুষ। গত সাত দিনে তিস্তার পেটে বিলীন হয়েছে একটি গ্রামের শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি, ঈদগাহ ও ফসলি জমি। হুমকির মুখে রয়েছে বিদ্যালয়সহ আরো নানান স্থাপনা।

জানা যায়, এবছর জুন থেকে দফায় দফায় বন্যার কবলে পড়ে তিস্তা তীরবর্তী ল²ীটারী, কোলকোন্দ, নোহালী, গজঘন্টা, আলমবিদিতর, মর্নেয়া ও গঙ্গাচড়া ইউনিয়ন। আগস্টের শেষ থেকে তিস্তার পানি প্রবাহ ওঠানামা করছে। যার কারণে তিস্তার ভাঙনে প্রতিনিয়ত বিলীন হচ্ছে বসতভিটা, ঈদগাহ, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, রাস্তাঘাট, কালভার্ট, সরকারি স্থাপনা ও ফসলি জমি। মাঝে মধ্যে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করলে ঘরবাড়ি সরানোর মতো সুযোগও পাচ্ছে না কেউ কেউ।
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ভাঙন ও বন্যা দেখা দিলেও কয়েকদিন ধরে তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে  পূর্ব ইচলি গ্রাম। গত পাঁচ দিনে গ্রামটির শতাধিক বসতভিটা ও ঐতিহ্যবাহী পূর্ব ইচলি ঈদগাঁ মাঠ বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে মোনাজত উদ্দিন আনন্দ স্কুল, হরি মন্দির, জয়রামওঝা ঈদগাহ, জয়রামওঝা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শেখ হাসিনা দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়ক। ভাঙন অব্যাহত থাকলে দুই একদিনের মধ্যে শংকরদহের মতো পূর্ব ইচলি বিলীন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে এলাকাবাসী। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব ইচলি গ্রামের রহমান, জাহের আলী, হজরত, মনোয়ারুল বলেন, চোখের সামনেই সবকিছু ভেসে গেল। ঘরের টিন খুলে সরানো সম্ভব হলেও অনেক আসবাবপত্র তিস্তায় ভেসে গেছে। জমি নেই বাড়ি করার। কোথায় যাবো আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।

একই এলাকার সামসুদ্দিন, মিঠু, দুলু বলেন, হামরা নদীতে ভাসি যাচ্ছি। মেম্বর, চেয়ারম্যান যতটুকু পারতেছে দেখশুন করতেছে। বাকি অন্য কারও দেখা নাই। সরেজমিনে দেখা যায়, বসত ভিটায় পানি উঠায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে তালেব, ছামাদ, আজিজুল, আশরাফের মতো শত শত পরিবার।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জরুরী বরাদ্দ থেকে জিও ব্যাগ ফেলা হলেও তা অসময়ে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে নদীপাড়ের মানুষদের। এ প্রসঙ্গে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী তবিবুর রহমান বলেন, তিস্তা কখন কোথায় ভাঙবে তা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়। যেখানে ভাঙন দেখা দিচ্ছে সেখানেই জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।  প্রতিনিয়তই নদীর পাড় ভাঙছে, দীর্ঘ হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা। তিস্তার তলদেশ ভরাট হওয়ায় সামান্যতেই বন্যা আর ভাঙনের মুখে পড়ে তিস্তাপাড়ের মানুষ। তাই নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে নদীপাড়ের মানুষজন।

আরও খবর

Sponsered content