প্রতিনিধি ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৪:৩৬:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী নাফ নদী থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে কান কিয়া গ্রামে কয়েকশ’ মানুষের বাস ছিল। ২০১৭ সালে রাখাইনের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে মিয়ানমারের সেনা অভিযানের সময় কান কিয়াতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ওই সময় কান কিয়াসহ রাখাইন থেকে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ওই অভিযানকে সেনাবাহিনী সন্ত্রাস দমনের অভিযান বললেও জাতিসংঘ একে ‘জাতিগত নিধন’ বলে অভিহিত করেছে।
এক সময় কান কিয়া গ্রামটি যেখানে ছিল সেখানে এখন ডজনের বেশি সরকারি ও সামরিক ভবন গড়ে উঠেছে। স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ওই এলাকার ছবিতে পুলিশ ঘাঁটির জন্য নির্মাণ করা আঁকাবাঁকা বেড়াও দেখতে পাওয়া যায়। ‘গুগল আর্থে’ এখন ওই ছবিগুলো দেখতে পাওয়া যায়। ‘প্ল্যানেট ল্যাব’ থেকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছেও কয়েকটি ছবি পাঠানো হয়েছে। মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ওই গ্রামটিতে আগে থেকেই বিদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের ‘ম্যাপিং ইউনিট’ ২০২০ সালে দেশটির নতুন মানচিত্র তৈরি করেছে। মিয়ানমারের সরকারি মানচিত্রের ভিত্তিতে এটি তৈরি করা হয়েছে। নতুন মানচিত্রে গুঁড়িয়ে ফেলা কান কিয়া গ্রামের নাম আর নেই। বরং ওই জায়গাটিকে এখন কাছের মংডু শহরের বর্ধিত অংশ বলা হচ্ছে।
নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, ২০১৭ সালের অভিযানের সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কান কিয়াসহ অন্তত ৪০০ গ্রাম ধ্বংস করেছে। ধ্বংস করা গ্রামগুলোর মধ্যে অন্তত এক ডজন গ্রামের নাম এখন মানচিত্র থেকেও মুছে ফেলা হয়েছে।
বাংলাদেশের শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নেতা ও গ্রামটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিক বলেন, ‘তারা চায় আমরা যেন আর ফিরে না যাই।’
রাখাইন রাজ্যের পুর্নগঠনের কাজ দেখভাল করছে মিয়ানমারের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। গ্রামের নাম মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার কারণ এবং কবে নাগাদ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনা হবে সে বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চেয়েছিল রয়টার্স। তবে তারা এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।