ঢাকা

অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি পেলেন হাবিবুর রহমান

  প্রতিনিধি ১০ অক্টোবর ২০২২ , ৯:১০:৫১ প্রিন্ট সংস্করণ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি পেলেন ঢাকা রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. হাবিবুর রহমান।

সোমবার (১০ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা থেকে এক আদেশে তাকে বদলি করা হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন উপসচিব ধঞ্জয় কুমার দাস।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঢাকা রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. হাবিবুর রহমানকে ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্বে) হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

হাবিবুর রহমান ১৯৬৭ সালে গোপালগঞ্জের চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৭তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে তিনি সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে যোগ দেন। বাংলাদেশ পুলিশে দায়িত্ব পালনকালে তিনি তিনবার বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও দুবার রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) পেয়েছেন। পেশাগত কাজের বাইরে তিনি লেখালেখিও করেন। এছাড়া তিনি একজন ক্রীড়া সংগঠকও। দেশের কাবাডি নিয়েও তিনি কাজ করছেন।

তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে নিয়ে বই সম্পাদনা করেছেন, যাতে দেখিয়েছেন দূরদর্শিতা। বইটিতে তুলে আনেন মন্ত্রীর বাল্যকাল, পড়াশোনা, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ সহ রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার বিষয়াবলি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হয় ‘নন্দিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান’ বইটি। বইটি প্রকাশ করে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড।

এছাড়া ২০১৮ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা তুলে ধরে একটি বই সম্পাদনা করেন ডিআইজি হাবিব। যার নাম দেন ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’। এছাড়া সর্বশেষ চলতি বছরের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় হাবিবুর রহমানের গবেষণাগ্রন্থ ‘ঠার: বেদে জনগোষ্ঠীর ভাষা’। বইটিতে তিনি বেদেপল্লির অজানা ভাষাকে একটি পূর্ণাঙ্গ বই হিসেবে লিখিত রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের হাট বাসুদেবপুর গ্রামে সান্দার বেদে গোত্রের প্রায় ২০০টি পরিবার স্থায়ীভাবে বসবাস করে। যাদের শতভাগ মুসলমান। অথচ এ জনগোষ্ঠীর কেউ মারা গেলে মুসলিম ধর্মীয় রীতি নীতি অনুযায়ী তার জানাজা ও দাফন-কাফনও করতে পারতো না। পরিবারের কোনো সদস্য মারা গেলে আশপাশের কোনো কবরস্থানে তাদের কবরও দিতে দেওয়া হতো না। এমন করুণ অবস্থা জানতে পেরে এক খন্ড জমি কিনে তা দান করেন এ জনগোষ্ঠীর ২০০ পরিবারের কল্যাণে।

তাছাড়া ২০২০ সালের শুরুতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় বহু পুরনো যৌনপল্লীতে প্রথমবারের মতো একজন যৌনকর্মীর পুরোপুরি ইসলামী প্রথা মেনে জানাজা পড়িয়ে দাফন করা হয়। পরে চেহলামেরও আয়োজন করা হয়। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হিসেবে করে দিয়েছেন পশু খামার। অনেককে পোশাক কারখানায় চাকরি, পার্লার ও খাবার দোকানের ব্যবসা গড়ে দিয়েছেন ডিআইজি হাবিবুর রহমান।

এসব উদ্যোগের নেতৃত্ব দেন মানবিক পুলিশ হিসেবে সুনাম পাওয়া ডিআইজি হাবিবুর রহমান। এখন নতুনভাবে দৌলতদিয়ার যৌনপল্লীর শিশুদের জন্য কাজ শুরু করেছেন তিনি। যার সুফলও মিলছে। বিশেষ করে যৌনপল্লীর শত শত শিশুকে সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে হাবিবুরের নিজ হাতে গড়া “উত্তরণ ফাউন্ডেশন”।

ডিআইজি হাবিবুর রহমানের একক প্রচেষ্টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে টেলিকম ভবনে প্রতিষ্ঠিত হয় পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দায়বদ্ধতা থেকেই তার এ উদ্যোগ। ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ এটি সর্বসাধারণের প্রবেশের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by