বাংলাদেশ

আইএমএফ প্রতিনিধি দল আসছে ২৫ এপ্রিল

  প্রতিনিধি ১৭ এপ্রিল ২০২৩ , ৪:৫৪:২৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠক শেষ না হতেই আইএমএফের নজর বাংলাদেশের দিকে। আগামী ২৫ এপ্রিল আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য তাদের পরামর্শগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতি বিশ্লেষণ করা। অর্থাৎ দ্বিতীয় কিস্তি দেওয়ার আগে প্রতিনিধি দল তাদের দেওয়া বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের রূপরেখা বিশ্লেষণ করতে চায়। প্রতিনিধি দল আগামী ২ মে পযর্ন্ত ঢাকায় অবস্থান করবেন বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
কেন আসছে এই প্রতিনিধি দল? এই প্রশ্নের জবাবে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) গত ৩০ জানুয়ারি ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। আর অনুমোদনের তিন দিন পরই প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার ছাড় করে। দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় করার আগে তারা তাদের পরামর্শগুলো কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে তা জানতে চায়। অর্থাৎ সংস্কার কর্মসূচির অগ্রগতি দেখতে চায়। এরপরই তারা দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় করবে।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এই ঋণ পাওয়ার জন্য সরকারকে মোটা দাগে বেশ কয়েকটি কাজ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে- কর আদায় বাড়ানো, জিডিপির তুলনায় ঋণের পরিমাণ কমানো, মুদ্রানীতি কাঠামোর আধুনিকায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা, ব্যাংক খাতের নজরদারি বৃদ্ধি ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও অবকাঠামো খাতে ব্যয় বাড়ানো।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদের হার (ক্যাপ) তুলে নেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী জুন মাসের মুদ্রানীতিতে তা ঘোষণা করা হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। এর আগে বছরে একবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হতো। কিন্তু এখন থেকে বছরে দুবার মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে।
খেলাপি ঋণের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু কতটুকু কার্যকর হয়েছে তা দেখতে চায় আইএমএফ। কর আদায় বাড়ানোর জন্য আইএমএফের পরামর্শ ছিল, কর ছাড় কমানোর কথাও বলেছেন তারা। একই সঙ্গে কর অব্যাহতির তালিকা ছোট করার শর্ত জুড়ে দিয়েছিল। আগামী বাজেটের আগে আইএমএফের এই প্রতিনিধি দল তা অনেকটা পরখ করতে চায়। যে কারণে প্রতিনিধি দল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করবে বলে আভাস পাওয়া গেছে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ক্ষেত্রে আইএমএফ একটি গাইডলাইন দিয়েছে। সেই গাইডলাইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক কতটা তা কার্যকর করেছে, এ বিষয়টি নজরে আনবে আইএমএফ। ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার কাজ করছেন বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফের আরও যেসব পরামর্শ ছিল এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ভর্তুকি কমানো। আর সেই ভর্তুকি কমাতে গিয়ে সরকার কয়েক দফা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। একই সঙ্গে সারের দামও বৃদ্ধি করেছে। এরপরও আগামী বাজেটে ভর্তুকির পরিমাণ জানতে চাইবে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের এশীয় প্রশান্ত ও মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কৃঞ্চা শ্রীনিবাসন বলেছেন, বাজারভিত্তিক ও মুদ্রাবিনিময় হার এক করার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। তিনি সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বসন্তকালীন বৈঠকের এক ফাঁকে সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি আরও বলেছেন, টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের একটি দর থাকা প্রয়োজন।

 

 

জানা গেছে, আগামী ২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে মোট ৭ কিস্তিতে দেবে ঋণের পুরো অর্থ। সে হিসাবে এখনও বাকি রয়েছে আরও ৬ কিস্তি । ডলার সংকট, জলাবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত মোকাবিলা ও বাজেট সহায়তায় এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by