রাজশাহী

আদমদীঘিতে বেদে সদস্যদের চোখে অনিশ্চয়তার ছায়া ভাগ্য ফেরাতে চান সরকারি বাড়ি

  প্রতিনিধি ১৯ এপ্রিল ২০২২ , ৮:০৬:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ

আদমদীঘি (বগুড়া) :

বগুড়ার সান্তাহারের পৌর শহরের পোঁওতা রেলগেটের পাশে একটি পরিত্যক্ত জমিতে আস্তানা গেড়েছে বেদে সম্প্রদায়ের একটি দল। ৩১ জন সদস্যর দলটিতে থাকে ৮টি ঝুপিড়িতে। দলে ১৯ জন পুরুষ ১১ জন শিশু ও মহিলা। মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার কোমারভোগ ইউনিয়নের ফড়িয়া গ্রাম থেকে এসেছেন তারা। প্রায় এক মাস আগে এখানে এসেছেন তারা। এই সময়ের মধ্যে তেমন আয় হয়নি।

তাই সকল সদস্যদের মাঝে দেখা দিয়েছে অনিশ্চিয়তার ছায়া। বংশ পরস্পরার এই পেশায় আছেন তারা। ২০/২৫ বছর এই এই এলাকায় আছেন তারা। এরা প্রায় সবাই ভোটার। কিন্তু অনেকটা সমাজিক ও নাগরিক অধিকার থেকে এরা বঞ্চিত। এই গোত্রের সদস্যারা সবাই মুসলমান। গত ৪/৫ বছর ধরে তারা অধিকাংশ সময়ে এই এলাকায় থাকে। ঝুঁপড়িতে কোন বৈদ্যুতিক আলোর ও ফ্যানের ব্যাবস্থা নেই। নেই কোন পয়নিস্কাসন ব্যবস্থা। দলে ৩/৪ জন অল্প শিক্ষিত সদস্য আছে।

এই বেদে দলের প্রধান মো. জাকির হোসেন (৫৮)। এই দলে রয়েছে বেশিরভাগ তারই আত্ময়ী-স্বজন। এই পুরো দলে একমাত্র সালমা (১১) শুধু পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। বাকি সাবাই অশিক্ষিত। সরজমিনে বেদে সম্প্রদায়ের এই দলটির কাছে গিয়ে দেখা গেল ৬টি ঝুপড়ি ঘর তোলা হয়েছে। আর দুটি তৈরির করার জন্য দলের পুরুষ সদস্যরা বাঁশ কাটছে। মহিলা সদস্যরা দুপুরের খাবার তৈরি করছে। কিছু সদস্য কাজে গিয়েছে। এই দলের সদস্য সালমা বলেন, আমি ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছি। আবার পড়াশুনা করতে চাই। মানুষের মত মানুষ হতে চাই। এই দলের প্রধান, বেদে সর্দার জাকির হোসেন বলেন, পদ্মার ভাঙনে তাদের ভিটামাটি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তাই বছরের পর বছর তারা যাযাবরের মত এই এলাকায় এসে আশ্রয় নেয়।

টোটকা জাতীয় ওষুধ বিক্রি করে এই সম্প্রদায়ের সদস্যরা। আবার পানিতে বা হারিয়ে যাওয়া বস্ত উদ্ধার করতে কাজ করে তারা। অনান্য সাধারণ কাজও করেন তারা। তবে বর্তমানে আয় কম। তিনি আরো বলেন, সরকার যদি তাদের সরকারি কোন জমি দান করেন তাহলে খুবই উপকার হয়। সেলিম উদ্দীন নামে একজন সদস্য বলেন, স্থায়ীভাবে আমাদের কোথাও থাকা হয় না বলে তেমন লেখাপড়া করা হয়নি আমাদের। জন্মের পর থেকে যাযাবরের মত জীবন আমাদের। বেদে বহরে থাকা সদস্য বেলি বলেন, আমরা যেখানেই যাই না কেন, কোন মেম্বার, চেয়ারম্যান আমাদের খোঁজ নেয় না। আগের মত টোটকা ওষুধও কেউ নিতে চায় না। আমরা খুবই অবহেলিত সম্প্রদায়।

Powered by