ঢাকা

আশুলিয়ায় পুলিশের স্ত্রী পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি

  প্রতিনিধি ১০ মার্চ ২০২৪ , ৮:০১:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

আশুলিয়ায় পুলিশের স্ত্রী পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি

ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন গাজীরচট এলাকায় একজন সুনামধন্য পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে মিথ্যা পরিচয়ে এক নারীর আধিপত্য বিস্তার ও দাপটের প্রভাবে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। একাধিক বিয়ে বাণিজ্য সহ এলাকায় জনপ্রতিনিধি হওয়ার চেষ্টায় আধিপত্য বিস্তার করে সাধারণ মানুষকে অত্যাচারের অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে আশুলিয়া থানায় প্রতিকার চেয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী এ.আর মন্টু । অভিযুক্ত সালমা আক্তার (৪৫) ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানার মধ্যে গাজীরচট এলাকার পিকআপ ড্রাইভার মো: শাহাজান মিয়ার মেয়ে। ভুক্তভোগী এ.আর মন্টু জানান, তার নিজের আয়ের উৎস না থাকলেও, কয়েক ডজন বিবাহের মধ্যে দিয়ে সে কোটিপতি বনে যায়।

আশুলিয়ার গাজিরচট, ডিওএসএস ও ঢাকার শান্তিবাগ এলাকায় বেশ কয়েকটি আলিশান ফ্ল্যাট বাড়ির মালিকসহ বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছেন তিনি। গত দুই যুগ আগে কাঠগড়া এলাকায় মো: হান্নানের সাথে বিবাহ হয় সালমার, সে ঘরে দুইটি সন্তান থাকা অবস্থায় স্বামীর সকল সম্পত্তি হাতিয়ে নিয়ে তাকে তালাক দেয়। এরপর ধামরাই এলাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করে সালমা আক্তার।

কিছুকাল পরে সে ঘরে এক মেয়ে থাকা অবস্থায় তাকে তালাক দিয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মনিরকে বিয়ে করে। এর কিছুকাল পরে কাতার প্রবাসী ওবায়দুর রহমানকে বিয়ে করে সালমা। এছাড়াও ভিডিও কলের মাধ্যমেও তার বিরুদ্ধে একাধিক বিবাহ করে সে। বিগত সকল স্বামী তালাকের সাথে সাথে তাদের অর্থ সম্পদ, জমি- ফ্ল্যাট প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় সালমা এবং তার হাতে আসে বিশাল পরিমাণ সম্পদ ও কালো টাকার পাহাড়। তার কিছুকাল পর এক পুলিশ কর্মকর্তাকে বিয়ের দাবি করে সালমা, মূলত এর পর থেকেই সে ক্ষমতার লোভে বেপরোয়া হয়ে উঠে।

তার রাজনৈতিক কোনও পদ পদবি না থাকলেও, কালো টাকার গরমে সে এখন জনপ্রতিনিধি হওয়ার নেশায় বড় বড় রাজনৈতিক ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের ছবি ও পরিচয় ব্যবহার করে। স্থানীয়রা জানান, সালমা ওই পুলিশ কর্মকর্তার প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক আধিপত্য বিস্তার করে প্রতিবেশীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে এলাকার মানুষদের হয়রানির মাধ্যমে জিম্মি করতে চাইছে । এসব ঘটনায় এলাকার মানুষেরা সরাসরি তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়না। ভুক্তভোগীরা ঐ ভয়ংকর নারীর কবল থেকে দেশ এবং সমাজকে বাঁচাতে প্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সালমা আক্তার তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার সমাজের প্রতি একটা দায়বদ্ধতা আছে। আমার বিরুদ্ধে যাহারা অভিযোগ করেছে তারাই এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করে। মোটরবাইকে বিকট শব্দের সাইলেন্সার লাগিয়ে মানুষকে ভয় দেখায়, শব্দ দূষণে পরিবেশ নষ্ট করে। আমি কাউকে হুমকি বা ভয়ভীতি এবং অযথা হয়রানি করেছি, পুলিশের প্রভাব খাটিয়েছি এ অভিযোগও ভিত্তিহীন। এদিকে স্বামী দাবি করা সেই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ এলাকায় আমার কোন স্ত্রী নেই, ওই নারী আপনাদের মিথ্যা কথা বলেছে।

কেউ যদি কারো নাম ব্যবহার করে অপরাধ করে, তবে সে নিজেই অপরাধী। দয়া করে আমাকে এইসবের ভিতরে টানবেন না। সে অপরাধ করলে আপনারা তার বিরুদ্ধে লেখালেখি করেন। আমার সাথে তার কোনও সম্পর্ক নাই ফলে তার দায়িত্ব আমি নিব না। অপরাধ যে করবে তার দায়ভার সে নিবে, আইন আইনের গতিতে চলবে।

এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জোহাব আলী বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by