দেশজুড়ে

করোনায় করনীয় বাংলাদেশ

  প্রতিনিধি ১৮ মে ২০২০ , ৩:৪৫:১১ প্রিন্ট সংস্করণ

মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া।। ভাবনা গুলোকে পরিস্হিতির সূচনা লগ্ন থেকে লালন করছি। জাতী হিসাবে চিন্তায় বৈষম্য আমাদের মানসিকতার পরিবর্তনে কোন গতিপথ নির্ধারণে অক্ষমতার উপস্হিতি দন্ডায়মান। বিশ্ব ব্যবস্হাকে যেখানে তছনছ করে দিয়েছে তার পরও আমাদের ঘুম ভাঙতে যেন আবার ঘুমিয়ে পড়ি। মারাত্নক স্পর্শকাতর সংক্রামন ব্যাধী করোনা (কভিড১৯)এক জন সুস্থ মানুষকে ১২-১৪ দিনের ব্যবধানে যে ভাবে নাস্তানাবুদ করে দিতে পারে তার ভয়াবহতা আক্রান্ত হবার পূর্ব পয়ন্ত এখনো আমাদের অনুভূতির বাইরে।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবেলায় যে বিষয়টি আমরা অবহেলা করে আসছি সেটা হল “মানুষ ও করোনা” আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা। ধর্ম, বর্ণ ও জাতী নির্বিশেষে সকলকে এক কাতারে এসে করোনাকে প্রতিপক্ষের রূপ দেয়া উচিত ছিল। অনেকেই হইত নিজেদের নিরাপদ মনে করে নিশ্চিন্ত ছিল। বাস্তবে ট্রান্সমিশন শুরু হলে কেউ যে রক্ষা পাবেনা তা হয়ত এখনি অনুধাবন করা উচিত। সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি।

মতভেদ-উঁচুনিচু ভুলে সরকারের গৃহিত পদক্ষেপে সবাইকে জনগনের সার্বিক ঐক্যের মাধ্যমে, মানবতার এক কাতারে দাড়িয়ে মহামারি মোকাবেলা যে করতে হবে তা যেন ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সময় বলে দিচ্ছে। এই মূহুর্তে মহামারি বিপরীতে গুরুত্বপূর্ণ হল জীবন রক্ষায় সংক্রমণ প্রতিরোধে সনাক্ত করন এবং কার্যকর চিকিৎসা নিশ্চত করন। প্রয়োজনীয় সর্তকতার মাধ্যমে ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

ডাক্তার নার্সদের উৎসাহিত করতে মোটিভেশনাল সামাজিক কার্যক্রম নিতে হবে। হাত ধুয়ার পাশাপশি সবার জন্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচলিত বিভিন্ন ভেষজ পদ্ধতি অনুসরণে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নির্দেশনা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার করতে বিশেষ উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন ভোধ করছি। নিয়মিত কিছু স্বাস্থ্য নির্দেশনা অনুসরণ রুটিনের মধ্যেই নিয়ে আসতে হবে। নিদিষ্ট এরিয়া লকডাউন অবস্থায় সবাই ঘরে থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, আক্রান্ত এলাকা ঘুরাঘুরি মানে সংক্রমণ নিজেদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া।

মনে রাখতে হবে আপনার এলকার সুরক্ষার জন্য এলাকায় কেউ প্রবেশ করবেনা ঠিক আপনার সুরক্ষার জন্য আপনি ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করতে শতভাগ স্ব ক্ষমতা অর্জন অবশ্যাম্ভী। আমাদের বাতাসে যেভাবে ধূলিকণা ভেসে বেড়ায়, ধূলোর সাথে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা কে উড়িয়ে দেয়া যায়না। বাতাসের সাথে ঘরে ঘরে পৌছে যাবে এই ভাইরাস তখন পরিস্হিতি হবে বিধ্বংসী। আমাদের আক্রান্ত এবং মৃত্যুর পরিসংখ্যান সিঙ্গাপুরের গবেষণার ফলাফল কোনভাবেই প্রভাবিত করেনা। এই মহামারিতে শুধু মাত্র সুস্হ ভাবে বেচে থাকা মূখ্য।

আমাদেরকে স্বাস্থ্য এবং খাবারের বিষয়টি ব্যতী রেখে বাকী সব কর্মকান্ডে প্রয়োজনকে প্রধান্য দেয়া উচিত। সময়টা উপভোগের নয় বিষয়টি আপনার একান্ত ব্যক্তিগত ও নয়। সুতরাং সামাজিক সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ যা সৃষ্টিতে আমরা অনেকাংশে অকার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ। সরকারের গৃহিত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে জনগনের জন্য সর্বদা সার্বিক ব্যবস্থা যারা গ্রহণ করছেন তারা আমাদের একজন।

আজকে যারা শপিংমলে ভিড় করছেন তাদের ব্যস্ততাকে দ্বিগুণ করে দিচ্ছেন আপনাদের মানবিক গুনাবলি কখনো জাগ্রত হয় নিজেকে ক্ষমা করবেন কিনা জানিনা। ভয় হয় এ জাতীকে সচেতন করে তুলতে তুলতে এ জাতীর বিনাশ না হয়ে যায়। মহান আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন। জীবনের পাশাপাশি জীবিকার বিষয়টি গুরত্বপূর্ণ। আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে খেটে খাওয়া মানুষের সংখ্যা বেশি। সরকার চাইলে বিশেষ ব্যবস্হায় আরো কিছু মানুষ সহয়তার আওতায় নিয়ে নিলে জীবিকার প্রশ্নে খানিকটা চাপ কমত।

প্রত্যেক নাগরিকের জাতীয় পরিচয় পত্র (NID) মাধ্যমে এ ব্যবস্হা বাস্তবায়ন সম্ভব। যেহেতু পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে। মনে রাখতে হবে খাদ্যের অভাবে দূর্ভিক্ষ হয় না পরিকল্পনা সুষ্টবন্ঠনই অন্তরায়। সুতরাং খাদ্য সহয়তা না দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্রের বিপরীতে মোবাইল ব্যাংকিং মাধ্যমে প্রত্যেক নাগরিকদের জন্য ডিজিটাল আবেদন গ্রহনের মাধ্যমে মাসে নিদিষ্ট অংক নগদ সহয়তা প্রদান করা যেতে পারে। এ ব্যবস্থা সবার জন্য উম্মুক্ত থাকবে। সেক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োজন অনুযায়ী মাসে একবার সবাই আবেদন করতে পারবে প্রাপ্তির সাপেক্ষে এক মাসের জন্য আই ডি ব্লক থাকবে।

ও এম এস ব্যবস্হার সাথে সাথে খোলাবাজারে পন্য বিক্রয় ব্যবস্হা প্রসারিত করা হলে বাজারের অস্থির পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এই ব্যবস্হায় ত্রান বিতরণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাচারী পরিস্হিতি এড়িয়ে চলা যাবে পাশাপাশি জীবিকার প্রশ্নে ত্রান গ্রহনে অপ্রস্তুত ব্যাক্তিরা কিছুটা স্বস্তি খুজে পাবে।ব্যক্তি পর্যায়ে ত্রান প্রদানকারী এবং প্রতিষ্ঠানকে সরকারি ত্রান তহবিলে উৎসাহিত করা যেতে পারে।সম্পুর্ন ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করে নগদ সহয়তা প্রদান করা হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।

শ্লোগান হবে একটা “আমরা মানুষ আমাদের শত্রু মহামারী করোনা” এই যুদ্ধ মহাপ্রলয়ংকারী, অফুরন্ত রসদের অধিকারী প্রতিপক্ষ করোনা। নেই কোন যুদ্ধ বিরতী কিংবা আপোষের সুযোগ। প্রতিকার একটাই এক শ্লোগানের নিচে বংলাদেশ।জাতির সব মেধা এক করে এক ও অভিন্ন লক্ষ্যে ঐক্যমত প্রয়োজন। সময় অনেক গড়িয়েছে। আর এক মূহুত্ব নষ্ট করা যাবেনা। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে এই মহামারীর মহা আয়োজন।

লেখক :প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট, মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া

আরও খবর

Sponsered content

Powered by