আন্তর্জাতিক

পিটিআইয়ের ভোট বর্জন, প্রতিদ্বন্দ্বীহীন শেহবাজ

  প্রতিনিধি ১১ এপ্রিল ২০২২ , ৬:১৫:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

পাকিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ থেকে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) আইনপ্রণেতারা গণপদত্যাগ করেছেন। এর পরপরই দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোটাভুটি শুরু হওয়ার আগে ওয়াক আউট করে সংসদ থেকে ভবন থেকে বেরিয়ে গেছেন তারা।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদের প্রতিদ্বন্দ্বী পিটিআইয়ের সমর্থিত শাহ মাহমুদ কুরেশি জাতীয় পরিষদ থেকে পিটিআইয়ের আইনপ্রণেতাদের গণপদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর তারা সংসদ বয়কট করেন। যে কারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সভাপতি শেহবাজ শরিফ।

অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে দেশটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খানের সরকারের মেয়াদের অবসানের দু’দিন পর সংসদে এই ঘটনা ঘটেছে। সংসদের অধিবেশনে সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও অংশ নিয়েছেন।

এর আগে, সোমবার দুপুরের পর দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরু হয়। তেলাওয়াতের পর ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি গত ৩ এপ্রিল সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন।

তিনি বলেন, ‘আদালত এই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছে… এবং আমরা সবাই আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বাধ্য। কিন্তু আমি আপনাদেরকে আমার আদেশের পেছনের কারণ জানাতে চাই।’ সুরি বলেন, একজন দায়িত্বশীল পাকিস্তানি এবং এনএর ডেপুটি স্পিকার হিসাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।

এরপর তিনি ইমরান খান নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনে বিদেশি ষড়যন্ত্রের প্রমাণ আছে এমন একটি নথির কথা বলেন। আর এই নথি মন্ত্রিসভা, জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক এবং সংসদীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকে আলোচনা করা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

পাক সংসদের এই ডেপুটি স্পিকার বলেন, ‘এবং এটি প্রমাণিত হয়েছে যে অনাস্থা প্রস্তাব একটি বিদেশি ষড়যন্ত্র।’

এর আগে, গত শনিবার (১১ এপ্রিল) দিনভর নানা নাটকীয়তা এবং মধ্যরা‌তে সংস‌দের স্পিকার ও ডেপু‌টি স্পিকা‌রের পদত্যা‌গের পর অনাস্থা ভো‌টে হে‌রে পা‌কিস্তা‌নের প্রধানমন্ত্রীর পদ হারা‌ন ইমরান খান। দেশটির ৩৪২ সদস্যের সংসদের ১৭৪ জনই ইমরান খানের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।

অনাস্থা ভোটে হেরে পা‌কিস্তানের সাত দশকের কোনো প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে না পারার ইতিহাসের অংশ হয়েছেন সাবেক এ ক্রিকেট তারকা। পাকিস্তানের আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে গত ৮ মার্চ অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। তবে এ প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল তা খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি।

সেদিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এ পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। টানা পাঁচ দিন শুনানি শেষে সুপ্রিম কোর্ট ৭ এপ্রিল অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ এবং জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করেন এবং অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোট আয়োজনের নির্দেশ দেন।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মেনে দেশটির সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সারের সভাপতিত্বে গতকাল শনিবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় অধিবেশন শুরু হয়। দিনভর চলে নাটকীয়তা। কয়েক দফায় অধিবেশন স্থগিত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিদে‌শি ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারবেন না জা‌নিয়ে রাতে পদত্যাগ করেন জাতীয় প‌রিষদের স্পিকার আসাদ কায়সার। পরে স্পিকারের আসনে বসেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সদস্য আয়াজ সাদিক। তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভোটে হেরে যান ইমরান খান।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by