ময়মনসিংহ

বকশীগঞ্জে করোনা আক্রান্ত লাশ দাফন করলেন মেয়র

  প্রতিনিধি ২৩ জুন ২০২০ , ৬:৩৭:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

বকশীগঞ্জে করোনা আক্রান্ত লাশ দাফন করলেন মেয়র

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি : মৃত ব্যক্তির লাশ নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে গ্রামের মানুষ। এলাকার সবাই ভয়ে পালালেন। কিন্তু পালায়নি পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর ও তার গড়া পৌরসভা সেচ্ছাসেবক কমিটি। মনের জোড় আর সাহস নিয়ে এগিয়ে গেছেন মানবিক টানে।

করোনা আক্রান্তের লাশ দাফন করে এলাকায় হৃদয়স্পর্শী ঘটনার জন্ম দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরের নেতৃত্বে পৌর কাউন্সিলর হারুন অর রশিদ ও সেচ্ছাসেবক কমিটির সদস্যদের সাথে নিয়ে  মৃত ব্যক্তিকে দাফনের সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।

এসময় সেচ্ছাসেবক কমিটির সদস্যদের মধ্যে দাফন কাজে অংশগ্রহন করেন মো. শাহিনুজ্জামান শাহীন, গোলাম রাব্বানী নাদিম, মতিন রহমান, মো. মন্জু খান, খোকন মিয়া, রাসেল মাহমুদ, মো. সুমন মিয়া, সুজন মিয়া, আরাফাত মিয়া প্রমুখ।

বকশীগঞ্জ পৌরসভার টিকরকান্দী পশ্চিমপাড়া গ্রামের অটোরিক্সা চালক মমিন মিয়া(৪০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জুন মারা যায়। মৃত্যু হওয়ার একদিন আগে তার করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে এই খবর শুনে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, মৃত ব্যক্তির লাশ দাফনে গ্রামের মানুষ কেউ এগিয়ে আসেনি এমন পরিস্থিতির খবর পেয়ে মেয়র নিজেই সেচ্ছাসেবকদের সাথে মঙ্গলবার দুপুরে লাশ দাফনের সার্বিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেন।

এই দৃশ্য যারাই দেখেছে তারাই প্রশংসা করেছে মেয়র ও সেচ্ছাসেবকদের। বলেছে এরাই পারবে। এরাই মানুষের কল্যাণে এগিয়ে এসেছে। মানুষের মন জয় করেছে। সব মহলের কাছে হয়েছে সমাদৃত।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, গত মাসের ৩০ তারিখে পারিবারিক কলহের জের ধরে বড় ভাই কালাম ও ভাতিজা বাবুর সাথে সংর্ঘষ হয়। সংর্ঘষের এক পর্যায়ে বাবুর ইটের আঘাতে গুরুত্বর আহত হয় মমিন। স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করায়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও ৩দিন চিকিৎসার পর অবস্থার আরও অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থাতেই করোনায় আক্রান্ত হয় মমিন। পরে ২১জুন (রবিবার) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মোমিন। ময়না তদন্ত শেষে মৃতদেহ নিজ গ্রামের বাড়ী টিকরকান্দি নিয়ে আসা হয়।

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগর বলেন, এ রকম কঠিন পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর পক্ষে নিরলস কাজ করে যাব। স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় লাশ দাফনের সার্বিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পেরেছি। আমরা সব সময়ই মানুষর কল্যানে কাজ করতে চাই। আমাদের এই সেবা অব্যাহত থাকবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by