আইন-আদালত

বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ : সাফাতসহ ৫ আসামির রায় মঙ্গলবার

  প্রতিনিধি ১১ অক্টোবর ২০২১ , ৭:০৭:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ

রাজধানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণ মামলার প্রধান তিন আসামি। পুরোনো ছবি

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের আলোচিত মামলায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামির রায়ের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোসা. কামরুন্নাহার এই রায় ঘোষণা করবেন।

গত ৩ অক্টোবর মামলাটি যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায় ঘোষণার এ দিন ঠিক করেন একই আদালত। মামলার অপর আসামিরা হলেন, সাফাতের তার বন্ধু সাদমান সাকিব ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম এবং সাফাতের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন। ৩ অক্টোবর আসামিরা সবাই জামিনে থেকে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারক আসামিদের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণ করেন।

মামলাটিতে আসামি সাফাত, তার ড্রাইভার ও দেহরক্ষীর পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি কাজী নজিব উল্লাহ হিরু, সিনিয়র আইনজীবী মাহবুবুর রহমান, দুদক প্রসিকিউপর মোশারফ হোসেন কাজল যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামি সাদমানের পক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাবেক প্রসিকিউটর এহসানুল হক সমাজী এবং আসামি নাইম আশরাফের পক্ষে আইনজীবী খায়রুল ইসলাম লিটন যুক্তি উপস্থাপন করেন।

 

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা আহমেদ অরেঞ্জ এবং বাদী পক্ষে ভিকটিমের ব্যাক্তিগত আইনজীবী ফারুক আহমেদ যুক্তি উপস্থাপন করেন। যুক্তি উপস্থাপনে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছেন মর্মে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন শাস্তি দাবি করেন। অন্যদিকে আসামি পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ মামলার অভিযোগ আসামিদের বিরুদ্ধে প্রমাণ করতে পারেন নাই মর্মে খালাস প্রার্থনা করেন।

এর আগে মামলাটির ৪৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ গ্রহণ করে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্য গ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ২৯ আগস্ট আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর গত ৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয় যুক্তি উপস্থপন।

২০১৭ সালের ২৮ মার্চ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে অস্ত্রের মুখে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ৬ মে বনানী থানায় পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

ওই বছর ৭ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলায় বলা হয়, আসামিদের মধ্যে সাফাত ও নাঈম দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তারা ওই নির্যাতিত ছাত্রীদের বন্ধু। গত ২৮ মার্চ ঘটনার দিন আসামি সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানের যান ওই দুই ছাত্রী। এরপর ওইদিন তাদের রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা আটকে রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা।

আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ একাধিকবার তাদের ধর্ষণ করেন। ধর্ষণ করার সময় সাফাত গাড়িচালক বিল্লালকে দিয়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করেন। পরে বাসায় দেহরক্ষী পাঠিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখান। ধর্ষিতরা ভয়ে এবং লোকলজ্জার কারণে এবং মানসিক অসুস্থতা কাটিয়ে উঠে পরে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আলোচনা করে তারা মামলার সিদ্ধান্ত নেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by