প্রতিনিধি ২৪ জুন ২০২০ , ৮:২০:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ
মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর মান্দা উপজেলার মৈনম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি শাহিনুর ইসলাম সনির অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্থানীয়রা। তার বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ এনে মৈনম সচেতন এলাকাবাসির ব্যানারে বুধবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধন চলাকালে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন আবুল কালাম আজাদ, রুহুল আমিন, ফেরদৌস হোসেন, প্রাণনাথ সরকার, রফিকুল ইসলাম, আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা দাবি করেন, মৈনম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত করে আসছিল অফিস সহকারি শাহিনুর ইসলাম সনি। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীর শরীরের হাত দিয়ে শ্লীলতাহানী ঘটানো হয়। এতে ওই শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা বন্ধ করে দেয়।
বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক একেএম আসাদুজ্জামান ও পরিচালনা কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম মাষ্টারকে জানিয়ে অফিস সহকারি সনির বিচার দাবি করেন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা। কিন্তু সনির বাবা জসিম উদ্দিন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়ায় এ বিষয়ে কোনো প্রতিকার পাননি নির্যাতিতা শিক্ষার্থীর পরিবার।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, এ অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ে দেয়া হয়। এরপরও থেমে থাকেনি অফিস সহকারি সনি। তিনি খোঁজ নিয়ে ওই শিক্ষার্থীর স্বামী সঙ্গে গোপনে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে স্বামী থেকে আলাদা করতে চক্রান্ত শুরু করে সনি। তাকে চরিত্রহীন আখ্যায়িত করে স্বামীর মন বিষিয়ে তোলা হয়। এতে ওই শিক্ষার্থীর ওপর শুরু হয় শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন।
নির্যাতিতা শিক্ষার্থীর চাচা আশরাফুল ইসলাম জানান, ‘এসব বিষয় নিয়ে গত সোমবার আমাদের বাড়িতে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে মৈনম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন মন্ডল, প্রাণনাথ সরকার, ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান মোল্লাসহ গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে অফিস সহকারি সনি ও জামাইকে উপস্থিত করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বৈঠকে সনি তার অপকর্মের কথা স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এবিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ইয়াছিন আলী রাজা বিচারের আশ্বাস দিলেও পরে অপারগতা প্রকাশ করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অফিস সহকারির বাবা জসিম উদ্দিন ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ায় তার দাপটে এ বিষয়ে কেউ কথা বলতে চাইছে না। ঘটনায় আমরা আইনে আশ্রয় নেব।’
প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক একেএম আসাদুজ্জামানের মোবাইলফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনা প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান ইয়াছিন আলী রাজা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সমাধানে বসার আগেই উভয়পক্ষই যে যার পথে হাঁটতে শুরু করে দেন। এতে করে আমি আর উদ্যোগ গ্রহণ করিনি।’
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও অফিস সহকারি শাহিনুর ইসলাম সনির বাবা জসিম উদ্দিন বলেন,‘প্রতিষ্ঠানের অফিসিয়াল কাজ করার জন্য ছেলে সনি সোমবার সকালে বিদ্যালয়ে গিয়েছিল। ওইদিন তিনমাথার মোড় থেকে মেয়ের চাচা আশরাফুল ও মঞ্জু তাকে মোটরসাইকেলে করে উঠিয়ে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে মেয়ে ঘটিত অভিযোগ এনে ছেলে সনিকে অন্যায়ভাবে মারপিট করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি মান্দা থানায় অভিযোগ দাখিল করেছি।’