আইন-আদালত

মিরসরাইয়ের কি‌শোরী‌কে অপহরণ ও ধর্ষ‌ণের দা‌য়ে ফেনীর রনি ঢাকায় র‌্যা‌বের হা‌তে গ্রেফতার

  প্রতিনিধি ১৬ আগস্ট ২০২৩ , ৫:৪৫:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ

মিরসরাইয়ের কি‌শোরী‌কে অপহরণ ও ধর্ষ‌ণের দা‌য়ে ফেনীর রনি ঢাকায় র‌্যা‌বের হা‌তে গ্রেফতার

মিরসরাইয়ের পোল‌মোগরা এলাকার এক কি‌শোরী‌কে অপহরণ পরবর্তী গণধর্ষণ ভি‌ডিও ধারণ ক‌রে রাখার অপরা‌ধে নুরুল আলম রনি (২৮) কে গ্রেফতার ক‌রে‌ছে র‌্যার্ব ৭ চট্টগ্রাম।

মঙ্গলবার (১৫ আগষ্ট ) রা‌তে মহানগরীর দক্ষিণখান থানাধীন আজমপুর গুনবর মুন্সী স্বরনী এলাকা থে‌কে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি যৌথ আভিযানিক দল তা‌কে আটক ক‌রে।


আটককৃত নুরুল আলম র‌নি (২৮) ফেনী জেলার পরশুরাম থানার দ‌ক্ষিণ গুথুমা এলাকার শাহাব উদ্দিন মিয়ার ছে‌লে।

মামলার বিবরণ ও ভুক্তভোগীর দেয়া ত‌থ্যে যানা যায়, ভিকটিম চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই থানাধীন পোলগোগরা গ্রামের বাসিন্দা। ভিকটিম এর সাথে ভুল নাম্বারের সূত্র ধরে ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া এলাকার বাসিন্দা সাগর নামক এক যুবকের সাথে মোবাইলে কথাবার্তা হত। কথাবার্তার এক পর্যায়ে সাগর ভিকটিমকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৮ জুলাই সাগর ভিকটিমের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ভিকটিমের বাড়ির সামনে আছে এবং তাকে দেখা করতে বলে। ভিকটিম সরল বিশ্বাসে বাড়ি থেকে বের হলে সাগর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার অপরাপর বন্ধুদের সহযোগিতায় ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক একটি সিএনজি যোগে ফেনী জেলার পরশুরাম বাজার এলাকার অজ্ঞাত ভবনের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সাগর ও তার অপরাপর বন্ধু মিলে রাত আনুমানিক সা‌ড়ে ৯টায় ভিকটিমকে জোরপূর্বক ইয়াবা ট্যাবলেট ও মদ খেতে বলে। ভিকটিম ইয়াবা ট্যাবলেট ও মদ খেতে অস্বীকার করলে সাগর হত্যার হুমকি দিলে ভিকটিম খেতে বাধ্য হয়। ইয়াবা ও মদ খাওয়ানোর পর ভিকটিম অচেতন হয়ে পড়লে সাগর ও তার ০৪ জন বন্ধু মিলে সারারাত পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখে। পরদিন সকালে ভিকটিমের জ্ঞান ফিরলে রনি তাকে মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও দেখায়। এছাড়াও ভিকটিমকে জানায় সে চিৎকার করলে মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিও জনসম্মুখে ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে দিবে। রনি ও তার বন্ধুদের হুমকির ফলে ভিকটিম ভয়ে ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে নিজ বাড়ি মিরসরাইয়ের পোল‌মোগরায় চলে যায়। বাড়ি যাওয়ার পর ভিকটিম অসুস্থ হয়ে ৬/৭ দিন শয্যাশায়ী ছিলেন। পরে ভিকটিম সুস্থ হয়ে পরিবারের সবার সাথে পরামর্শ করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। উক্ত ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।

পরবর্তীতে গত ৩০ জুলাই ভিকটিম ফেনী জেলার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে আসামী ১। নুর আলম রনি (২৮), ২। সাগর (২৩), ৩। রিপন(২৫), ৪। আরিফ(২৪) এবং ৫। সাকিব মুন্সী (২৫) দের বিরুদ্ধে উল্লেখিত গণধর্ষণের ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করে, যার পিটিশন নম্বর-২০০/২০২৩। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালত উল্লেখিত অপরাধ আমলে নিয়ে অফিসার ইনচার্জ, পরশুরাম থানাকে তদন্ত সাপেক্ষে মামলা রেকর্ড করার নির্দেশ প্রদান করেন। উক্ত আদেশের মূলে গত ১০ আগষ্ট ফেনী জেলার পরশুরাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০ (সংশোধিত ২০২০) তৎসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এ একটি মামলা রেকর্ড হয়, যার নং- ৭/৫৭, তারিখ-১০/০৮/২৩ খ্রিঃ। ধারা- ৯(৩), নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন,২০০০ (সংশোধিত ২০২০) এবং তৎসহ ২৯/৩৫ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮।

উক্ত জঘন্য গণধর্ষণের ঘটনায় মামলা রুজু হওয়ার পর থেকে মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরদারীর এক পর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, বর্ণিত গণধর্ষণ মামলার ০১ নং এজাহারনামীয় আসামী মোঃ নুর আলম @ রনি (২৮) আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে ছদ্মনাম ধারণ করে ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণখান থানাধীন আজমপুর গুনবর মুন্সী স্বরনী এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এবং র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি যৌথ আভিযানিক দল ১৫ আগস্ট রা‌তে বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ নুর আলম @রনি (২৮),‌কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by