চট্টগ্রাম

দেবীদ্বারে সাহরি ও ইফতারের সময় লোডশেডিং

  প্রতিনিধি ৪ এপ্রিল ২০২৪ , ৭:২৮:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

দেবীদ্বারে সাহরি ও ইফতারের সময় লোডশেডিং

এপ্রিলের শুরুতে তীব্র গরম ও রমজানের শেষ মুহূর্তে সাহরি আর ইফতারের সময় নতুন ভোগান্তির নাম বিদ্যুৎ লোডশেডিং এমন আলোচনা ও সমালোচনায় ভারী হয়ে উঠছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এদিকে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। দুর্ভোগে হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রোগীরা।

এ ছাড়াও ব্যাহত হচ্ছে শিল্প কারখানায় উৎপাদন। উপজেলার সদর ও গ্রাম এলাকার গ্রাহকরা জানান ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হচ্ছে গ্রাহকরা। একাধিক গ্রাহকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়,বিদ্যুৎ আসলে এক ঘণ্টা আর গেলে কয়েক ঘণ্টা পরে আসে এভাবেই চলে বিদ্যুৎ আসা যাওয়ার খেলা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিরত রোগীদেরকে হাত পাখার বাতাস করতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে রোগীর পাশে থাকা স্বজনরা। ভিংলাবাড়ি গ্রামের মলেকা বেগম জানান, তার ছেলে রাকিব দেড় মাস বয়সে নিউমোনিয়া রোগে ভুগছে। তাই তার শিশু ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ একবার আসলে দশ মিনিট পর চলে গেলে দুই থেকে তিন ঘণ্টার পর আসে এতে শিশু রোগীকে নেবুলাইজার দিতে সমস্যা ভুগছেন সে।

উপজেলা খাইয়ের গ্রামের মিম আক্তার জানান- তার ১৪ মাস বয়সের ছেলে মিনহাজ কে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি, শিশু মিনহাজ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বিদুৎ লোডশেডিংয়ের কারণে তাকে নেবুলাইজার দিতে সমস্যা পোহাতে হয়। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড কলেজের মানবিক বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সামিয়া আক্তার জানান আগামী ৩০ জুন পরীক্ষা শুরু, একদিকে গরম অপর দিকে বিদ্যুৎ লোডশেডিং সমস্যায় লেখা পড়ায় চরম বিঘ্ন ঘটছে।

দেবীদ্বার প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ভিপি ময়নাল হোসেন জানান, পুরো উপজেলায় ৩৮ টি প্রাইভেট হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে, অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে হাসপাতালগুলোতে রোগীদের এক্সরে, বিভিন্ন পরীক্ষা- নিরীক্ষা ও অপারেশনে সমস্যা সৃষ্টি হয়, যা জেনারেটর চালিয়েও সুবিধা করা যায় না, আর কম পাওয়ার জেনারেটর ব্যবহার করায় তৈরি হয় শব্দ দূষণ।

যার কারণ বিদ্যুৎ না থাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর জেনারেটর ব্যবহার শব্দে, শব্দ দূষণ হচ্ছে পরিবেশ। এদিকে অতিমাত্রায় বিদ্যুৎ লোডশেডিংয়ের কারণে দেবীদ্বার পল্লী বিদুৎ সমিতি -১ জোনাল অফিসের ডিজিএম কে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় তুলছে ভুক্তভোগীরা।

দেবীদ্বার পল্লী বিদুৎ সমিতি -১ জোনাল অফিসের ডিজিএম রেজাউল করিম খান কে উদ্দেশ্য করে দেবীদ্বার পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম শামীম তার ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করে বলেন- ” দেবিদ্বার পল্লী বিদুৎ সমিতি- ১ জোনাল অফিসের সম্মানিত ডিজিএম রেজাউল করিম খান মহোদয়ের এর কাছে আকুল আবেদন, দয়া করে পৌর এলাকায় সেহরি, ইফতার ও তারাবীহ নামাজের সময় নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করুন। মেয়র সাইফুল ইসলামের এমন পোস্ট কে কেন্দ্র করে,মাহিনুল ইসলাম রাসেল আইডিতে কমেন্ট করে বলা হয়েছে ” দেবিদ্বারে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং এর যাত্রা শুরু এ যেন দেখার কেউ নেই।

সেহরি আর ইফতারের সময় নতুন ভোগান্তির নাম বিদ্যুৎ লোডশেডিং। ” মাসুদ রানা আইডিতে কমেন্ট করে বলা হয় ” ভিআইপি লাইন গুলো অফ করতে হবে। ভিআইপির তারা মানুষ আর দেবিদ্বারের গ্রাম অঞ্চল গুলো কি মানুষ মনে হয় না? আর পৌর এলাকার সবাই দেবীদ্বারের বাসিন্দা। বাকিরা কই থাকে? দেবীদ্বারের সবার জন্যই বিদ্যুতের সার্ভিস ভালো রাখার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবেন, আপনি দেবীদ্বারের নগর পিতা হিসাবে আপনার কাছে আমাদের এই প্রত্যাশা।

দেবীদ্বার উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউছার হায়দার তার ফেইসবুক আইডিতে পোস্ট করে বলেন,” পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম সাহেব আপনার সমস্যা কি? বিদ্যুতের সব সমস্যা কি দেবিদ্বারেই? ” দৈনিক,আমাদের নতুন সময় কুমিল্লা জেলা উত্তর প্রতিনিধি মো.সাইদুল ইসলাম তার আইডিতে পোস্ট করে বলেন, দরকার ২২ মেগাওয়াট, বিপরীতে পাচ্ছি ৬ ! নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পেতে হলে সরবরাহ বাড়ানো এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার বিকল্প নাই। সোহাগ ভূইয়া দেবিদ্বার আইডিতে বলা হয়েছে- ” এক দিকে তীব্র গরম আর অন্যদিকে ঘনঘন লোডশেডিং- সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে দেবিদ্বার উপজেলা বাসীর জনজীবন। ”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৃহস্পতিবার( ৪ এপ্রিল) বিকালে দেবীদ্বার জোনাল অফিস পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কুমিল্লা- ১ এর এক জন কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান- দেবীদ্বার পৌরসভাসহ ৫ টি ইউনিয়নের ৮৫ হাজার গ্রাহকদের চাহিদা হলো ২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সেই জায়গায় ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিয়ে গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করা কষ্টকর,তবে অতি শ্রীঘ গ্রাহকদের বিদ্যুৎ চাহিদা স্বাভাবিক হবে বলে তিনি জানান।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by