দেশজুড়ে

শাহজাদপুরে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে লাশ দাফনে গ্রামবাসির বাধা

  প্রতিনিধি ১২ এপ্রিল ২০২০ , ৭:৫৬:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জে মারা যাওয়া রিক্সা চালক আব্দুর রহিমের (৫০) লাশ শনিবার রাত ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের বৃ-আঙ্গারু গ্রামের বাড়িতে এনে পরিবারের লোকজন গোপনে দাফনের চেষ্টা করে। গ্রামবাসি বিষয়টি টের পেয়ে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সন্দেহে লাশ গ্রামে ঢুকতে ও দাফনে বাঁধা দেয়। নিরুপায় পরিবারের লোকজন বাঁধার মুখে লাশ নিয়ে পোতাজিয়ায় অবস্থিত শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে এ রাতেই উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের একটি দল হাসপাতালে পৌছে লাশ ও লাশের সাথে থাকা সবাইকে তাদের হেফাজতে নেয়। এরপর গাড়ির চালক সহ লাশের সাথে থাকা ৫ জনকে নিয়ে বৃ-আঙ্গারু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। নিহত রিক্সা চালক আব্দুর রহিম ওই গ্রামের রওশন আলীর ছেলে। সে দীর্ঘদিন ধরে স্বপরিবারে নারায়ণগঞ্জ শহরে থেকে রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোঃ শামসুজ্জোহা বলেন,নারায়ণগঞ্জে মারা যাওয়া আব্দুর রহিমের লাশ রবিবার দুপুরে বিশেষ ব্যবস্থায় তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়েছে। এর আগে  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও একটি মেডিকেল টিম লাশ ও লাশের সাথে থাকা ৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করে সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়। সেখান থেকে এটি পরিক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা পরীক্ষাগাওে পাঠানো হয়। 
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম খান বলেন, লাশ ও লাশের  সাথে থাকা স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এ পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেলে জানা যাবে সে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে কি না। যেহেতু লাশটি নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছে তাই সব ধরণের শতর্কমূলক ব্যবস্থা নিয়ে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন,স্বজনরা ওই ব্যক্তির যে ডেথ সার্টিফিকেট দেখিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট লেখা আছে,নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে আনার আগেই ‘ব্রডডেথ’ বা বাড়িতে মারা মারা গেছে। তিনি জানান, শনিবার দুপুরে আব্দুর রহিমকে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া আগেই মারা যায়। নারায়ণগঞ্জ পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এবং বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে কী ভাবে তারা লাশ নিয়ে গ্রামে এলো তা ভেবে আমি খুব হতবাক হয়েছি। তিনি আরো জানান,শাহজাদপুর উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির ৬ সদস্যের একটি সেচ্ছাসেবী দল সকল নিয়ম মেনে বিশেষ প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠ্যুভাবে লাশের গোসল ও দাফন সম্পন্ন করেছে। এ ছাড়া শিয়াল বা কুকুর লাশ যাতে ছুতে না পারে নিহতর কবরটি বাঁশের চেগার দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম থানার ওসি সৈয়দ শহিদ আলম বলেন,আমাদের কাছে শুধু মাস্ক ও হ্যান্ডগেøাপ্স আছে। লাশের গাড়ি চেক করার মতো প্রয়োজনীয় পিপিই বা নিরাপত্তা পোশাক নেই। ফলে অন্য গাড়ি কঠোরভাবে চেক করা হলেও রোগী বা লাশ বহণকারী অ্যাম্বুলেন্স সে ভাবে চেক করা সম্ভব হয় না।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন,পরিবারের পক্ষ থেকে লাশটি গ্রামে আনার বিষয়ে পুলিশকে জানানো হয়নি। এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে বিষয়টি জানতে পেরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। 
এ দিকে নিহত রহিমের স্বজনদের দাবী করোনা নয় সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by