ময়মনসিংহ

শেরপুরে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পী ও আয়োজকরা

  প্রতিনিধি ১৩ অক্টোবর ২০২০ , ৬:৫৩:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

জি এম বাবুল, শেরপুর : হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা পূজা উপলক্ষে শেরপুরের মন্দিরগুলোতে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। তাই এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার প্রতিমা শিল্পী ও পূজা উদযাপন কমিটির আয়োজকেরা। এর মধ্যে খড়, মাটি আর দো-আঁশ মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষের পথে । তবে এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে জাঁকজমক পূর্ণভাবে না হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূর্গাপূজা আয়োজন করবেন বলে জানিয়েছেন আয়োজকেরা। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, শেরপুর শাখা সূত্রে জানা গেছে, এ বছর শেরপুর জেলায় ১৪২ টি মন্দিরে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৪২ টি মন্দিরে, নালিতাবাড়িতে ৩৫টি মন্দিরে, শ্রীবরদিতে ১০ টি মন্দিরে, ঝিনাইগাতিতে ১৭ টি এবং নকলায় ১৮ টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। শেরপুর জেলায় বিভিন্ন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, ১৭ সেপ্টেম্বর মহালয়া অনুষ্ঠিত হবার পরপরই শেরপুরের মন্দিরগুলোতে শুরু হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। আগামী ২১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীতে দেবী বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠিকতা, চলবে আগামী ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত। এরই মধ্যে মন্দিরগুলোতে খড় ও মাটি দিয়ে পরম যতেœ গড়ে উঠছে প্রতিমা। এখন চলছে দো-আঁশ মাটির কাজ। আর এসব প্রতিমা তৈরিতে দম ফেলার ফুসরত নেই প্রতিমা শিল্পীদের। এরপর রঙ তুলির টানে প্রতিমাগুলো ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন প্রতিমা শিল্পীরা। দেবী মা দুর্গা তার সঙ্গে বিদ্যার দেবী স্বরসতী, ধন সম্পদের দেবী ল²ী এবং তার সঙ্গে দেবতা কার্তিক ও গনেশসহ নানা দেব-দেবীর প্রতিমার রূপকে ফুটিয়ে তুলবেন নিপুন হাতের ছোঁয়ায়। এদিকে, করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে এবছর জাঁকজমকভাবে পূজার আয়োজন করছেন না আয়োজকেরা। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনার্থীদের প্রতিমা ও পূজা দেখার ব্যবস্থা করছেন তারা। মন্দিরগুলোতে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা থাকলেও থাকবে না সড়কগুলোতে। প্রতিমা শিল্পী পঞ্চনন পাল, রনজিৎ পাল, রবীন্দ্রনাথ দে , স›জত নাগ জানান, এবছর এক একজন ভাস্কর ৪ থেকে ৬ টি করে প্রতিমা তৈরি করছেন। পূঁজা শুরুর দিন পর্যন্ত রঙ-এর কাজ করতে হবে তাদের। তবে করোনাকালীন চাহিদার তুলায় মজুরি কম পাচ্ছেন তারা। সেই সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এ বাজারে পরিশ্রমের পর প্রতিমা তৈরি করে যে মজুরি পান তা দিয়ে জীবন যাপন করা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। অনেকেই এ পেশা ছেড়ে চলে গেলেও তারপরেও বাপ দাদার আদি পেশা টিকিয়ে রাখছেন তারা। আয়োজক শংকর ঘোষ, ঘোষ, কৃষ্ণ ঘোষ, সজীব ঘোষ, জনি ঘোষ, রনি ঘোষ জানান, এর মধ্যে আমরা পূঁজা উদযাপন পরিষদের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিধি মেনে শুধুমাত্র মন্দিরের ভিতরে আয়োজনের কথা বলেছি। তবে এবার সড়কগুলোতে আলোকসজ্জা, গান-বাজনাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে যারা প্রতিমা দেখতে আসবেন তাদের জন্য তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মনে চলার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ শেরপুর জেলার সভাপতি এড. সুব্রত দে ভানু বলেন, এর মধ্যে আমাদের সঙ্গে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আলোচনা হয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রাদূর্ভাবের জন্য স্বাস্থ্য বিধি মেনে শুধুমাত্র মন্দিরের ভিতরে আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। তবে এবার সড়কগুলোতে আলোকসজ্জা, মাইক, গান-বাজনার ব্যবস্থা বাদ দিয়ে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠান করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এবছর শুধু মাত্র মন্দিরের মধ্যে আলোকসজ্জা করা হবে। বাইরের সড়কগুলোতে আলোকসজ্জা, গান বাজনাসহ কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে না। প্রতিটি মন্দিরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্যও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া শেরপুরের জেলা পুলিশ আগের মত এ বছরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এছাড়াও তিনি আশা প্রকাশ করেন, সা¤প্রদায়িক স¤প্রতির জেলা শেরপুর। তাই দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এবারের পূজা অনুষ্ঠিত হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by