বাংলাদেশ

সংলাপ-সমঝোতার আহ্বান সুজনের

  প্রতিনিধি ৫ আগস্ট ২০২৩ , ৬:০২:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

সংলাপ-সমঝোতার আহ্বান সুজনের

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে উদ্ভূত সংকট নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

শনিবার (৫ আগস্ট) শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে সুজনের উদ্যোগে এক মানববন্ধনে বক্তারা এই আহ্বান জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা চাই এই নির্বাচন হোক অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। কিন্তু বিরাজমান রাজনৈতিক বাস্তবতা অংশগ্রহণমূলক তথা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য অনুকূল নয়। কেননা, ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার জোটসঙ্গীরা চায় বর্তমান সংবিধানের আওতায় অর্থাৎ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। অপরদিকে ক্ষমতাপ্রত্যাশী বিএনপিসহ আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলগুলো চায় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, রাজপথ ততই উত্তপ্ত হচ্ছে।

রাজপথে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, এ অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলো যদি অবিলম্বে তাদের অবস্থান পরিবর্তন না করে বা তাদের মধ্যে যদি সমঝোতা না হয়, তবে সামনের দিনগুলোতে জাতিগতভাবে আমরা চরম সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হতে পারি। দেশ চলে যেতে পারে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে, যা কারোই কাম্য নয়। একটি অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, শান্তিপূর্ণ তথা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা।

সুজনের সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের এখনকার মূল ইস্যু দলীয় সরকার বনাম তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয়, মূল ইস্যু হলো ভোটাধিকার। এটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ইস্যু। সমঝোতা করতে হলে কাউকে না কাউকে ছাড় দিতে হবে। নইলে হবে না। ১৯৯৬ সালে আমরা একটি সমঝোতায় পৌঁছতে পেরেছিলাম। এই সমঝোতার ফলে নির্বাচনে সমতল ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছিল। পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে এই সমঝোতা ভেঙ্গে যায় এবং নির্বাচনের ক্ষেত্র অসমতল হয়ে পড়ে। সমতল ক্ষেত্র তৈরি করতে না পারলে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সেদিকে যদি আমরা মনোনিবেশ করি তাহলেই সমঝোতায় পৌঁছানো সম্ভব।

জাকির হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরেও আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করার একটি পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারিনি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী না হওয়ায় আমাদের উন্নয়ন হলেও নাগরিক অধিকারে আমরা পিছিয়ে আছি। জনগণের প্রতি যদি ভালোবাসা না থাকে তাহলে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বিকশিত হবে না।

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, গণতন্ত্রের মূল কথা হচ্ছে গভর্নমেন্ট বাই ডিসকাশন। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ হচ্ছে সরকার ও বিরোধী দল আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ফয়সালা করে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে এখানে রাজপথে মারামারি, সহিংসতার মধ্যে দিয়ে ফয়সালা হয়। এটা চলতে পারে না। ফলে বিদেশিরাও তাদের খেলার জায়গা পেয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই রাজনৈতিক দলগুলো আলাপ আলোচনায় বসে ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করুক, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সমঝোতায় আসুক।

সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অংশ নেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, সহ-সম্পাদক জাকির হোসেন, নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি, সুজন ঢাকা মহানগর কমিটির সহসভাপতি নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by