দেশজুড়ে

আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে ২৮ পরিবারের ১৪০ জন সদস্য

  প্রতিনিধি ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ , ৩:৩৮:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ

আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে ২৮ পরিবারের ১৪০ জন সদস্য

মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সাথে বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির (এএ) চলমাম সংঘর্ষের জেরে সীমান্ত লাগুয়ু গ্রামগুলো এখন প্রায় জনশূন্য। এদিকে সীমান্ত পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার কারণে ঘুমধুম ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুর থেকে সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন। এদিকে বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ পর্যন্ত বর্তমানে উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২৮ টি পরিবারের ১৪০ জন সদস্য আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন আশ্রয়কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা গ্রাম পুলিশের সদস্য রঞ্জিত বড়ুয়া।

তিনি জানান গতকাল বিকেল ২ টা থেকেই ভয়ে আর আতঙ্কে আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ আসতে শুরু করেছেন। রাতে তাদের খাবারের ব্যবস্থা ও শীতবস্ত্র দেয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া রহিমা বেগম জানান তাদের অধিকাংশ পরিবারের সকল শিশু,বৃদ্ধ, নারীরা ভয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছে,শুধু বাড়ির কোন জিনিসপত্র আনতে না পারায় তার স্বামী সেখানেই থেকে গেছেন।

তিনি জানান রাতে ভাত,মাছ,আর সকালের নাস্তা হিসেবে সুটকি দিয়ে গরম ভাত দেয়া হয়েছে। তবে অনেকেই সকালের নাস্তা ঠিকভাবে পায়নি অভিযোগ করলে দায়িত্বে থাকা গ্রাম পুলিশের সদস্য রঞ্জিত বড়ুয়া জানান রান্না করা পাতিল না থাকায় পাশের গ্রাম হতে পাতিল এনে আবার রান্না করা লাগবে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন আশ্রয় নেয়া ২৮ পরিবারের ১৪০ জন সদস্য।

আশ্রয়কেন্দ্রের গ্রাম পুলিশ বাদশামিঞা জানান সকাল রাতে ও সকালে তেমন কোন গোলাগুলি হয়নি বলে আশ্রয় নেয়া অনেকেই নিজের বাড়িতে ফিরতে পারে আজকে তবে এখন যাওয়াটা ঠিক হবে কিনা তারাই সিদ্ধান্ত নিবে। আশ্রয়কেন্দ্র উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বীপন বড়ুয়া বলেন গতকাল জেলা প্রশাসক সীমান্ত পরিদর্শনে এসেছিলেন এবং এই স্কুলটি বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে আছে,যারা এখানে আছেন তাদের নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছি, শ্রেণিকক্ষ গুলো এখন থাকার রুম হিসেবে ব্যবহার করছি,তাই শ্রেণি কার্যক্রমও এখন বন্ধ আছে।

ঘুমধুম ইউপির চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, টানা কয়েক দিন ধরে সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির কারণে আতঙ্কে আছেন এলাকাবাসী। তাই জেলা প্রশাসনের নির্দেশ ক্রমে আমরা সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছি,আশা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এদিকে গতকাল নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন সহ ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বৃন্দ।

আজ সীমান্তবর্তী ঘুমধুম তুমব্রু এলাকা পরিদর্শনের কথা রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে গত তিন দিনে এ পর্যন্ত মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ২৬৪ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন এবং তাদের বিজিবি হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.শরীফুল ইসলাম।

এদিকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি বিজিবির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে বলে জানানো হয়েছে বিজিবি ‘র পক্ষ হতে।

Powered by