প্রতিনিধি ২০ জানুয়ারি ২০২১ , ৪:০৭:৫৭ প্রিন্ট সংস্করণ
মো. খবির উদ্দিন : মুসলিম বিশ্বের আয়েশি নেতৃত্ব নিজেদের ক্ষমতা বংশ পরম্পরায় নিরাপদ রাখার জন্য একের পর এক অপরাজনীতির জালে জড়িয়ে পড়ছে। একটা উগ্র জাতিসত্তার সাথে সম্পর্কের জন্য এত ব্যাকুলতার কারণ কি? এর জন্য হয়ত ভয়াবহ মূল্য দিতে হবে নৈতিকতায় যারা অটল তাদের। মুসলিম নেতৃবৃন্দ এমন এক দেশের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েছে যাদের বিভিন্ন সময় নৈতিক স্খলনের কারণে নিজ মাতৃভূমি থেকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন রাষ্ট্রে। বছরের পর বছর নির্বাসনে থাকার পরেও তারা মাটির সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করতে পারেনি। শুধু তাদের অবিশ্বস্ততা, নীতিভ্রষ্টতা এবং অশান্তি সৃষ্টিকারী আচরণের কারণে। এটা তাদের অবিচ্ছেদ্য প্রতিকৃতি। যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়িয়েছে নিজেদের ঠাঁই করে নেয়ার জন্য। শুধু নীতিভ্রষ্টতার কারণে সকল রাজ্য থেকেই তারা বিতাড়িত হয়েছে। কিন্তু বিংশ শতাব্দীর সত্তর দশকের শেষের দিকে এসে এই পরীক্ষিত নীতিভ্রষ্টদের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য ঘটকের পিছু ছুটছেন মুসলিম শাসকগণ। এই চুক্তি সম্পাদনের ঘটক হিসেবে বরাবরই মার্কিন মুল্লুকের প্রধান নির্বাহী দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে থাকেন। লাভের অঙ্ক কড়ায় গন্ডায় বুঝে নেয়ার জন্য এই গলদঘর্ম। সম্পদের ভান্ডার খ্যাত মধ্যপ্রাচ্যের প্রতি ইঙ্গ-মার্কিনীদের এই দৃষ্টিভঙ্গি আজ নয় শতাব্দীর পর শতাব্দীর। এই সম্পদের লোভে অনেক রক্ত ঝরেছে এবং ঝরছে অনবরত। নিকাহনামায় সহি সম্পাদনের পূর্বে ভেবে নেয়া উচিত এ বন্ধনের কারণে কাছের জনদের যেন ঘরছাড়া হতে না হয়। উইপোকা যেভাবে আগুন দেখে আত্মহননের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে তদ্রƒপ মিসর, জর্ডান, আমিরাত, বাহরাইন, সুদান ও মরক্কো ইতিমধ্যে ঝাঁপ দিয়ে ফেলেছে।
আজ থেকে আঠারশত বছর আগে ১৩২ খ্রি: ইহুদিরা রোমানদের সাথে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে পালিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাযাবর হিসেবে আশ্রয় নেয় এবং একটি অংশ আমেরিকা পাড়ি জমায়। বিংশ শতাব্দীর আগ পর্যন্ত শুধুমাত্র ১০৯৯ থেকে ১১৮৭ মোট ৮৮ বছর ব্যতীত ইসরাইল-ফিলিস্তিন ভূ-খন্ডটি মুসলমানদের অধীনেই থাকে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর খলিফারা ব্রিটিশ-ফরাসিদের কাছে পরাজিত হলে এই সাম্্রাজ্য ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। প্যালেস্টাইন চলে আসে ব্রিটিশ সাম্্রাজ্যের অধীনে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রিটেনের দুর্লভ বোমা তৈরির উপকরণ কৃত্রিম ফসফরাস ইহুদি বিজ্ঞানী ড. হেইস বাইজম্যান তৈরি করেন। এর পুরস্কার হিসেবে প্যালেস্টাইন ভূখন্ডটি ইহুদিদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য ব্রিটেন সিদ্ধান্ত স্থির করে। পরবর্তীতে ব্রিটেন ১৯১৮ সাল থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত প্যালেস্টাইনকে নিজেদের অধীনে রাখে।
কৌশলী ইহুদি জাতি ইঙ্গ-মার্কিনের সহযোগিতায় আরবদের ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে প্যালেস্টাইনে ইহুদি বসতি স্থাপন করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশ সরকার প্যালেস্টাইন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং বেলফোর ডিক্লারেশন অনুযায়ী এখানে একটি স্বাধীন ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়াস পায়। ভারত পাকিস্তানসহ ১০টি দেশ এর বিরোধিতা করলেও এ ব্যাপারে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্র শক্তি ফ্রান্স, আমেরিকা, রাশিয়াও সমর্থন জানায়। বিষয়টি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে উত্থাপন করা হলে ২৯ নভেম্বর ১৯৪৭ সালে (১৮১ নাম্বার রেজুলেশন হিসেবে) পাস হয়। তবে প্রস্তাবিত ইহুদি রাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিম সীমানা ছিল অনির্ধারিত যাতে ইহুদিরা ভবিষ্যতে সীমানা বাড়াতে পারে। জাতিসংঘের এই প্রস্তাবে উপেক্ষিত হয়ে পড়ে প্যালেস্টাইন। পাস হয়ে যায় একটি অবৈধ ও অযৌক্তিক প্রস্তাব।
সেই বিতর্কিত চুক্তির পর থেকে অশান্ত হয়ে ওঠে গোটা ফিলিস্তিনসহ মুসলিম বিশ্ব। ইঙ্গ-মার্কিনের এই কৌশলে সর্বস্বান্ত হয়ে যায় ফিলিস্তিন। সেই সমস্যা সমাধানের স্লোগান না তুলে একের পর এক মুসলিম দেশ চুক্তিতে জড়িয়ে যাচ্ছে ইসরাইলিদের সাথে। ঘটকরা পেয়ে যাচ্ছেন নোবেল পুরস্কার।
মুসলিম নেতৃত্ব যাদের আজ্ঞা পাওয়ার জন্য এই আত্মাহুতি দিচ্ছে তাদের প্লানিং বোঝার ক্ষমতা এই আয়েশিদের নেই। যারা পরীক্ষিত ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী। হাজার হাজার বছরেও যাদের নৈতিক সংশোধন আসেনি তাদেরকে ‘তায়াল তায়াল আখি আখি’ বলে কাছে টেনে নিচ্ছেন কেন? পরিণতি দেখার জন্য অপেক্ষা করুন। যাদের অস্ত্রের আঘাতে প্রতিদিনই ফিলিস্তিনের মা সন্তানহারা হচ্ছে, স্ত্রী স্বামীহারা হচ্ছে, সন্তান বাবা-মা হারা হচ্ছে। তাদের এই কাজের অনুমোদনের জন্যই কি একের পর এক এই বিতর্কিত চুক্তি।
ইতিমধ্যে যারা ইসরাইলের আস্থাভাজনের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন তাদের দৌড়ে প্রথম স্থান অধিকারী মিসর। ১৯৭৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ক্যাম্প ডেভিড চুক্তির মাধ্যমে মিসর-ইসরাইল সম্পর্কের সূচনা হয়। মিসরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার আল সাদাত ও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী গবহধপযবস ইবমরহ ১২ দিন গোপন আলোচনার মাধ্যমে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের মধ্যস্থতায় চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে ১৯৭৯ সালে মিসর ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয়। এই চুক্তির জন্য সাদাত ও বেগিন ১৯৭৮ সালে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। এই চুক্তির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ২০০১ সালে নোবেল পান।
ইসরাইলের সাথে চুক্তির দৌড়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী জর্ডান। ইসরাইল-জর্ডান শান্তি চুক্তি (ওয়াধি আরবা চুক্তি) স্বাক্ষরিত হয় ১৯৯৪ সালের ২৬ অক্টোবর। এই চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে ভূমি, পানি, ব্যবসা এবং ভ্রমণের ক্ষেত্রে সম্পর্ক স্থাপিত করে। এই চুক্তির অন্য একটি অঙ্গীকার ছিল জর্ডান অথবা ইসরাইল কোন দেশই তাদের ভূমি ব্যবহার করে তৃতীয় কোন দেশকে তাদের ওপর আক্রমণ করতে দিবে না।
অতি সম্প্রতি ইসরাইলের সঙ্গে স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে আরব দেশ বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউসে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে আগেই ঘোষণা দিয়েছিল এই তিন দেশ। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পৃথকভাবে আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ও বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল লতিফ আল জায়ানির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও এই তিন নেতা মিলে এক যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন। ইসরাইলের সঙ্গে এই আরব দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে মূল ভূমিকা পালন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, প্রথম উপসাগরীয় আরব দেশ হিসেবে আমিরাত ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেয় আগস্ট-২০২০ মাসে। সেই পথে হেঁটেছে আরেক উপসাগরীয় দেশ বাহরাইনও।
ট্রাম্পের এই ডাকে সুদানও হাত তুলে সমর্থন জানাতে বিলম্ব করেননি। যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ২৩ অক্টোবর-২০২০ শুক্রবার সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, সুদান ও ইসরাইল নিজেদের সম্পর্ক পুরোপুরি স্বাভাবিক করতে একমত হয়েছে। ইসরাইল ও সুদানের অন্তর্বর্তী সরকারও একইদিন শুক্রবার যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে একই খবর জানিয়েছে বলে সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে। তেল আবিবের সঙ্গে খার্তুমের সম্পর্ক স্থাপনে সম্মতির খবর জানানোর কয়েক মিনিট আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, সন্ত্রাসবাদের প্রতি সমর্থনকারী দেশগুলোর ‘কালো তালিকা’ থেকে সুদানের নাম মুছে ফেলা হয়েছে।
দৌড়ে সর্বশেষ অবস্থানে রয়েছে মরক্কো। আমেরিকার মধ্যস্থতায় ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দিল মরক্কো। এই দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হতে যাচ্ছে বলে জানান ট্রাম্প। সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাইরাইন ও সুদানের পর এই সিদ্ধান্ত আসলো মরক্কোর পক্ষ থেকে। বিনিময়ে বিতর্কিত পশ্চিম সাহারা অঞ্চল নিয়ে মরক্কোর দাবিকে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে গত চার মাসে চারটি আরব দেশ ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করল। ১০ ডিসেম্বর-২০২০ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় ঘোষণা দেন, ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সম্মত হয়েছে মরক্কো। তিনি বলেন, ‘আরেকটি যুগান্তকারী অর্জন হল আমাদের দুই মহান বন্ধু ইসরাইল এবং কিংডম অব মরক্কো পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্মত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি অর্জনের জন্য এটি বিশাল অগ্রগতি।’ এর আগে ফিলিস্তিন-ইসরাইলের মধ্যে অসলো চুক্তি সইয়ের পর ১৯৯৩ সালে তেল আবিবের সঙ্গে স্বল্প পরিসরে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে মরক্কো। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি নিপীড়ন, নির্মমতা বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ২০০০ সালে সেই সম্পর্ক ছিন্ন করে দেশটি।
ট্রাম্প ক্ষমতায় বসার পর থেকেই একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত ও কাজের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে যতনা নন্দিত তারচেয়ে বেশি নিন্দিত হয়েছেন। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে তার অনেক মাথাব্যথা। মধ্যপ্রাচ্য থেকে সন্ত্রাস নির্মূলের জন্য তিনি একের পর এক দেশকে ধরে নিয়ে ইসরাইলের সাথে চুক্তি করিয়ে দিচ্ছেন। তিনি যে গেম প্লান তৈরি করেছিলেন তা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। আরেরিকার জনগণ তার গেম প্লান সাকসেস হতে দেননি। দ্বিতীয় মেয়াদের নির্বাচনে হেরে তিনি নিজ দেশেই যে আচরণ করেছেন তার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন তিনি সুস্থ নন। তিনি ভারসাম্যহীন। তিনি সন্ত্রাসের মদদদাতা। তার দাওয়াতে সাড়া দিয়ে যারা এই চোরাবালিতে পা আটকিয়েছেন তারাও অপেক্ষা করুন ইসরাইলের আসল চেহারা দেখার জন্য।
১০ ডিসেম্বর-২০২০ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় ঘোষণা দিয়েছেন, আমাদের দুই মহান বন্ধু ইসরাইল এবং কিংডম অব মরক্কো পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্মত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি অর্জনের জন্য এটি বিশাল অগ্রগতি।’ তিনি সুদানের চুক্তির ব্যাপারে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের প্রতি সমর্থনকারী দেশগুলোর ‘কালো তালিকা’ থেকে সুদানের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। ট্রাম্পের এই বার্তাকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর শান্তিপ্রিয় প্রতিটা মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে- কে পৃথিবীতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মদদদাতা? কে ইরানের জেনারেলকে হত্যার আদেশ দিয়েছে? কে জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা দিয়ে ইসরাইলকে উসকে দিয়েছে? মধ্যপ্রাচ্যে কারা আইএস সৃষ্টি করেছে। আইএসএর ফান্ডের যোগানদাতা কে? আহত আইএসদের চিকিৎসার খরচ কোথা থেকে আসে। কে ক্যাপিটাল হিলে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর আদেশ দিয়েছে? নিজের চেহারা আয়নায় দেখুন। পৃথিবীর কোনো মুসলিম দেশই সন্ত্রাসী দেশ নয়। মুসলমান সভ্য জাতি। আপনারা উসকে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা মুসলিম বিশ্বকে অশান্ত করে রেখেছেন। দিনের পর দিন মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে করতে গোটা পৃথিবীতে মুসলমানদেরকে কোনঠাসা করে দিয়েছেন। মুসলমানদেরকে খেতাব দিয়েছেন সন্ত্রাসী হিসেবে।
ট্রাম্প ইহুদিদের নিয়ে বেশ মাথা ঘামিয়েছেন। যথেষ্ট দৌড়ঝাঁপ করেছেন। তার টার্গেট ছিল একাজের বিনিময় হিসেবে একটা নোবেল পুরস্কার এবং দ্বিতীয়বার মসনদে বসা। জনগণ তার অবিশ্বস্ততার পুরস্কার যথার্থ কষে দিয়েছে। আমেরিকার রাজনীতিতে তিনি কালিমা লেপে দিয়েছেন। তিনি আমেরিকার ক্ষমতার মসনদে থাকার জন্য নিজেকে বিকারগ্রস্ত হিসেবে প্রমাণ করেছেন। তিনি সৌদি আরবের সংস্কৃতিকে ধসিয়ে দিয়েছেন। ট্রাম্পভক্ত যুবরাজ সালমান ট্রাম্পের বাঁশির সুরে অনেক নেচেছেন। আমরা জানি যুবরাজের এ নাচন থামার নয়। কারণ তিনি নাচতে শিখে গেছেন। সবকিছু হারাবার আগে মুসলিম বিশ্বের দায়িত্বশীল নেতাদের উচিত হবে ওআইসিকে কার্যকরী সংস্থায় পরিণত করে নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা। সকলে মিলে মরণ ফাঁদে জড়িয়ে গেলে পুতুল নাচের মতো সুতোর টানে শুধু নেচেই যেতে হবে। এভাবে উজাড় করে সবকিছু বিকিয়ে দেয়ার আগে পরিণতি ভেবে নিয়ে উজাড় করা উচিত। আপনারা চুক্তির পরেও কি ইসরাইলের আগ্রাসনকে ঠেকাতে পেরেছেন। পারেননি। চুক্তি যেহেতু করেছেন তবে ফিরিয়ে দিন ফিলিস্তিনিদের ভূখন্ড। নিরাপত্তা দিন জেরুজালেমের। বাধ্য করুন ইসরাইলকে মানবিক হতে। নচেৎ সর্বস্ব হারাবার জন্য অপেক্ষা করতে থাকুন। সামনে চোরাবালির মরণ ফাঁদ। পা ফেলার পূর্বে ভাবতে বিলম্ব করলে তলিয়ে যেতে সময় লাগবে না। বোধদয় হোক মুসলিম বিশ্বের আয়েশি নেতাদের। বোধদয় হোক মুসলিম বিশ্বের সকল নেতাদের।
তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া, বিবিসি, আল জাজিরা, সিএনএন।
লেখক: কলামিস্ট ও
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক দৈনিক ভোরের দর্পণ
Email: khobir72@gmail.com