চট্টগ্রাম

মিরসরাইয়ে সন্ত্রাসী হামলায় আহত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা, ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

  প্রতিনিধি ৫ মার্চ ২০২৩ , ২:৫৪:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ


আশরাফ উদ্দিন (চট্টগ্রাম) মিরসরাই:


মিরসরাইয়ে সন্ত্রাসী হামলায় আহত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা নিয়েছে মিরসরাই থানা পুলিশ। দফায় দফায় নিজ বাড়িতে হামলার শিকার হয়ে মারাত্মক আহত হন শিক্ষক আবু ইউসুফ। আহত শিক্ষক হাসপাতালে থাকা অবস্থায় হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে শিক্ষক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে মিরসরাই থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
স্থানিয়দের সাথে কথা বলে ও সরজমিনে অনুসন্দান করে জানা যায়, মিরসরাই উপজেলার সাহেরখালী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু ইউসুফ প্রকাশ রাসেল মাস্টারের উপর গত ২৬ ফেব্রæয়ারী স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ও পরবর্তীতে শিক্ষকের বাড়িতে দফায় দফায় হামলা করে তারই সাবেক দুই ছাত্র পরিবারের সদস্যরা। হামলার সময় শিক্ষকের বাড়িঘর লুটপাট ও তছনছ করা হয়। সাবেক ছাত্রের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মারাত্মক জখম হয় শিক্ষক ও তার এক ভাই। এসময় শিক্ষকের চিৎকারে আশপাশের মানুষ এগিয়ে এলে হামলাকারীরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে রাস্তায় পড়ে গিয়ে আহত হন হামলাকারীদের একজন। স্থানিয়রা ধাওয়া করে হামলাকারীদের দুইজনকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছে দুইজনকে আটক করে। আহত শিক্ষক, তার ছোট ভাই ও হামলাকারীদের মধ্যে আহত এক নারীকে চিকিৎসার জন্য স্থানিয়র উপজেলা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে হামলাকরীদের ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হলেও রহস্যজনক কারনে তাদের ছেড়ে দেয়া হয় পরবর্তীতে। এছাড়া আহত শিক্ষক হাসপাতালে চিকিৎসারত থাকা অবস্থায় শিক্ষক আবু ইউসুফ, তার ভাই ইউনুস, স্ত্রী মিনি বেগম ও ৭০ বছরের বৃদ্ধ মাতা হুর জাহানকে আসামী করা হয়েছে। এছাড়া একই মামলায় শিক্ষককে হামলাকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করতে আসা ৩ এলাকাবাসি রানা, আলাউদ্দিন ও আব্দুল মান্নানকে আসামী করা হয়েছে। শিক্ষকের বাড়িতে সন্ত্রাসীদের হামালা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও উল্টো স্ত্রাসীদের বাড়িতে ২লক্ষ২০হাজার টাকার মালামাল চুরি, শ্লীলতাহানী, হত্যাচেষ্টা ও ভয় প্রদর্শনের মামলা নেয়া হয়েছে। এমন ঘটনায় ক্ষোভে পুষছে শিক্ষক ইউসুফের এলাকাবাসি।
শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ার খবরে ইতিমধ্যে স্থানিয় কয়েকশত সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষোভের ঘটনাস্থলে বিক্ষোভারীদের শান্ত রাখার জন্য মামলা নেয়া হয়নি বলে আস্বস্থ করেন মিরসরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কবির হোসেন। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় ঠিক তার উল্টো। বিষয়টি জানার জন্য বারবার মিরসরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কবির হোসেনের সরকারী নাম্বারে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
তবে বোন আহত হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্র ইউনুছ জানায় তার বোন বাড়িতে পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছে। তাকে শিক্ষক আবু ইউসুফ বা অন্য কেউ আঘাত করেনাই। এব্যাপারে তার ভিডিও বক্তব্য রয়েছে সাংবাদিকদের কাছে।
মিরসরাই উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুভাষ সরকার জানান, শিক্ষকের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় পুলিশ প্রথমদিকে মালনা নিতে ঘড়িমষি করে। পরবর্তীতে আন্দোলনের মুখে মামলা নিলেও পুলিশ চতুরতার আশ্রয় নেয়। থানা পুলিশ সন্ত্রাসী হামলায় আহত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে একটি ন্যাক্কার জনক কাজ করেছেন। আমরা শিক্ষক সমিতি মিরসরাই থানা পুলিশের এমন কর্মের তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এছাড়া আমরা ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে আন্দোলনের ডাক দেবো।
বিষয়টি সম্পর্কে কথা বলার জন্য মিরসরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কবির হোসেন ও এএসপি সার্কেল ইফতেখার হাসানের ফোন নাম্বারে যোগাযোগ করতে ব্যার্থ হয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার শফিউল্লাহ সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানার সাথে আলোচনা করে উপযুক্ত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by