রংপুর

উলিপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

  প্রতিনিধি ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৫:২২:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

উলিপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

কুড়িগ্রামের উলিপুরে আওয়ামীলীগ থেকে নির্বাচিত এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাঁধা প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। চেয়ারম্যানসহ তার লোকজন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের নির্মানাধীন সীমানা প্রাচীরের একটি অংশ ভাংচুর ও দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে জীবননাশের হুমকি প্রদান করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে, শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নে। এ ঘটনায় উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাতেই চেয়ারম্যানসহ তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নে উমানন্দ ক্বারীপাড়া এলাকায় জনগনের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান সেবা পরিচালনার জন্য ১৯৮০ সালে এক একর (১০০ শতাংশ) জমির উপর একটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকার মানুষদের সেবা দিয়ে আসছেন। বর্তমানে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের ফিজিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক অপারেশনাল প্লানে অর্ন্তভূক্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতায় ওই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীরের নির্মান কাজ চলমান রয়েছে।

কাজ চলাকালীন শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তবকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ১৫-২০টি মোটর সাইকেলে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে নির্মান কাজ বন্ধ করে দেন। এ সময় তিনি শ্রমিকদের জীবননাশের হুমকি দিয়ে নির্মানাধীন প্রাচীর ভাংচুর করেন এবং ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান। এ ঘটনায় উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুরুল আমিন বাদী হয়ে সরকারি কাজে বাঁধাদানের অভিযোগে তবকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমানসহ নামিয় ৭ জন ও অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন।

ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার এরশাদুল হক বলেন, ঘটনার সময় আমি জোহরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে ছিলাম। পরে ফিরে এসে শুনতে পারি চেয়ারম্যান ও তার লোকজন এসে সীমানা প্রাচীর ভাংচুর করে হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যান।
এ বিষয়ে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নে নির্বাচিত তবকপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই ইউনিয়নের স্থানীয় সরকারের প্রধান। ইউনিয়নের যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে তার সবগুলোর সভাপতি আমি। ইউনিয়নের ভালোমন্দ দেখার দায়িত্ব আছে আমার। ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ১ একর জায়গা, তারা কোন মাপযোগ ছাড়াই ৮৫ শতকের মধ্যে বাউন্ডারী দিচ্ছে। বাকী ১৫ শতক কোথায় গেলো ? তিনি আরও বলেন, ইউএনও এবং এসিল্যান্ড স্যার চিঠি দিয়ে বিষয়টি আমাকে দেখতে বলেছেন। তারা ১৫ শতক জায়গা উদ্ধার না করে মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে বাউন্ডারী দিচ্ছে। আমি প্রতিবাদ করেছি। সেখানে আমি কাউকে হুমকি ধামকি দেইনি।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুরুল আমিন জানান, সীমানা প্রাচীর ভাংচুরের ঘটনায় থানাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেছি। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে ইউএনও স্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মর্তুজা অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টির তদন্ত চলছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন রাংসা জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাচীরের একটি অংশ ভাঙ্গা অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়দের সাথে আমি কথা বলেছি। পরবর্তীতে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by