রংপুর

উলিপুরে মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষে লাভবান চাষিরা দ্বিগুণ লাভের আশা

  উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৬:০৮:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

উলিপুরে মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষে লাভবান চাষিরা দ্বিগুণ লাভের আশা

কুড়িগ্রামের উলিপুরে মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষে লাভবান চাষিরা। করলার বাম্পার ফলন হওয়ায় দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন করলা চাষিরা। বাজারে দাম ভালো থাকায় খুশি করলা চাষিরা। করলা চাষে কম পূঁজিতে বেশি লাভবান হওয়ায় দিন দিন করলার চাষ বাড়ছে উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায়। অন্যান্য ফসলে লোকসান গুণতে হলেও করলা চাষ করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।


কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, এবারে উপজেলায় রবি শস্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৫০ হেক্টর। এর মধ্যে করলা চাষও রয়েছে। মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষে অল্প সময়ে ভালো ফলন এবং বাজার দর ভালো থাকায় উপজেলায় করলা চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে করলা চাষিদের। কৃষি অফিস থেকে করলা চাষিদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া অব্যহত রয়েছে।


সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মালচিং পদ্ধতিতে করলা চাষ করে করলা চাষিরা ক্ষেত পরিচর্যা ও করলা উঠাতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। সকাল ও বিকেলে করলা উঠিয়ে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে দেখা যায়। বাজার দর ভালো থাকায় তাদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যায়। তারা বলেন মালচিং পদ্ধতিতে অল্প সময়ে অল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ পাওয়া যায় করলা চাষে। করলার চাহিদা বাজারে থাকায় বাজারদর বেশি বলে জানান তারা। তবে সার কীটনাশক সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় করলা চাষে ব্যায় বেশি হচ্ছে বলে জানান তারা। তারা আরও বলেন, এবারে বৈরি আবহাওয়ার কারণে কিছু কিছু করলার ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে।


উপজেলার দক্ষিন দলদলিয়া ইউনিয়নের পাতিলাপুর গ্রামের করলা চাষি লিটন মিয়া বলেন, এবারে ২৫ শতক জমিতে করলার চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। এক সপ্তাহের মধ্যে করলা বাজারজাত শুরু হয়ে যাবে। যে ভাবে ফলন হয়েছে তাতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মণ করলার আশা করছেন। বর্তমান বাজারে পাইকারীতে করলা মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৪’শ টাকা। বর্তমান আবহাওয়া অনুকুল ও বাজারদর ভালো থাকলে করলা বিক্রি হবে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। যা ব্যায়ের থেকে দ্বিগুন লাভের আশা করছেন।


এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার করলা চাষিদের মধ্যে আজাহার আলী, জাহেরুল ইসলাম, রিয়াজুল ইসলাম, নুর আলম, বদিয়াল, আলমগীর ও মজিত সহ আরও অনেকে বলেন, করলা চাষের মৌসুম না থাকলেও উঁচু জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে করলার চাষ করা হয়েছে। এবারে বৈরি আবহাওয়ার কারণে কিছু কিছু করলার ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া অল্প সময়ে অল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ করা যায় করলা চাষে। বাজার দর অনেক ভালো থাকায় দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন তারা। বাজারে করলার চাহিদা সবসময় থাকে বলে জানান তারা।


উপজেলার পৌরসভার সবজি বাজারে আড়ৎদার শামীম ইসলাম বলেন, এবারে বৈরি আবহাওয়ার কারণে স্থানীয় ভাবে করলার তেমন আমদানি হচ্ছেনা। বর্তমান বাজারে পাইকেরীতে করলা কেজি প্রতি ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যে সকল চাষিদের করলার ফলন ভালো হয়েছে তারা অনেক লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।


উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম জানান, আমার ব্লোকে অনেক চাষি উঁচু জমিতে মালচিং পদ্ধতিতে করলার চাষ করেছেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছু কিছু করলার ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। যে সকল করলার ক্ষেত ভালো আছে সেখানে বাম্পার ফলন হয়েছে। তাদেরকে সার্বক্ষণিক বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।


উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন বলেন, করলা চাষের মৌসুম না থাকলেও উঁচু এলাকায় মালচিং পদ্ধতিতে করলার চাষ করা হয়েছে। করলা চাষ একটি লাভজনক ফসল। যা অল্প সময়ে অল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ করা যায়। উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা করলা চাষিদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসছেন। বাজারদর ভালো থাকায় করলা চাষিরা অনেক লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by