আন্তর্জাতিক

এবার ফ্রান্সে করোনাভাইরাসের বিপজ্জনক নতুন ধরন শনাক্ত

  প্রতিনিধি ৪ জানুয়ারি ২০২২ , ৭:৪৬:৫৪ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রামক ধরন ডেল্টা ও ওমিক্রনের দাপটে কাঁপছে বিশ্ব। এর মধ্যেই ফ্রান্সে শনাক্ত হয়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটির আরও একটি রূপান্তরিত ধরন।

নতুন শনাক্ত হওয়া এই ধরনটির বৈজ্ঞানিক নাম বি.১,৬৪০.২। ফ্রান্সের জীবাণু গবেষণা সংস্থা আইএইচইউ মেডিটেরানির নাম অনুসারে এটির নামকরণ হয়েছে। এছাড়া জানা গেছে, দেশটিতে এ পর্যন্ত ১২ জন নতুন রূপান্তরিত এই ধরনটিতে আক্রান্ত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের বৃহত্তম বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই)।

ফ্রান্সের সংবাদমাধ্যগুলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২১ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলে এক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রথম এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগী হিসেবে শনাক্ত হন।

দেহে করোনার উপসর্গ বোধ করায় স্থানীয় একটি ল্যাবে আরটিপিসিআর টেস্ট করিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। টেস্টের জন্য যে নমুনা তিনি দিয়েছিলেন, সেখানেই ধরা পড়ে ভাইরাসটির উপস্থিতি।

পরে আরও বিস্তারিত অনুসন্ধান ও গবেষণায় করোনাভাইরাসের নতুন এই ধরনটি সম্পর্কে নিশ্চিত হয় আইএইচইউ মেডিটেরানি। এ বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদনে সংস্থটির বিজ্ঞানীরা জানান, মূল করোনাভাইরাসের ৪৬ দফা অভিযোজন বার রূপান্তরের মাধ্যমে আগমন ঘটেছে নতুন এই ভাইরাসটির।

এই ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিন বা শুঁড়ের মতো দেখতে প্রত্যঙ্গগুলো মূল করোনাভাইরাসের থেকে ভিন্ন; তবে ভাইরাসটির রূপান্তরিত ৪ ধরন- গ্যামা, বিটা, থিটা ও ওমিক্রনের সঙ্গে সাদৃশ্য আছে আইএইচইউয়ের স্পাইক প্রোটিনের।

স্পাইক প্রোটিন করোনাভাইরাসের খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গ। এটির মাধ্যমেই এই ভাইরাসটি মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদেহে আটকে থাকে এবং একসময় কোষের ভেতরে ঢুকে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম শুরু করে।

বাজারে যেসব করোনা টিকা পাওয়া যায়, সেগুলোর মূল কাজ হলো ভাইরাসটির স্পাইক প্রোটিন ধ্বংস বা নিষ্ক্রিয় করা।

এখনও পিআর রিভিয়্যুয়ের জন্য আন্তর্জাতিক কোনো চিকিৎসা সাময়িকীতে গবেষণা প্রতিবেদনটি ছাপা হয়নি, তবে গত ২৯ ডিসেম্বর ফ্রান্সের চিকিৎসা সাময়িকী মেডরিক্সিভে প্রকাশিত হয়েছে এটি। প্রতিবেদনে গবেষকরা জানিয়েছেন, মধ্য আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুন থেকে এই ধরনটির আগমন ঘটেছে বলে ধারণা করছেন তারা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ইতোমধ্যে নতুন আইএইচইউয়ের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

তবে এখনও বিস্তারিত তথ্য হাতে না এলেও নতুন এই রূপান্তরিত ধরনটি বিপজ্জনক বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। ফ্রান্সের মহামারিবিদ এরিক ফিগল ডিং সম্প্রতি এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘আমাদের শঙ্কার মূল কারণ হলো- মূল ভাইরাসটির ৪৬ দফা অভিযোজন বা রূপান্তরের (মিউটেশন) মাধ্যমে এটির আগমন ঘটেছে। একটি ভাইরাস যতবার মিউটেশনের মধ্যে দিয়ে যায় এবং টিকে থাকে, ততই এর শক্তি ও ক্ষমতা বাড়ে। ওমিক্রন, ডেল্টার ক্ষেত্রে আমরা এমনটা দেখেছি।’

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by