প্রতিনিধি ১৬ মে ২০২০ , ৭:৩৮:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ
মো: সাইফুল ইসলাম, নরসিংদী : করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও প্রাণঘাতী আকার ধারণ করেছে। মানুষের অপমৃত্যু ঘটছে মরণঘাতী মহামারি এই ভাইরাসের ছোবলে। করোনা ভাইরাসে জন জীবন আজ অসহায় ও বিপর্যন্ত। এ লক্ষে সরকারের বিরাট অংশের অংশীদার হিসেবে যথাযথ নির্দেশনা মোতাবেক নরসিংদীর আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী কর্মকতা–কর্মচারী,আনসার সদস্যরা করোনা মোকাবিলায় প্রশংসনীয়–সাহসী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
এ বাহিনী'র সদস্যরা নরসিংদীতে জনসচেতনতা, সেবা ও নিরাপত্তামূলক কাজের শুরু থেকেই নরসিংদীতে সম্মুখযোদ্ধার দায়িত্ব পালন করছেন । লক–ডাউন, হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতকরণ, স্বাস্থ্য সচেতনতা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ত্রাণসামগ্রী বিতরণ, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি স্থাপনা ও বেসরকারি শিল্পকারখানার নিরাপত্তা প্রদানে আনসার বাহিনীর সদস্যরা স্থানীয় প্রশাসনের সাথে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নিজ নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে দিন–রাত কাজ করে যাচ্ছে জেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য পান্তে। মৃত্যুর ভয় দূর করে করোনা ভাইরাসের শুরু থেকেই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা।
নরসিংদী জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর অফিস সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত নরসিংদীতে তিনজন আনসার সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরা সবাই রুপালি ব্যাংক নরসিংদী শাখায় কর্মরত ছিল। এদের মধ্যে একজন নরসিংদী জেনারেল হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বাকি দুইজনকে জেলা কমান্ড্যান্ট সাজেদুর রহমানের তত্ত্বাবধানে হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্যাংকের এই শাখায় কর্মরত অন্য আরেক সদস্যকে আলাদা স্থানে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। জেলা কমান্ড্যান্ট মো: সাজেদুর রহমান চারজনের জন্যই প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধ সরবরাহ করছেন।
নরসিংদী জেলা সোনালি, রুপালি, অগ্রণী, জনতা ও উত্তরা ব্যাংকের মোট ৫০ টি শাখায় ১৬৯ জন অঙ্গীভূত আনসার সদস্য ব্যাংকের নিরাপত্তা ও গ্রাহক সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। যেহেতু ব্যাংকে জনসমাগম খুব বেশি হয়, তাই দায়িত্বপালন করতে গিয়ে আনসার সদস্যরা আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। তাছাড়া অর্পিত এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সারাদেশে এ পর্যন্ত আনসার বাহিনীর বিভিন্ন পদবীর প্রায় ২শ জন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা যায়।
নরসিংদী আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান, জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ সাজেদুর রহমানের জানান, নরসিংদী জেলায় মোট ৯৭টি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থায় সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানের জন্য জেলার প্রায় ৮১০ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত রয়েছে। করোনা ঝুঁকি নিয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে মাস্ক,হ্যান্ড গ্লাভস পরে তারা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। নরসিংদীতে তিন আনসার সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তাদের নিরাপত্তার সব রকম ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলার কোন আনসার কর্মকর্তা–কর্মচারী ছুটিতে নেই। কর্ম এলাকা ত্যাগ না করার জন্য তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া জেলা কমান্ড্যান্ট কার্যালয়ে সংযুক্ত দশজন ব্যাটালিয়ন আনসার জেলা প্রশাসনের সাথে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবরোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি, ত্রাণসামগ্রী বিতরণ, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কাজে সকাল–সন্ধ্যা দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়া নরসিংদীর প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবী ভিডিপি সদস্য–সদস্যারা স্থানীয় প্রশাসনকে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সাহায্য করছে। গ্রামের রাস্তায় চেকপোস্ট তৈরী করে গ্রামের লোকজনদের ঘর থেকে অকারণে বের না হওয়ার পরামর্শ প্রদানসহ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গণ–সচেতনা চালিয়ে যাচ্ছে।