আন্তর্জাতিক

কাবুল ছেড়েছেন মার্কিন কূটনীতিকেরা

  প্রতিনিধি ১৫ আগস্ট ২০২১ , ৫:৫২:৪০ প্রিন্ট সংস্করণ

তালেবান যোদ্ধারা কাবুলে প্রবেশ করতে শুরু করলে আফগানিস্তানে মার্কিন দূতাবাস থেকে কূটনীতিকদের সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: রয়টার্স

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ শহর জালালাবাদ দখলের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কাবুলে ঢুকতে শুরু করে তালেবান। আজ রোববার তৈরি হওয়া এই নতুন পরিস্থিতিতে হেলিকপ্টারে করে কাবুল ত্যাগ করেছেন সেখানে নিযুক্ত মার্কিন কূটনীতিকেরা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার চারপাশ থেকে তালেবান যোদ্ধারা কাবুলে প্রবেশ করতে শুরু করে। এ অবস্থায় কাবুলে মার্কিন দূতাবাস থেকে সব কূটনীতিককে সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। হেলিকপ্টারে করে তাঁরা কাবুল ত্যাগ করেন।

সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আফগান সরকারের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ‘তারা (তালেবান) সব দিক থেকে আসছে।’ তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি।

এদিকে কাবুলের প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস অ্যাকাউন্ট থেকে টুইটারে করা এক পোস্টে বলা হয়েছে, কাবুলে বিভিন্ন স্থানে গুলির শব্দ পাওয়া গেছে। তবে এখনো শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিরাপত্তা বাহিনী ও এর আন্তর্জাতিক অংশীদারদের হাতেই রয়েছে।

অবশ্য, আল–জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তালেবান নেতারা তাঁদের যোদ্ধাদের কোনো ধরনের সহিংসতা আজ না করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে যারা কাবুল ছাড়তে চায়, তাঁরা যেন নিরাপদে তা করতে পারেন, সে বিষয়েও নজর দিতে বলেছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন কূটনীতিকদের প্রথমে কাবুল থেকে ওয়াজির আকবর খান জেলায় বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে তাঁদের সহায়তা করেন দেশটিতে থাকা মার্কিন সেনারা।

মার্কিন পক্ষের জন্য এই পরিস্থিতি অনেকটা অভিনব বলা যায়। কারণ, মাত্র গত সপ্তাহেই মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছিল, কাবুলের নিয়ন্ত্রণ অন্তত তিন মাস সুরক্ষিত।

আফগানিস্তানে থাকা মার্কিনদের মূল দলটি বিমানবন্দরে থেকেই কাজ করছে বলে জানিয়েছেন এক মার্কিন কর্মকর্তা। এদিকে ন্যাটোর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর নাগরিকদের কাবুলেই একটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে কোথায়, তা তাঁদের নিরাপত্তার জন্যই প্রকাশ করেননি তিনি।

এদিকে এই পরিস্থিতিতে এখনো কোনো যুদ্ধের খবর পাওয়া যায়নি। এক তালেবান কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, তাঁরা কোনো সহিংসতা চান না। তবে তাঁরা অস্ত্রবিরতিও ঘোষণা করেননি।

বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে গতকাল শনিবার বিকেলে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি আলোচনা করছেন।

রোববার সকালের দিকেই তালেবান পক্ষ আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর জালালাবাদের দখল নেয়। এ জন্য তাদের কোনো যুদ্ধ করতে হয়নি। একই দিনে তারা পাকিস্তান সীমান্তের তোরখাম সীমান্ত পোস্টেরও দখল নেয়। ফলে গুরুত্বপূর্ণ সব সড়কের নিয়ন্ত্রণ এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। এতে কাবুল তথা, আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার একটি মাত্র পথ এখন বাকি। আর তা হলো আকাশ পথ। কারণ, এখনো বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ আফগান সরকারের হাতে।

জালালাবাদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আগে গতকাল শনিবার তালেবান নিয়ন্ত্রণে যায় উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাজার–ই–শরিফ। এটি অবশ্য বিনা প্রতিরোধে হয়নি। তবে জালালাবাদ একেবারে বিনা যুদ্ধেই দখলে নিয়েছে তালেবান।

এক আফগান কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘জালালাবাদে কোনো যুদ্ধ হচ্ছে না। কারণ, গভর্নর তালেবানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। বেসামরিক মানুষদের রক্ষায় এ ছাড়া আর কোনো পথ ছিল না।’

আরও খবর

Sponsered content

Powered by