দেশজুড়ে

কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা

  প্রতিনিধি ২৭ নভেম্বর ২০২৩ , ৭:১৩:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ

কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা

শরীয়তপুরে কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূর শরীরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে রাসেল পাহাড় (২৫) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত রাসেল পাহাড় একই এলাকার ইদ্রিস পাহাড়ের ছেলে।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে শরীয়তপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাগদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রোববার বিকেলে এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বোন থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

ভুক্তভোগী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগীর ওই গৃহবধূর স্বামী কাজের সুবাদে যশোরে থাকেন। দুই শিশু সন্তান নিয়ে মা ও ছোট বোনের সঙ্গে বাবার বাড়ি থাকতেন তিনি। তিনমাস ধরে রাসেল পাহাড় নামের ওই যুবক তাকে প্রতিনিয়ত উত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে গৃহবধূর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে রাসেল।

শনিবার রাতে ঘর থেকে বের হলে আগে থেকেই উৎ পেতে থাকা রাসেল ও তার আরেক সহযোগী গৃহবধূর মুখ চেপে ধরে পাশের একটি বাগানে নিয়ে হাত পা দড়ি দিয়ে বেঁধে কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। একপর্যায়ে দড়িটি আগুনে পুড়ে গেলে তিনি পাশে থাকা পুকুরে ঝাপ দেন। এসময় তার ডাক-চিৎকারে স্থানীয় ও স্বজনরা এসে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সোমবার দুপুরে সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের একটি শয্যায় মশারির মধ্যে শুয়ে আছেন তিনি। পাশে তার ছোট বোনকে বসে ছিলেন।

ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ অভিযোগ করে বলেন, ছেলেটি দীর্ঘদিন ধরে আমাকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। আমি রাজি না হওয়ায় আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে শরীর আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে জীবন বাঁচাতে আমি পুকুরে ঝাপ দেই। ওরা দুইজন ছিল, রাসেলকে আমি চিনতে পেরেছি। আমি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। যেন আর কারোর সঙ্গে এমন ঘটনা না ঘটে।

ভুক্তভোগীর বোন বলেন, ওরা প্রথমে আমার বোনের হাত পা বেধে রাখে। বোন চিৎকার করলে ব্লেড দিয়ে হাতে আর পেটে আঘাত করে। পরে শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে তারা যায়। আমরা এ ঘটনায় দোষীদের বিচার চাই।

ভুক্তভোগীর নানী বলেন, আমার নাতিনের বাবা বেঁচে নাই। ওর একটা ভাইও নাই। আমরা আইনের কাছে এ ঘটনার বিচার চাই।

এ বিষয়ে জেলা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. কাজী শাহ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, শনিবার রাতে মেয়েটিকে আগুনে পোড়া অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তার ডান পায়ের উরু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনে পুড়ে তার শরীরের ১০ শতাংশ পুড়ে গেছে। আমরা মেয়েটিকে চিকিৎসা দিচ্ছি। এখন তিনি আগের চাইতে অনেকটাই সুস্থ আছেন।

জেলা পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম বলেন, এ ঘটনায় রোববার রাতে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সুযোগ বুঝে মেয়েটির মুখ চেপে বাড়ির বাহিরে নিয়ে গিয়ে কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by