বাংলাদেশ

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে ‘কিছুটা ভালো’

  প্রতিনিধি ২৬ জুন ২০২৩ , ৭:১৫:০৯ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক :

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে ‘কিছুটা ভালো’ হলেও অসুস্থ হওয়ার ‘ঝুঁকিতে’ আছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ সোমবার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে দলের চেয়ারপারসনের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার কথা জানান তিনি। এর আগে গতকাল রোববার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের ভাড়াবাসা ‘ফিরোজা’য় সাক্ষাৎ করেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) এবার হাসপাতাল থেকে ফিরে আসার পরে একটু ভালো আছেন। উনার যে সমস্যাগুলো আগে ছিল, সেগুলো এখন আর নেই। শি ফিল বেটার (তিনি ভালো অনুভব করছেন) আরকি। কিন্তু উনার (খালেদা জিয়া) মূল সমস্যাগুলো সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা নাই।’

এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘কারণ উনার মূল সমস্যা লিভার সিরোসিস, আর্থাইটিস, হার্টের সমস্যা আছে – এগুলোর জন্যে বারবার ডাক্তার সাহেবরা বলেছেন, বাইরের বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসা করার প্রয়োজন আছে। সেটা তো হচ্ছে না। সে জন্য যেটা আমরা বলি উনার রিস্ক (ঝুঁকি) যেটা, সেটা থেকে যাচ্ছে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধনের পরে এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে, দল বা ব্যক্তিকেন্দ্রীক সংবিধান হয়ে গেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালের নির্বাচনে যেভাবেই হোক দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে এই অবস্থা করেছে। পঞ্চদশ সংশোধনীও বৈধ নয়, একই কারণে সরকারও বৈধ নয়।’

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ওনারা (আওয়ামী লীগ) বলেন, উনি (শেখ হাসিনা) ছাড়া কেউ নেই। এটা ফ্যাসিবাদী মনোভাব। আপনারা গণতন্ত্র চালু করেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিলে দেখা যাবে যথেষ্ট যোগ্য নেতৃত্ব আছে, যারা দেশ পরিচালনা করতে পারবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেহেতু আওয়ামী লীগ বাতিল করেছে, অতএব তাদেরকেই এটা সংবিধানে সংযোজন করে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা দেব।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির চলমান আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ঈদের পরে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে। এখনও সময় আছে, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক। দেশের সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে ঐক্যমতের ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। নির্বাচনের আগেই এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ তাছাড়া এই সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য কোনো নির্বাচন হবে না।’

এখন পর্যন্ত এই সরকারের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, রোববার রাত ১০টায় কুমিল্লার লাকসামে বিএনপি নেতা আবদুল কালামের বাড়িতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ৪০০-৫০০ নেতাকর্মী সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালিয়েছে। তার বাড়িঘর ভেঙে দিয়েছে, সমস্ত কিছু লুটপাট করেছে এবং সামনের সড়কও কেটে দিয়েছে। এ সময় ৮-৯ জন বিএনপি নেতাকে কুপিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এরা নাকি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করবে? তামাশা করার তো কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। মুখে বলছে সব ঠিক আছে, আর বিরোধীদলের নেতাদের বিশেষ করে বিগত দিনে যারা নির্বাচন করেছে বা ভবিষ্যতে করতে পারে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে, তুলে নিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। যারা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছেন, তাদের চাকরি পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বাধ্য করছে চাকরি ছেড়ে দিতে। কীভাবে আশা করেন এখানে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে? ৪০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা।

তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল নেতা দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর ধরে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটকে রেখেছে। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছে। এই অবস্থায় দেশে নির্বাচন হবে; তা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।’

আরও খবর

Sponsered content

Powered by