দেশজুড়ে

খুলনার বিনোদন কেন্দ্রের ফটকে তালা, মানুষ ছুটছে রূপসা ও ভৈরব পাড়ে

  প্রতিনিধি ৪ আগস্ট ২০২০ , ৮:১১:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

খুলনা ব্যুরো : করোনা ভাইরোসের প্রভাবে খুলনার সব বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। ফটকে ঝুলছে তালা। দর্শনার্থীরা কেউ কেউ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে আসলেও বন্ধের নোটিশ দেখে ফিরে যাচ্ছেন। চোখে না দেখা এক ভাইরাস পাল্টে দিয়েছে জীবনযাত্রা, মানুষকে করে রেখেছে প্রায় গৃহবন্দি। করোনার কারণে ঈদে সব অন্যরকম। এই মহামারি কালের উৎসবে বেড়াতে যাওয়াও বারণ। তারপরও শিশুদের আবদার রাখতে অনেক অভিভাবক ছুটে যাচ্ছেন রূপসা ও ভৈরব পাড়ে। প্রত্যেক বছর ঈদের সময় আনন্দ নিয়ে মানুষে মুখরিত হয়ে ওঠতো খুলনার বিনোদন কেন্দ্রগুলো।
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা শহরে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে থাকতো উপচে পড়া ভিড়। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। অনেকে আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরতে যাচ্ছেন নদীর পাড়ে। সোমবার ঈদের তৃতীয় দিনের গরমে শান্তির পরশ পেতে ভৈরব নদের তীরে সাত নং ঘাটে স্থানীয়রা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে ঘুরতে আসছে অনেকে। একইসঙ্গে রূপসা সেতু এলাকা ও জেলখানা ঘাটের। বিশেষ করে পড়ন্ত বিকেলে বিশুদ্ধ বাতাস আর নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন অনেকে। নদীর পাড়ে বসে আড্ডা, প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ, নদীর বুকে নৌকায় বেড়ানোর সুযোগ তো আছেই। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত জমজমাট রয়েছে নদীর তীর। যদিও অভিযোগ রয়েছে পুলিশ এসব এলাকায় ভিড় করতে দিচ্ছেন না। তার পরও মানুষ ছুটছেন নদীর তীরে। সাত নং ঘাট এলাকায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে একটু নির্মল বাতাসে ঘুরতে এসেছি। কিন্তু সেখানেও বাধ সেধেছে পুলিশ। ভিড় করতে দিচ্ছে না। পার্কগুলো বন্ধ। মানুষ যাবে কই? রূপসা সেতু সংলগ্ন নগরীর মোক্তার হোসেন সড়কের বাসিন্দা নজরুল বলেন, রূপসা সেতুর সিড়িতে তারকাটা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। যাতে উপরে কেউ না যেতে পারেন। তারপরও হাজারও মানুষ সেতু দেখতে এসে ভীড় করছেন রূপসার তীরে। কেউ কেউ নৌকা ও ট্রলার ভাড়া করে ঘুরছেন। তিনি জানান, আবার কেউ কেউ নদীর পাড় দিয়ে হেঁটে মাথাভাঙ্গা এলাকার দিকে গিয়ে অপরূপ সৌন্দর্য দেখছেন। জাতিসংঘ শিশু পার্ক পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল­া বলেন, ঈদের এ ছুটিতে প্রতিদিন অভিভাবকরা বাচ্চাদের আবদার রাখতে পার্কের সামনে নিয়ে আসেন। পার্ক বন্ধ দেখে বাচ্চারা মলিন মুখে ফিরে যায়। খুলনা মহানগরীর ওয়ান্ডারল্যান্ড আধুনিক শিশু পার্কের জেনারেল ম্যানেজার মো. গোলাম মোস্তফা কামাল বলেন, ২০ মার্চ হতে শিশু পার্কটি বন্ধ রয়েছে। আমরা চাই, পার্কগুলো খুলে দেওয়া হোক। তিনি জানান, এ দাবি নিয়ে স¤প্রতি সময়ে দুইবার সিটি মেয়রের কাছে স্বারকলিপি দেওয়া হয়েছে। খুলনা বটিয়াঘাটার রানা রিসোর্ট অ্যান্ড এমিউজমেন্ট পার্কের (ওয়ান্ডারফুল কিংডম) প্রধান ব্যবস্থাপক ( প্রশাসন) রনজিৎ রায় বলেন, করোনা সতর্কতায় গত ২০ মার্চ থেকে খুলনার পার্কসহ সকল বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে আমাদের পার্কটিও বন্ধ রয়েছে। প্রতিদিন মানুষ খোঁজ নিচ্ছে, কবে পার্ক খোলা হবে। দীর্ঘ চার মাস বন্ধ থাকায় অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে দীর্ঘ ৪ মাস বন্ধ ছিল কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। অবশেষে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করায় পুরনো রূপে ফিরতে শুরু করেছে বিশ্বের দীর্ঘতম এই সমুদ্র সৈকত। ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার সৈকতে বেড়েছে পর্যটকসহ স্থানীয় দর্শনার্থীদের ভিড়। কক্সবাজারের মতো খুলনার বিনোদন কেন্দ্রগুলোর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে খুলে দেওয়ার দাবি জানান পার্ক সংশ্লিষ্টরা।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by