চট্টগ্রাম

গতবছরের তুলনায় কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ

  প্রতিনিধি ২৪ এপ্রিল ২০২৪ , ৬:১২:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

গতবছরের তুলনায় কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পেয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ

চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে গতবছরের তুলনায় কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ৮ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল। বুধবার (২৪ এপ্রিল) ১৩৭তম বন্দর দিবস উপলক্ষ্যে শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সী অডিটরিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান তিনি।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রথম ৯ মাসে ৪ হাজার ৩৫৫ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এবার ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হবে।

‘চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে জেনারেল কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ৯ কোটি ১৬ লাখ ৪৯ হাজার টন। এ সময় জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ হাজার ১টি। বিগত বছরে ৪৩ হাজার বর্গমিটার কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে ২০ ফুটের ৭ হাজার কনটেইনার রাখার সুযোগ হয়েছে। ৪ হাজার ২৭৫ বর্গমিটারের কেমিক্যাল শেড নির্মাণ করা হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা রক্ষায় উভয় পাড়ে ২ হাজার ৮৫০ মিটার রিভেটমেন্ট কাজ সম্পন্ন হয়েছে’।

কোভিড অতিমারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা বিশ্ব অর্থনীতির প্রত্যাশিত গতি মন্থর করলেও চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে তেমন প্রভাব ফেলেনি। সর্বোচ্চ ২ দিনে জাহাজ লোড আনলোড শেষ করে পরবর্তী গন্তব্যে ছেড়ে দিচ্ছি। আমাদের কোন ইক্যুইপমেন্ট স্বল্পতা নেই। গত এক বছরে আমরা ৫ টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রিক্রেন, ৬টি ফোর হাই স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, ৬টি টু হাই স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, ৪টি লোডেড রীচ স্টেকার, ২টি ৩০টন মোবাইল ক্রেন, ৪টি ২০টন ফর্কলিফট ট্রাক ও ৪টি ভেরিয়েবল রীচ ট্রাকসহ সর্বমোট ৩২টি ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ করছি।

তিনি বলেন, আমরা বে টার্মিনালের ভূমি পেয়ে গেছি। মাস্টারপ্ল্যান হয়ে গেছে। ১২-১৪ মিটার ড্রাফটের চ্যানেল। সব নকশা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। চারটি টার্মিনাল করা হবে। ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে দুইটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনা করবে বিদেশি বন্দর প্রতিষ্ঠান। একটি লিকুইড বাল্ক টার্মিনাল করবে দেশি প্রতিষ্ঠান। সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে। বন্দরের মাল্টিপারপাস টার্মিনালে ১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে বিদেশিরা। বে টার্মিনালের পুরোটাই হবে বিদেশি বিনিয়োগে।

সত্যিকার বন্দর নগরের রূপ দেখা যাবে ৪-৫ বছর পর। তখন চট্টগ্রাম বন্দর হবে হাব পোর্ট। তিনি আরও বলেন, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর তিন-চার বছরের মধ্যে নিজস্ব টার্মিনালে অপারেশন শুরু করবে। সাপোর্ট ভ্যাসেল সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যাতে টার্মিনাল একদিনও বন্ধ না থাকে।

মাতারবাড়ীতে দ্বিতীয় ধাপে ৭০০ একর জমি অধিগ্রহণের জরিপ কাজ চলছে। এছাড়াও আমরা পিসিটিতে বিদেশি অপারেটর নিয়োগ দিতে সক্ষম হয়েছি। এতে বন্দর তথা রাষ্ট্র উপকৃত হবে। বৈদেশিক আয় বাড়বে। শতভাগ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এক দেড় বছরের মধ্যে সব ইকুইপমেন্ট চলে আসবে।

গতানুগতিক সিস্টেম থেকে বেরিয়ে ল্যান্ডলর্ড সিস্টেমে বন্দর পরিচালনা শুরু করেছি।উল্লেখ্য, তৎকালীন ব্রিটিশ-ইন্ডিয়া সরকার ১৮৮৭ সালে পোর্ট কমিশনার্স অ্যাক্ট প্রণয়ন করে যা ২৫ এপ্রিল ১৮৮৮ সালে কার্যকর হয়। তখন থেকেই চট্টগ্রাম বন্দরের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।

তাই প্রতিবছর ২৫ এপ্রিল বন্দর দিবস পালন করা হয়। মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য সহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Powered by