বাংলাদেশ

চট্টগ্রাম চেম্বার, বিনাভোটে নির্বাচিত সব মেম্বার

  প্রতিনিধি ৯ আগস্ট ২০২৩ , ৭:৪৬:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রাম চেম্বার, বিনাভোটে নির্বাচিত সব মেম্বার

চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজে বার বার বিনাভোটে পরিচালনা পর্ষদ গঠন হওয়ায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরী হয়েছে। অনেকটা সরকারের ওপর মহলের ইঙ্গিতে বা তদবিরে এখানে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সাহস করছেন না। ফলে নিজেদের যোগ্য নেতা নির্বাচনে থেকে যাচ্ছে অপূর্ণতা।

অনেক ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম চেম্বারকে সরকারী দলের অঙ্গ সংগঠন বলেও বিদ্রুপ করেন। সব সরকারের আমলেই কমবেশী নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিতে নেতারা যথাযথ ভূমিকা রাখতে অক্ষম। সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে সভাপতিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে নিজেদের স্বার্থের পরিপন্থী হলেও সরকারি কোনো সিন্ধান্তের জোরালো প্রতিবাদ করতে পারে না চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের এ সংগঠন। ফলে নিজেদের অপছন্দনীয় বা ক্ষতিকর সিন্ধান্তও মেনে নিতে হয় অবনত মস্তকে।


এবারও ভোটাভুটি ছাড়াই সংগঠনটির ২৪ জন পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে টানা ষষ্ঠবারের মতো শতবর্ষী এই ব্যবসায়ী সংগঠনের নির্বাচনে কোনো ভোট হয়নি। আগের বছরগুলোতে পদের চেয়ে বেশিসংখ্যক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলেও প্রত্যাহারের শেষ দিনে নির্দিষ্ট ব্যক্তিরা ছাড়া অন্যরা সরে যান। এবার অবশ্য বেশি মনোনয়নপত্র জমা পড়েনি। তাই ভোটেরও দরকার পড়েনি।

ভোট না হওয়ায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভোট প্রার্থনা কিংবা ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় অঙ্গীকারের প্রতিযোগিতাও আর হচ্ছে না। এভাবে চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রায় সাড়ে সাত হাজার ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। দেখাতে পারেনি। নতুন চেম্বারটির নির্বাচন ও সদস্য নেওয়ার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের হতাশা আরও বেশি। বড় ব্যবসায়ীরা এই চেম্বারের নেতৃত্বে থাকলেও চট্টগ্রাম চেম্বারের কার্যক্রমের ধারেকাছেও যেতে পারেনি নতুন সংগঠনটি।

সম্প্রতি বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় ২০২৩-২৫ মেয়াদে নব নির্বাচিত সভাপতি হয়েছেন ওমর হাজ্জাজ। তিনি চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ এর সন্তান। তিনি এর আগে ২০১৯-২১ মেয়াদে চিটাগাং চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়েছিলেন হাজ্জাজ। সহ- সভাপতি হয়েছেন রাইসা মাহবুব। যিনি গত পাঁচবারের চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি ও বর্তমান এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের মেয়ে। সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়েছেন সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মোঃ রুহুল আমিন।


বিনাভোটে নির্বাচিত অন্যান্য পরিচালকরা হলেন প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, সিলভার সিন্ডিকেটের স্বত্বাধিকারী এ. কে. এম. আক্তার হোসেন, এ. এস. শিপিং লাইন্সের স্বত্বাধিকারী অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), জে.এন. শিপিং লাইন্সের স্বত্বাধিকারী জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), আর.এস.বি. ইন্ডাস্ট্রিয়াল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, নাহার পোল্ট্রি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রকিবুর রহমান (টুটুল), হোসেন ফিশারিজের স্বত্বাধিকারী মাহফুজুল হক শাহ, গোল্ডেন কনটেইনার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেনাজির চৌধুরী (নিশান), আর.এম. এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আলমগীর পারভেজ, পাওয়ারবাংলা কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী নাজমুল করিম চৌধুরী শারুন, সিপিডিএল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার ইফতেখার হোসেন, ফোর এইচ এপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাওহার সিরাজ জামিল, মডার্ন হ্যাচারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সুফিয়ান চৌধুরী, চয়েস মোটরসের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুল হক, পিএইচপি মোটরস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আক্তার পারভেজ, আজাদ সিন্ডিকেটের স্বত্বাধিকারী মো. রেজাউল করিম আজাদ, এফ.এ. ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আদনানুল ইসলাম, এম. এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন, সেরি মেচান ট্রাভেলের স্বত্বাধিকারী আখতার উদ্দিন মাহমুদ, অর্কিড ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ সাজ্জাদ উন নেওয়াজ, স্পেকট্রাম সলিউশন্স এর স্বত্বাধিকারী ওমর মুক্তাদির।


আগামী ৫ সেপ্টেম্বর চিটাগাং চেম্বারের ২৪ জন পরিচলাক পদে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এজন্য গত ১৫ জুন চট্টগ্রাম চেম্বারের নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করা হয়। গত ৬ আগস্ট ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। কিন্তু ২৪টি পরিচালক পদের বিপরীতে ২৪ জনই প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ায় প্রতিদ্বন্ধসঢ়;দ্বীবিহীন বিনা ভোটে ওই ২৪ জনই পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by