আইন-আদালত

চিত্রনায়ক সোহেল হত্যা: আশিষ রায়ের জামিন নামঞ্জুর

  প্রতিনিধি ১৭ এপ্রিল ২০২২ , ৭:১৬:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্কঃ

নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ রবিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেনের আদালতে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

অন্যদিকে আজ মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন মামলাটির সাক্ষ্য হয়নি। আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৫ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।

গত সোমবার (১১ এপ্রিল) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেন কারা কর্তৃপক্ষকে তাকে আদালতে হাজির করানোর জন্য নির্দেশ দেন।

গত ৫ এপ্রিল রাতে রাজধানীর গুলশান থেকে আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তার বাসা থেকে ২২ বোতল বিদেশি মদ, ১৪ বোতল সোডা ওয়াটার, একটি আইপ্যাড, ১৬টি বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, দুটি আইফোন ও নগদ দুই লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৬ এপ্রিল রাতে আশিষ রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন র‍্যাব-১০ এর ডিএডি জাহাঙ্গীর আলম।

পরে ৭ এপ্রিল তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মাদকদ্রব্য আইনে করা মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক শামীম হোসেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোস্তফা রেজা নুর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীতে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় মামলা করেন। সোহেল চৌধুরী নিহত হওয়ার পরপরই এই হত্যাকাণ্ডে চলচ্চিত্র প্রযোজক ও ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সাথে সোহেল চৌধুরীর কথা-কাটাকাটি হয়। এর প্রতিশোধ নিতে সোহেল চৌধুরীকে হত্যা করা হয়। ঘটনার রাতে সোহেল তার বন্ধুদের নিয়ে ট্রাম্পস ক্লাবে ঢোকার চেষ্টা করেন। তাকে ভেতরে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। রাত আড়াইটার দিকে আবারো তিনি ঢোকার চেষ্টা করেন। তখন সোহেলকে লক্ষ্য করে ইমন, মামুন, লিটন, ফারুক ও আদনান গুলি চালান। আসামিদের মধ্যে আদনান খুনের পরপরই ধরা পড়েছিলেন।

মামলাটি তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী নয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

ওই বছরই আসামিদের মধ্যে একজন হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত ছিল। সর্বশেষ গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে ফের মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- আদনান সিদ্দিকী, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। এদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন পলাতক।

১৯৮৪ সালে এফডিসির নতুন মুখের সন্ধানে নামের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন সোহেল চৌধুরী। ওই একই প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন তার স্ত্রী দিতিও।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by