দেশজুড়ে

বয়স আশি, পেটের দায়ে রিকশা নিয়ে বের হতে হয়

  প্রতিনিধি ৪ মে ২০২৪ , ৭:৩১:১০ প্রিন্ট সংস্করণ

বয়স আশি, পেটের দায়ে রিকশা নিয়ে বের হতে হয়

কানাই মাতব্বর। বয়স আশি বছর। বয়সের ভারে ঠিকমতো চলাফেরা করতে না পারলেও চালাতে হয় রিকশা। পায়ে চালিত রিকশা চালিয়ে জোগাড় করতে হয় নিজের ও তার স্ত্রীর খাবার। প্রায় ৬০ বছর ধরে রিকশা চালাচ্ছেন তিনি। ছেলে-মেয়েদের বড় করেছেন। এই বৃদ্ধ বয়সে এসেও রিকশা চালিয়েই আজও জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে। 

জানা যায়, সদর উপজেলার সৈয়দারবালী এলাকার মৃত সদ্দের মাতব্বরের ছেলে কানাই মাতব্বর (৮০)। যুবক বয়স থেকেই রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। বৃদ্ধ বয়সে এসেও এখন পর্যন্ত রিকশা চালিয়েই খাবার জোগাড় করতে হচ্ছে তাকে। তিন ছেলে শাহাদাত মাতব্বর, শামীম মাতব্বর ও সাকিব মাতুব্বর দিনমজুরির কাজ করেন। ছেলেরা বিয়ে করে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে আলাদা থাকেন। একমাত্র মেয়ে পলিও স্বামীর সংসারে থাকেন। তাই কানাই মাতব্বর স্ত্রী শাহনুর বিবিকে নিয়ে থাকেন। রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতে হয়। দিনে ১০০, ১৫০ বা ২০০ টাকার মতো রোজগার হয়। তা দিয়েই কোনোভাবে বেঁচে আছেন তারা। 

কানাই মাতব্বর বলেন, আমার ছেলেরা সবাই বিয়ে করে আলাদা থাকে। তারাও দিন মজুরির কাজ করে। যা টাকা পায়, তা দিয়ে ওদের সংসারই চলে না, সেখানে আমাদের কিভাবে খাওয়াবে। তাই আমি রিকশা চালাই। এই গরমের মধ্যে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়। অসুস্থ হয়ে পড়ি। কি করব। পেটে তো খাবার দিতে হবে। তাই বৃদ্ধ বয়সেও রিকশা চালাতে হচ্ছে। টাকার অভাবে রিকশাটি মেরামতও করতে পারি না। রিকশার অবস্থা খারাপ। বর্ষার সময় পানি পরে। এমনিতেই পায়ে চালিত রিকশায় কেউ উঠতে চায় না- সেখানে আমার বয়স দেখে ও রিকশা খারাপ দেখে অনেকেই উঠে না। তবুও পেটের দায়ে রিকশা নিয়ে বের হতে হয়। 

শনিবার শহরের শকুনি এলাকার ওই রিকশার যাত্রী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পায়ে চালিত রিকশায় কেউ উঠতে চায় না। তারপর ওনার আবার বয়স হয়েছে। আসলে তাকে দেখলে অনেক মায়া লাগে। 

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, যারা পায়ে রিকশা চালায় তাদের জন্য সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ নেই। সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ এলে সেখান থেকে তাকে সহযোগিতা করা হবে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by