রংপুর

দশ বছর ধরে দুর্ভোগ: লালমনিরহাটে স্বেচ্ছাশ্রমে ৯০ফুট সাঁকো নির্মাণ

  প্রতিনিধি ৩০ মে ২০২১ , ৬:১৪:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি :

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কবি শেখ ফজলুল করিমের স্মৃতি বিজড়িত কাকিনা ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তিস্তা শাখা নদীর উপর স্বেচ্ছাশ্রমে ৯০ ফুট সাঁকো নির্মাণ করছেন এলাকাবাসী। গত কয়েকদিন ধরে মাটি কেটে, কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সাঁকোটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করছেন তারা।

জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর পূর্বে বন্যার পানির তোড়ে কাকিনা ইউনিয়নের মহিষামুড়ী এলাকায় সেতুটি ভেঙে যায়। তখন থেকে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি নির্মাণের কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। প্রতিবছর এলাকাবাসী ভেঙে যাওয়া সেতুর ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে দুই ইউনিয়নের ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পারাপার হয়ে আসছেন। তবে এবছর গ্রামবাসী বৃহৎ পরিকল্পনা হাতে নেয়।

 

তারা গ্রামের লোকজন, স্থানীয় ব্যবসায়ী, এলাকার জেলে ও কৃষকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে এবার বাঁশের সাথে কাঠ দিয়ে কিছুটা মজবুত করে ৯০ ফুট সাঁকো নির্মাণ করেন। এছাড়া তারা মাটি কেটে সাঁকোর দুই পাশের রাস্তাও উঁচু করেন। তাইতো এরই মধ্যে সাঁকোটি নির্মাণ কাজও সম্পন্নের পথে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বছরের পর বছর দুর্ভোগ লাঘবে স্বপ্ন দেখিয়ে ভোটের বাক্স ভরেছেন জনপ্রতিনিধিরা। কিন্তু কেউ কথা রাখেননি।

অবশেষে এলাকাবাসী নিজেরাই অর্থ ও স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে ৯০ ফুট দীর্ঘ এ সাঁকো নির্মাণ কাজ সম্পন্নের অবিরাম চেষ্টা করছেন।
ওই এলাকার ছকের আলী (৬০) জানান, গ্রামের লোকজনের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে স্বেচ্ছাশ্রমে এ সাঁকোটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগে থাকা ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের দুর্ভোগ সাময়িকভাবে লাঘব হবে। তবে স্থায়ীভাবে এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান গ্রামবাসী।

উপজেলা প্রকৌশলী আবু তাহের শামসুজ্জামান বলেন, ওই সাঁকোটি অনেক পূর্বেই নির্মাণ হয়ে যেত। কিন্তু লকডাউনের কারণে তা হয়নি। লকডাউন শীতিল হলেই ঠিকাদার নিয়োগ হবে এবং সেখানে দ্রুত সেতু নির্মাণ হবে।

শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পাড় হলেও বর্ষা মৌসুমে পরতে হয় বিড়ম্বনায়। সেসময় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে তুলতে পারেন না। বর্ষা এলেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে। ছাত্রছাত্রীরা যেতে পারে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। তাই কষ্ট লাঘবে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

 

 

 

 

Powered by