দেশজুড়ে

ধৈর্যের সাথে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বান্দরবানবাসীকে ধন্যবাদ দিলেন জেলা প্রশাসক

  প্রতিনিধি ১২ আগস্ট ২০২৩ , ৪:২৯:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

ধৈর্যের সাথে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বান্দরবানবাসীকে ধন্যবাদ দিলেন জেলা প্রশাসক

বান্দরবানে টানা একসপ্তাহের বৃষ্টিপাতের কারনে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি ধৈর্যের সাথে মোকাবেলা করার জন্য বান্দরবানবাসীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন।

শুক্রবার ১১ই আগস্ট বিকেলে জেলা প্রশাসকের নিজ অফিস কক্ষে সাংবাদিকদের কাছে জেলায় সার্বিক বন্যা ও বন্যা পরবর্তী গৃহীত কার্যক্রম সম্পর্কে আলাপ কালে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন বান্দরবান সদর উপজেলায় বসবাসকারী সকল বন্যাকবলিত জনসাধারণ খুবই ধৈর্যের সাথে পরিস্থিতি সামাল দিতে পেরেছে,প্রতিবেশি থেকে শুরু করে সকলেই একে অপরকে বন্যা ও পরবর্তী উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করেছে।

এছাড়াও জেলা প্রশাসন,সেনাবাহিনী, পুলিশ প্রশাসন,ফায়ার সার্ভিস অফিস, পৌরসভা, বন্যায় আক্রান্তদের সার্বিক ভাবে মানবিক সহযোগিতা দিয়ে গেছে। 

এসময় তিনি বলেন বর্তমানে জেলা সদরে প্রায় সব জায়গা হতে বন্যার পানি নেমে গেছে,প্রায় সকলেই নিজ নিজ গৃহে ফিরে গেছে, আশ্রয়কেন্দ্রে এখন মাত্র ৩৪০ জনের মতো বন্যায় আক্রান্ত জনসাধারণ অবস্থান করছে।

এসময় তিনি জনান ৭ দিনের প্রবল বৃষ্টিপাতের কারনে সৃষ্ট বন্যায় জেলায় ১৫৮০০টি পরিবারের ৬৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলো।বন্যায় জেলায় প্রায় ৬০০টির মতো ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, বন্যায় প্রায় ৮২৫৩ হেক্টর ফসলি জমির ক্ষতি হয়েছে।

তিনি জানান এ পর্যন্ত জেলায় বন্যায় ও পাহাড় ধসে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছেনিহতরা হলেন, বান্দরবান পৌরসভা ৩নম্বর ওয়ার্ড কালাঘাটা এলাকার বাশি শীলের স্ত্রী সন্ধ্যা রানী শীল(৫২) ও কন্যা বুলু শীল (২২), বান্দরবান সদর ইউনিয়নের দাঁতভাঙা পাড়ার ছায়ারাণী তঞ্চঙ্গ্যা (৩৮), টংকাবতী ইউনিয়নের তরচ্যং ম্রো (৩২) ও মোঃ ইউনুস(৪৭), নাইক্ষ্যংছড়ি সোনাইছড়ি ইউনিয়নের পংচা মারমা(৬৫),লামা রূপসী পাড়া ইউনিয়নের মংবাসিং মার্মা (২৮) ও ফাসিয়াখালী এলাকার করিমা আক্তার(৩৬), আলীকদম উপজেলায় মোঃ মুছা(২২) ও আব্দুল আমিন(১৮) নামে দুই রোহিঙ্গার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে পংচা মার্মা ও মংবাসিং মার্মা বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে।

তিনি জানান বন্যায় জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যার পরিমান নিরুপনে এখনো কাজ চলছে।

এরই মধ্যে জেলা বন্যা কবলিত এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে ২ লক্ষ ৬০ হাজার লিটার বিশুদ্ধ খাবার পানি বিতরণ করা হয়েছে, এবং প্রধানমন্ত্রীর উপহার ত্রান ১৬৮ মেঃটন চাল ও ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বন্যাদুর্গতদের জন্য,বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ হতে উপজেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রান সহায়তা প্রদানের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৪ লক্ষ টাকা, এছাড়া সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে ৫৩,৮০০ লিঃ বিশুদ্ধ খাবার পানি বিতরণ করা হয়েছে,এছাড়াও বন্যার্তদের মাঝে সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে শুকনো খাবার বিতরণ ও জেলা সদর সহ প্রতিটি উপজেলায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ঔষধ সরবরাহ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন জেলায় পাহাড় অধ্যুষিত এলাকায় এখনো মানুষ ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাস করছে,জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে তাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে বন্যা পরবর্তী জানমালের ক্ষতি অনেকটা লাঘব হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোঃ ফজলুর রহমান,নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব কুমার বিশ্বাস,বান্দরবান প্রেসক্লাবের সেক্রেটারি মিনারুল হক সহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by