আন্তর্জাতিক

নাগোরনো-কারাবাখে আজারবাইজানের সামরিক অভিযান

  প্রতিনিধি ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৮:১৪:৫৩ প্রিন্ট সংস্করণ

নাগোরনো-কারাবাখে আজারবাইজানের সামরিক অভিযান

ককেশাস অঞ্চলের দেশ আজারবাইজান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ অভিযান শুরু করেছে আজারি সৈন্যরা। আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন ওই অঞ্চলে মঙ্গলবার আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে বলে খবর দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আজারবাইজানের ভূখণ্ড হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত জাতিগত আর্মেনীয় ছিটমহল নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে কয়েক মাস ধরে দুই দেশের মাঝে উত্তেজনা চলছে। সম্প্রতি বিতর্কিত ওই ভূখণ্ডে মাইন বিস্ফোরণ ও অন্য এক ঘটনায় আজারবাইজানের ১১ পুলিশ সদস্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার কারাবাখের প্রধান শহরে বিমান হামলার সাইরেন বাজানোর তথ্য পাওয়া গেছে।

বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান কয়েক দশক ধরে বিবাদে লিপ্ত রয়েছে। নাগোরনো-কারাবাখ আজারবাইজানের ভূখণ্ডের ভেতরে অবস্থিত হলেও ১৯৯৪ সালের এক যুদ্ধের পর থেকে আর্মেনিয়ার সমর্থনে জাতিগত আর্মেনীয় বাহিনী ওই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।

ইতিমধ্যে নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে দুই প্রতিবেশী আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়া অন্তত দুবার যুদ্ধে জড়িয়েছে। ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর প্রথমবার যুদ্ধে জড়ায় দেশ দুটি।

সাবেক সোভিয়েত এ দুই রাষ্ট্র বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে ২০২০ সালে ফের প্রাণঘাতী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। দুই দেশের সৈন্যদের হামলা-পাল্টা হামলায় সেই যুদ্ধে উভয়পক্ষের সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

যুদ্ধের পর আর্মেনিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া নাগোরনো-কারাবাখে কয়েক হাজার শান্তিরক্ষী মোতায়েন করে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সেখান থেকে শান্তিরক্ষীদের পরে প্রত্যাহার করে নেয় মস্কো।

গত বছরের ডিসেম্বর থেকে লাচিন করিডোর নামে পরিচিত নাগোরনো-কারাবাখ ছিটমহলে প্রবেশের একমাত্র পথ অবরোধ করে রেখেছে আজারবাইজান। মঙ্গলবার বাকুতে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আর্মেনিয়ার বাহিনীর বিরুদ্ধে আজারি সৈন্যদের অবস্থান লক্ষ্য করে ‘পরিকল্পিত গোলাবর্ষণের’ অভিযোগ করেছে।

মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থানীয়, সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে… আমাদের ভূখণ্ড থেকে আর্মেনিয়ার সশস্ত্র বাহিনীকে নিরস্ত্রকরণ ও নিরাপদ প্রত্যাহারের জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

অভিযানে বেসামরিক নাগরিক বা বেসামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে না জানিয়ে আজারবাইজানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, এর পরিবর্তে কেবল উচ্চ-নির্ভুল নিশানার অস্ত্র ব্যবহার করে বৈধ সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো হচ্ছে।

মঙ্গলবার কারাবাখের রাজধানী খানকেন্দিতে কামান গোলা নিক্ষেপ ও বন্দুকের গুলির শব্দ শোনা গেছে। কারাবাখের এই রাজধানী আর্মেনীয়দের কাছে স্টেপানাকার্ট নামে পরিচিত।

আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, আর্মেনিয়ার বিরুদ্ধে আনা গোলাবর্ষণের অভিযোগের সাথে বাস্তবতার মিল নাই। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা পর্যন্ত আর্মেনিয়ার সীমান্ত পরিস্থিতি ‘তুলনামূলক স্থিতিশীল’ রয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির এই মন্ত্রণালয়।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by