রংপুর

নীলফামারীতে ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ

  প্রতিনিধি ১৬ জানুয়ারি ২০২২ , ৯:৩৪:২৪ প্রিন্ট সংস্করণ

নীলফামারী প্রতিনিধি : নীলফামারীতে বোরো চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। জমিতে সেচ প্রদান, হালচাষ, সার প্রয়োগ ও বীজ উত্তোলনসহ জমিতে চারা রোপণ চলছে। কৃষি বিভাগ ছাড়াও তিস্তা সেচ প্রকল্পের পানিতে তিন জেলার ১২ উপজেলায় পুরোদমে চলছে বোরো রোপণ। রংপুর পৌর সার্কেল-২ এর তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মো. মাহবুবর রহমান জানান. নীলফামারী সদর, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সৈয়দপুর, রংপুর সদর, বদরগঞ্জ, তারাগঞ্জ, গঙ্গাচড়া, পার্বতীপুর ও খানসামাও চিরির বন্দরে বোরো রোপণ করা হচ্ছে। দেশের বৃহত্তম তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতায় ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর মধ্যে নীলফামারীতে ৩১ হাজার হেক্টর, রংপুরে ১৫ হাজার হেক্টর ও দিনাজপুরে সাত হাজার হেক্টর। সরেজমিন দেখা গেছে, বোরো ধান চাষে জমি তৈরি করছেন কৃষকরা। কেউ আবার চারা রোপণ করছেন। অনেকে জমিতে হাল চাষ দিচ্ছেন। জমির আইলের আগাছা পরিষ্কারসহ জৈব সার প্রয়োগ করছেন। আবার অনেকেই জমিতে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ তিন হাজার ৫৫০ হেক্টর। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার লাখ ৯৬ হাজার ৫১৫ হেক্টর। এবার সাত হাজার ৩৫ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ করছেন কৃষকরা।
এর মধ্যে নীলফামারীতে ৮১ হাজার ৫৫০ হেক্টর, রংপুরে এক লাখ ৩০ হাজার ৯৫০ হেক্টর, গাইবান্ধায় এক লাখ ২৭ হাজার ৮৪৫ হেক্টর, কুড়িগ্রামে এক লাখ ১৫ হাজার ৫৫৫ হেক্টর ও লালমনিরহাটে ৪৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর। এতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ লাখ সাত হাজার ১৩২ মেট্রিক টন।

তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. রাফিউল বারী জানান, ২০১৪ সালে ব্যারেজের সেচ প্রকল্পের আওতায় ৮৩ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে নামে পওর বিভাগ। কিন্ত পানি স্বল্পতার কারণে ওই তিন জেলার ১২ উপজেলায় সেচ দেওয়া হয় মাত্র ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। একইভাবে ২০১৫-১৬ সালে তিস্তা সেচ কমান্ড এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয় ১০ হাজার হেক্টর। ২০১৭ সালে তা আরও কমে মাত্র আট হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া হয়।

অপরদিকে, ২০১৮ সালে ওই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বোরো মৌসুমে সেচ দেওয়া হয় ৩৫ হাজার হেক্টর এবং ২০১৯-২০ সালে ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান করছে।

জেলা সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া চৌধুরী বাজার ও ক্যানেল তীরবর্তী বাসিন্দা কৃষক রশিদুল ইসলাম জানান, এবারও সাড়ে তিন বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। ক্যানেলের পানি দিয়ে প্রতি বছর বোরোর আবাদ করেন। শ্যালো মেশিন ও বিদ্যুৎচালিত সেচ পাম্পে খরচ অনেক বেশি। আর ক্যানেলের পানি বিঘাপ্রতি আড়াই থেকে ৩০০ টাকা দিলে ধান ঘরে তোলা যায়। এতে বিঘাপ্রতি বেঁচে যায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা।

একই গ্রামের কৃষক মোখলেছুর রহমান বলেন, বাজারে ধানের দাম এখন অনেক। গত বছর বোরো ও আমন ধানের দাম পাওয়ায় এবারও কৃষক আবাদে ঝুঁকে পড়েছে। তবে শ্যালোর সেচের খরচ বেশী হওয়ায় কৃষক হিমশিম খাচ্ছে। কৃষিতে উৎপাদন খরচ দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা বেকায়দায় পড়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বার্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ-দৌলা বলেন, এবার তিন জেলার ১২ উপজেলায় ৫৩ হাজার হেক্টর জমিত সেচ প্রদান করা হচ্ছে। তিস্তার উজানের পানি প্রবাহ ২০ হাজার কিউসেক থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে সেচ দেওয়া যাবে। তবে সেচ প্রকল্প স্বাভাবিক রাখতে কমপক্ষে ১৪ হাজার কিউসেক পানি দরকার।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by