রংপুর

ফুলবাড়ী ঈদ বাজারে শেষ মুহূর্তে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

  প্রতিনিধি ৭ এপ্রিল ২০২৪ , ৭:৪৭:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ

ফুলবাড়ী ঈদ বাজারে শেষ মুহূর্তে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়

আর মাত্র দুই তিনদিন পরেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে জমে উঠছে ঈদ বাজার। উপজেলার মার্কেট ও শপিংমলগুলোতে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বেচা-কেনা। দিনে একটু ফাঁকা থাকলেও ইফতারের পর থেকে বাড়ছে মানুষের আনাগোনা।

ফুলবাড়ী রাজ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই কেনাকাটা জমে উঠছে। এখন ক্রেতাদের মধ্যে কেনাকাটার আগ্রহ বেড়েছে। কেনাকাটার জন্য নারী-পুরুষরা ভিড় করছেন শহরের নিমতলা মোড়ে, বাজার মসজিদ মার্কেট,রাজ মার্কেট, বনানী মার্কেট,গামারগলী কাপড় পট্রি মতো গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটগুলোতে। আর সেখানে দরদামে ব্যস্ত সময় পার করেছেন বিভিন্ন মার্কেটের দোকান মালিক ও কর্মচারীরা।

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, ইফতারের পর পরই মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। নিজেদের পছন্দ মত কেনাকাটা করতে ব্যস্ত ক্রেতারা। দোকানিরা বলছেন, যেহেতু ঈদের আর বেশি দিন নেই, তাই ক্রেতা বেড়েছে। চমক ফ্যাশানের মালিক সোহেল বলেন, “এবারের ঈদ কালেকশন আগে থেকে স্টক করা রাখা হয়েছে। স্পেশাল কিছু প্রোডাক্ট এনেছি।“গত বছর থেকে এ বছর আমাদের সালোয়ার-কামিজের মান ও ডিজাইন আরও উন্নত করা হয়েছে।

এ ছাড়া এখানে শার্ট, প্যান্ট, জামদানি শাড়ি, সিল্ক শাড়ি, সুতি শাড়ি এবং মসলিন শাড়ি আছে। এবার মসলিনের সালোয়ার কামিজ পাওয়া যাচ্ছে, যা গতবার ছিল না।” ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতাদের ভিড় নিয়ে তিনি বলেন, “সকালে ক্রেতার আনাগোনা কম থাকলেও সন্ধ্যা থেকেই ক্রেতা বাড়তে থাকে। সামনে আরও বাড়বে বলে আশা করছি।”রাজ মার্কেটের কবির বোরখা হাউসের মালিক কবির সরকার বলেন, “শুরু হয়েছে ঈদের আমেজ। মানুষ এখন ভালোই কেনাকাটা করছে। কারণ পরে যারা কিনতে আসে, তারা ঠিক মতো সাইজ পান না। এটা একটা সমস্যা।”গার্মেন্টস ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, “তিন-চার দিন ধরে ক্রেতার উপস্থিতি বৃদ্ধি পেয়েছে।

আমাদের বেচা-বিক্রি আগের থেকে বেড়েছে। মার্কেটও জমজমাট হচ্ছে। এ ছাড়া তরুণরা ঈদের কেনাকাটার জন্য মার্কেটে বের হতে শুরু করেছে। কোন মার্কেটে নতুন ডিজাইনের কী আসলো তা নিশ্চিত হয়ে কিনতে চান তারা। গৌরপাড়া গ্রাম থেকে আসা ক্রেতা সুজন বলেন, “বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছি পছন্দ হলে কিনে নেব। তাছাড়া প্রতিদিনই নতুন নতুন ড্রেস আসে, সেগুলো দেখে যাচ্ছি সিদ্ধান্ত নিবো।কাটাবাড়ী গ্রামের নাজমুন নাহার বলেন, “সময় বের করে অল্প অল্প করে কিনে রেখেছি।

পরিবারের সবার জন্যই কিনেছি। শেষ দিন মার্কেটে ভিড় বেশি হয়। তাই আগে ভাগে সব কেনাকাটা শেষ করেছি। এদিকে অল্প আয়ের মানুষেরা জুতা কেনাকাটার জন্য ফুলবাড়ী সৌখিন সু-হাউস ভিড় করেছে সৌখিন সু-হাউসের মালিক সাবেক মেয়র মানিক সরকার তার জুতার দোকানে ৫০ ভাগ ছাড়ে জুতা বিক্রয়ের ব্যবস্থা করেছে। যেখানে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। লিলি বস্ত্রালয়ের মালিক কাপড় ব্যবসায়ী গোলাম কুদ্দুস বলেন, “আমাদের এখানে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০০ টাকা পর্যন্ত জামাকাপড় পাওয়া যায়।

মূলত নিম্ন আয়ের মানুষরাই আমাদের ত্রেতা। তাদের কাছে আমরা বেশি লাভ করি না।গামারগলী কাপড় পট্রিতে কেনাকাটা করতে আসেন গড় ইসলামপুরের রিকশাচালক আঙ্গুর মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। ভালো কোনো মার্কেটে যেতে পারি না। এই মার্কেটে অনেক কম দামে কাপড়-চোপড় কিনতে পারি। এতেই আমরা খুশি। আটপুকুর থেকে আসা নুর বানু বলেন, “হামরা গরিব মানুষ ভাই।

এই ফুটপাতের দোকানে কেনাকাটা করি। এখানে কম দামে ভালো জিনিস পাওয়া যায়।” দোকানদার আমিনুর মিয়া বলেন, “আমরা এখানে বেশি দামের কাপড় উঠাই না। কারণ এখানে বড় লোকেরা আসে না। তবুও ঈদে ভালো ব্যবসা হচ্ছে।“ফুলবাড়ী পৌর মেয়র আলহাজ¦ মো. মাহমুদ আলম লিটন বলেন, ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা যেন নির্বিঘ্নে কেনাকাটা করতে পারেন, সেজন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা আমরা চেয়েছি।

ইতোমধ্যে শহরের জনবহুল জায়গায় আনসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এবং পৌরসভা সর্বদা তৎপর রয়েছে। ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পৌরশহরের পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। যেকোনো ধারণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে মার্কেটগুলোতে পুলিশি নজরদারি চালানো হচ্ছে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by