রাজশাহী

বগুড়ার মোকামতলায় জমির আইলে অরহড় ডাল চাষ

  প্রতিনিধি ২০ অক্টোবর ২০২০ , ২:৩৭:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

আপেল মাহমুদ, মোকামতলা (বগুড়া) :

বগুড়ার মোকামতলা ও আশপাশের এলাকাগুলোতে জমির আইলে অরহড় ডাল চাষ করছে কৃষক । সময়ের আবর্তনে এই ডাল চাষ কমে গেলেও আবারো জমির আইল, গ্রামীণ মেঠো রাস্তার ধারে এবং সাথী ফসল হিসেবে কচু, হলুদ ও আদার জমির মাঝে চাষ করছেন। কৃষকরা বলেন, অরহড় বীজ থেকে চাষ হয়।

জাত ভেদে এ গাছ ১০/১২হাত লম্বা ও ৫০/৬০টি শাখা প্রশাখা যুক্ত হয়ে থাকে। ডালপালা জালানী, পাতা ও ডগা পচিয়ে জৈব সার তৈরি করা যায়। ঘন করে লাগানোর ফলে বাড়ির বেড়া, মাটির ক্ষয় রোধ হয় বলে পুকুর এবং জমির আইলে লাগানো হয়। এটি পতিত জমি, জমির আইলে, বাড়ির আশেপাশে, ধান বা সবজি ক্ষেতে পাশে, গ্রামীণ রাস্তার দু’পাশে খুব সহজে চাষ করা যায়। অরহড় গাছ শুকানোর পর উৎকৃষ্ট মানের খড়ি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে তারা বলেন, মার্চ-এপ্রিল মাসে বীজ বপন করা হয়। লাঙল টেনে বা ২ইঞ্চি পরিমান গর্ত করে বীজ বোপণ করলেই চারা গাছ হয়ে যায়। নভেম্বর-ডিসেম্বরে ফুল এবং তার কিছুদিন পর থেকেই ফল আসে। দু’একবার কীটনাশক স্প্রে করলেই চলে। এরজন্য আলাদা কোন খরচ করতে হয় না।

সরেজমিনে মোকামতলার কাশিপুর, ভাগকোলা, হরিপুর, গনেশপুর, শিবগঞ্জ পৌর এলাকার উথলী, বেড়াবালা, দেউলী ইউপির মধুপুর, রহবল এলাকায় কৃষি জমিগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, হলুদ, কচু, এবং কপির জমির আইল ও রাস্তার ধারে অড়হর ডালের গাছ শোভা পাচ্ছে।

এলাকার গৃহিনীরা বলেন, গ্রামাঞ্চলে আঞ্চলিক ভাষায় এটি আটর কালাই বলে পরিচিত। এটি কাচা অবস্থায় খিচুড়ি, সবজি এবং শুকনো হলে ডাল হিসেবে খাওয়া হয় বলে একটি গরীবের ডালও বলা হয়ে থাকে। মোকামতলা বাজারের আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসক মাহাবুল ইসলাম বলেন, প্রোটিন সমৃদ্ধ শরীর গঠনের জন্য অরহড় ডাল খুবই উপকারী। এর পাতার রস জন্ডিস রোগ নিরাময়েও কার্যকর। এছাড়া এর পাতা ও ডগা পশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ্রী বিতোশ চন্দ্র সাহা বলেন, এই এলাকার কৃষকরা আগে থেকেই জমির আইলে অরহড় ডাল চাষ করে। এতে একদিকে যেন ক্ষেতের বেড়া হিসেবে কাজ করে অন্যদিকে এই গাছে পাতা জমিতে সবুজ সার তৈরী করে। অরহড় ডাল খেতেও যেমন পুষ্টিগুন, তেমনি কৃষকের ফসল ও জালানী হিসেবেও গাছটি উপকারী।

Powered by