বাংলাদেশ

‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হলেও নেপথ্যের কুশীলবদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারিনি’

  প্রতিনিধি ১৭ মার্চ ২০২২ , ৬:০৬:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ অবিচ্ছেদ্য সত্তা। বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় আজকের মুক্ত স্বাধীন স্বদেশ। তার জীবনালেখ্য বাংলাদেশকে মুক্ত করার আন্দোলন-সংগ্রামের জীবনালেখ্যর সঙ্গে সম্পৃক্ত। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন বাংলাদেশের আন্দোলন-সংগ্রামের জীবন। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য বাঙালি জাতির স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য ছিল খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে একটি রাজনৈতিক সমাজব্যবস্থা বিনির্মাণ। বঙ্গবন্ধুর জন্ম ও স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম পারস্পরিক সম্পর্কে যুক্ত।’

বৃহস্পতিবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২২ উপলক্ষে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে পিরোজপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেবেকা খান, সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ আলী আজম, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চৌধুরী রওশন ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার যুগ্ম পরিচালক আব্দুল কাদের, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান ফুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রাসেল পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক সুমন শিকদার, জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক শিকদার চান, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোপাল বসু, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাকসুদুল ইসলাম লিটন, স্থানীয় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আত্মপ্রত্যয়ে দৃঢ়চেতা বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে ন্যায়সঙ্গত অধিকার প্রতিষ্ঠার জায়গায় নিয়ে এসেছিলেন। আমাদের স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পথে বঙ্গবন্ধু দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে গোটা জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুতির সব নির্দেশনা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বাঙালি জাতি সেদিন বঙ্গবন্ধুর অঙ্গুলি হেলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধুকে দেশে ও দেশের বাইরে অনেকে মেনে নিতে পারেনি। তাই স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু যখন স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ বিনির্মাণে আত্মনিয়োগ করেছিলেন তখন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে আবার সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়, স্বাধীনতাবিরোধীদের পুনর্বাসন করা হয়। রাজাকারদের সরকারের মন্ত্রী করে নিকৃষ্ট ঘটনার জন্ম দেওয়া হয়। এভাবে বাংলাদেশের ইতিহাসও পাল্টে দেওয়া হয়।’

শ ম রেজাউল করিম যোগ করেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হলেও এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের বিরুদ্ধে আমরা এখনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি। নেপথ্যের কুশীলবদের খুঁজে বের করা অনিবার্যভাবে ইতিহাসের দায়। পিতা হত্যার ষড়যন্ত্রকারী এবং হত্যাকারী ও ষড়যন্ত্রীকারীরা যাদের প্রশ্রয় পেয়েছিল তাদের বিচার এখন সময়ের দাবি। তা না হলে ইতিহাসের দায়মুক্তি হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘লাল-সবুজের পতাকা যদি থাকে বঙ্গবন্ধু সেখানে থাকবেন। লাল-সবুজের পতাকা থাকলে ত্রিশ লাখ শহিদ আর দুই লাখ নির্যাতিত মা-বোনকে আমরা খুঁজে পাব। তাই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে প্রতিজ্ঞা হোক মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেকে নিয়ে আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। দেশে ও দেশের বাইরে ষড়যন্ত্রকারীরা আবার সোচ্চার হয়ে উঠেছে। তাদের রুখে দিতে আমাদের ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা করতে হলে, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।’

এদিকে আজ সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরীর নেতৃত্বে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুবোল বোস মনি, মো. তৌফিকুল আরিফ ও এসএম ফেরদৌস আলম, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. হেমায়েৎ হুসেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা, মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহা. আতিয়ার রহমানসহ মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর সংস্থার কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

পরে রাজধানীর মৎস্য ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by