দেশজুড়ে

বান্দরবানে সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা পরিদর্শনে ডিসি,ডিআইজি,এসপি

  প্রতিনিধি ৩ এপ্রিল ২০২৪ , ৬:৫৯:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

বান্দরবানে সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা পরিদর্শনে ডিসি,ডিআইজি,এসপি

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার (৩ এপ্রিল) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন, পুলিশের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান এবং সোনালী ব্যাংক চট্টগ্রাম বিভাগের জিএম মো. মুসা খান।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্রাইম সিনগুলো সনাক্ত করছে। এছাড়াও ব্যাংকের ডিবিআর, সিসি ক্যামেরা ফুটেজ থানায় জব্দ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি সকলেই ঘটনার তদন্তে সহযোগিতা করছে। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

ঘটনার সাথে পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) জড়িত থাকার বিষয়ে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, “নানাভাবে, নানা ইঙ্গিতে একটি সংগঠনের নাম উঠে এসেছে। তবে এটি তদন্ত সাপেক্ষে জানানো হবে।”

জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, “গতকাল রাত ৮.২০ এর দিকে সোনালী ব্যাংকে একটি হামলা হয়েছে। এতে সোনালী ব্যাংকের পুলিশের গার্ড রুমে থাকা ১০টি অস্ত্র, ৩৮০ রাউন্ড গুলি এবং আনসার সদস্যদের ৪টি শর্টগান ও ২৫ রাউন্ড গুলি লুট করা হয়েছে। ব্যাংকের ভেতরেও ভাঙচুর করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ঘটনার সাথে কে বা কারা জড়িত, তা তদন্ত চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কিছুটা অনুমান করা যাবে। বাকিটা তদন্ত সাপেক্ষে নিশ্চিত হওয়া যাবে। যে বা যারা এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

বর্তমানে স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে পুরো উপজেলা জুড়ে।

এদিকে ঘটনার প্রেক্ষিতে রুমা উপজেলা পরিষদ, সরকারি কর্মচারী ও উপজেলার সাধারণ মানুষ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। জেলা সদরে মানববন্ধন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের পক্ষ থেকে।

নিখোঁজ ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনের স্ত্রী বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের সহকারী অধ্যাপক মিসেস ইশফাত ঘটনার পর থেকে নির্বাক হয়ে আছেন। নিখোঁজ ব্যাংক ম্যানেজারের ভাই চট্টগ্রাম কর্ণফুলী থানার এসআই মোঃ মিজান জানান, “আমি এখন রুমায়। ভাইয়ের কোনো খবর পাইনি। পরিবার থেকে এখনও আলাদাভাবে আইনগত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।”

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) তারাবির নামাজ চলাকালে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের একটি সশস্ত্র গ্রুপ সোনালী ব্যাংক পিলসি শাখায় ঢুকে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ২ কোটি টাকা লুট করে। তারা ব্যাংকের আইনশৃঙ্খলায় নিযুক্ত পুলিশ সদস্য, আনসার সদস্যের অস্ত্র ও গুলি লুট করে এবং ব্যাংকের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে মসজিদ থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এছাড়াও নামাজ চলাকালে সকল মুসল্লিদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। অভিযোগ উঠেছে যে, পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) এই ঘটনার সাথে জড়িত।

ঘটনার পর উপজেলায় পুলিশ, বিজিবি, সেনাবাহিনীর টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারে মাঠে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by