বাংলাদেশ

বিশাল সমুদ্রসীমা রয়েছে আমাদের, পরমুখী হয়ে থাকবো কেন : প্রধানমন্ত্রী

  প্রতিনিধি ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ , ৪:৪২:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

ভোরের দর্পণ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন দায়িত্ব পালনে সক্ষম এমন একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন দায়িত্ব পালনে সক্ষম করে তুলতে আমরা কোস্ট গার্ডকে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, আপনারা সবসময় দেশপ্রেম, সততা ও ঈমানের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে কোস্টগার্ডের সুনাম ও মর্যাদা সমুন্নত রাখবেন। দেশের সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন বলে আমি আশা করি।

আজ মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সদর দফতরে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের নিজস্ব জনবল নিয়োগ কার্যক্রম এবং ফোর্স পুনর্গঠনের মাধ্যমে এ বাহিনীর সক্ষমতা অর্জনে আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ব্লু-ইকোনমি ও গভীর সমুদ্রে নিরাপত্তা প্রদানের জন্য এ বাহিনীর রূপকল্প-২০৩০ ও ২০৪১ অনুযায়ী জাহাজ, সরঞ্জামাদি ও জনবল আরও বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

দেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্পকে আরও বিকশিত করার জন্য সরকারের দক্ষিণাঞ্চলে আরও একাটি শিপইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, নারায়ণগঞ্জ ড্রাইডক ও চট্টগ্রাম ড্রাইডক সেটাও আমরা নৌবাহিনীর হাতে সমর্পণ করেছি। ভবিষ্যতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে আরও একটি শিপইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা আমাদের আছে। আশা করছি, আমরা তা করতে পারবো। ইতিমধ্যে আমরা জায়গা পছন্দ করে রেখেছি।

তিনি বলেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের পরামর্শে অলাভজনক উল্লেখ করে খুলনা শিপইয়ার্ড ও বিএনপি সরকারের আমলে বন্ধ করে দেয়ার প্রক্রিয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা সরকারে আসার পর এই শিপইয়ার্ড নৌবাহিনীর হাতে অর্পণ করি।

শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু আমাদের নদীমাতৃক বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা রয়েছে, তাই আমরা পরমুখী হয়ে থাকবো কেন। তাছাড়া ঐতিহাসিক কাল থেকেই বাংলাদেশে জাহাজ শিল্প নির্মাণ ও রফতানি বাণিজ্য ছিল। তাই সেটাকে আমরা আবারো কার্যকর করি। যার ফলে আমরা শুধু বিদেশ থেকে কিনে না এনে নিজেরাও তৈরি করার সক্ষমতা অর্জন করেছি ও ভবিষ্যতে আরও করবো।

তিনি বলেন, গত ১৩ বছরে কোস্টগার্ডের জন্য বিভিন্ন আকারের ৭৭টি জাহাজ ও জলযান নির্মাণ ও সংযোজন করা হয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ড ও খুলনা শিপইয়ার্ডে কোস্টগার্ডের জন্য দু’টি ইনশোর প্যাট্রোল ভেসেল, একটি ফ্লোটিং ক্রেন, দু’টি টাগ বোট ও ১৬টি বোট তৈরি করা হয়েছে। কোস্টগার্ডের ভেসেল ও জাহাজ নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণর জন্য গজারিয়ায় একটি ডকইয়ার্ডও নির্মাণ করা হচ্ছে। নিজস্ব ইয়ার্ডে জাহাজ তৈরির সক্ষমতা আমাদের আত্মবিশ্বাসকে আরও সুদৃঢ় করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

গত বছর একইসঙ্গে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের জন্য ৯টি জাহাজ ও একটি ঘাঁটি কমিশনিং করার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নৌযানগুলো যুক্ত হওয়ায় সংস্থাটির জন্য একটি নতুন অধ্যায় সূচিত হয়েছে। এছাড়াও কোস্টগার্ডের গভীর সমুদ্রে টহল উপযোগী আরও চারটি ওপিভি ও ৯টি প্রতিস্থাপক জাহাজের নির্মাণেরও অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোস্টগার্ডকে আধুনিক ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে খুব শিগগির এ বাহিনীতে যুক্ত হতে যাচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির জাহাজ, হোভ্যারক্র্যাফট ও দ্রুত গতি সম্পন্ন বোট। এছাড়াও গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনয়নের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সঙ্গে ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনেরও উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।

আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন এসব জাহাজের সংযোজন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড অধিকতর সক্ষমতা অর্জন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল চার কোস্টগার্ড সদস্যকে তাদের সাহসিকতা ও বিশেষ কৃতিত্বের জন্য পদক তুলে দেন। পরে কোস্টগার্ডের কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়।

প্রধানমন্ত্রী কোস্টগার্ড সদস্যদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন এবং তাকে রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানানো হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by