দেশজুড়ে

মিরসরাইয়ের বিএসআরএম কারখানায় ভয়াবহ বিষ্ফোরণ, ৩ শ্রমিকের মৃত্যু

  প্রতিনিধি ৭ জুন ২০২০ , ৭:৫৬:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: মিরসরাইয়ে বিএসআরএম ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ প্লেট বিষ্ফোরনে লোহার গলিত সীসায় দগ্ধ হয়ে ৩ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, আশঙ্কা জনক আরো দুই শ্রমিককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। বিষ্ফোরণের ঘটনাস্থলেই মারা যান এক শ্রমিক। অন্যদের আবস্থার অবণতি হলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসফাতাল থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান আরো দুই জন।

শনিবার বিকাল তিনটার দিকে হঠাৎ বিষ্ফোরনে এই হতা হতের ঘটনা ঘটে। আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য চমেকে নিয়েগেলে এক শ্রমিকের মৃত্যু নিশ্চিত করে হাসফাতাল। এছাড়া মধ্যরাতে মারাত্বক আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিট থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মারা যান আরো দুজন।

নিহতরা হলো মিরসরাই উপজেলার ১৪ নং হাইতকান্দি ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে আবুল কাশেম (৫২), ফেনী জেলার ছনুয়া বাজার এলাকার কামাল উদ্দিনের ছেলে মহি উদ্দিন (৩৫), ফেনী জেলার দাগন ভূঁইয়া উপজেলার সেকান্দরপাড় গ্রামের নুর নবীর ছেলে নজরুল ইসলাম (৩৪) এছাড়া আহতরা হলেন মোঃ মহিউদ্দিন ও নুর হোসেন। তারা ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাদের অবস্থা সংকটাপন্ন।

প্রতিষ্ঠানের এ্যাসিষ্টেন্ট ম্যানেজার (পিআর) ওমর শোয়াইব জানান, বিএসআরএম প্লান্টে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় আহত ৪ জন শ্রমিককে চমেক থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পথে শনিবার মধ্যরাতে কুমিল্লা পর্যন্ত পৌছালে মোঃ নজরুল ইসলাম এবং মোঃ গিয়াস উদ্দিন মারা যায়। এর আগে মারা যায় আবুল কাশেম। আহত আরো ২ শ্রমিক বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন। অপ্রত্যাশিত এই পরিস্থিতি ও দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটন করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বিএসআরএম কতৃপক্ষ এটি পুরো বিএসআরএম পরিবারের জন্য দুঃখের দিন জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করেছে এবং হতাহতদের প্রয়োজনীয় সহায়তার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে।

এবিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল ছুটে যাই। তখন জানতে পারি কারখানার গরম তরল পদার্থে শ্রমিকরা দগ্ধ হয়েছে। কতৃপক্ষ আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও তিনি জানান।

শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এসব শ্রমিকরা নাম মাত্র দৈনিক পারিশ্রমিকে এই কারখানায় কাজ করে আসছে। দেলোয়ারদের মতো প্রায় ৩ হাজার শ্রমিক রয়েছে যারা নাম মাত্র পারিশ্রমিকে জীবনের ঝুকি নিয়ে এই কারখানায় কাজ করে। বছরের পর বছর কাজ করলেও বিএসআরএম তাদের স্থায়ি নিয়োগ দেয় না। যার কারনে এসব শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে মারা গেলেও পবিারগুলো তেমন ক্ষতি পূরণ পায় না। উপস্থিত লোক দেখানো কিছু নগদ অর্থ দিয়ে মুখ বন্দ করে দেয় সকলের, ফলে পরবর্তীতে অসহায় হয়ে পড়ে এসব শ্রমিকের পরিবার গুলো। এবিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য বিএসআরএস কারখানার মানবসম্পদ বিষয়ক ব্যাবস্থাপক দেলোয়ার হোসেন মোল্লার ব্যাক্তিগত নাম্বারে বার বার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by