দেশজুড়ে

মুন্সিগঞ্জে রং মিস্ত্রির রহস্যজনক মৃত্যু, স্ত্রী-শ্বশুর আটক

  প্রতিনিধি ২৫ নভেম্বর ২০২৩ , ৬:০৮:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

মুন্সিগঞ্জে রং মিস্ত্রির রহস্যজনক মৃত্যু, স্ত্রী-শ্বশুর আটক

মুন্সিগঞ্জের নয়াগাঁও পশ্চিমপাড়া এলাকায় সুজন দেওয়ান (৩৬) নামের এক রং মিস্ত্রির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ পরকীয়া নিয়ে দাম্পত্য কলহের জেরে সুজনকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।

শনিবার (২৫ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নিহতের মরদেহ মর্গে পাঠায় পুলিশ।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সায়লা ও শ্বশুর মনির হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। সুজন-সায়লা দম্পত্তির চার ছেলে সন্তান রয়েছে।

নিহত সুজনের বোন আকলিমা বেগম জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরে সুজনের সঙ্গে তার স্ত্রীর পরকীয়া প্রেম নিয়ে মনোমালিন্য চলছিল। বিষয়টি একাধিকবার পারিবারিকভাবে মীমাংসা করা হয়। কিন্তু প্রায়ই এ বিষয়ে সন্তানদের সামনেই ঝগড়ায় করতেন তারা। সকালে তার কাছে ফোন আসে সুজন অসুস্থ। পরে ভাইয়ের ভাড়া বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান সুজন মারা গেছেন। সুজনের স্ত্রী ও শ্বশুরের অনুরোধে মরদেহ নিয়ে আকলিমা শহরের ইদ্রাকপুরে চলে আসেন।

পরবর্তীতে আত্মীয়রা দাফনের জন্য প্রস্তুতিকালে মরদেহের গলায় ও পিঠে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখে পুলিশকে জানান।

এদিকে পুলিশ এসে সুজনের স্ত্রী-সন্তান এবং শ্বশুরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের কথা অসঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় গ্রেফতার করা হয়।

নিহতের বাবা করিম দেওয়ান জানান, ‘আমার নাতিদের সাথে দেখা করতে দিত না সুজনের বউ। আমি লুকিয়ে দেখা করতাম। আমার ছেলেকে আসতে দিতো না আমাদের কাছে। আমার ছেলের যদি স্বাভাবিক মৃত্যু হয়, তাহলে গলায় রশির দাগ কেন?’

সুজনের স্ত্রী সায়লা বেগম বলেন, ‘সারারাত নেশা করে সুজন নিজে আত্মহত্যা করেছেন। সকালে আমার বড় ছেলে হামিম তার বন্ধুদের নিয়ে বাড়ির পাশে সুতার মিল থেকে তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরে আমরা মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

সায়লা বেগমের বাবা মনির হোসেন বলেন, ‘আমি থাকি অন্য বাসায়। রাতে আমার মেয়ের সঙ্গে জামাইয়ের কি হয়েছে আমি জানি না। সকালে খবর পেয়ে এসেছি।’

নিহতের বড় ছেলে হামিম বলেন, ‘রাতে মায়ের সাথে কয়েকবার মারামারি করেছেন আব্বা। মায়ের গলাটিপে ধরেছেন। মা কয়েকবার ঘুসি দিয়েছেন। পরে আব্বা বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। রাত ৩টার দিকে আব্বা ঘরের দরজা খুলতে বলে। কিন্তু আমরা দরজা খুলি নাই। এরপর আমি ঘুমিয়ে যাই। সকালে আমার বন্ধুরা জানায় বাবা সুতার কারখানায় মাটিতে ঘুমিয়ে আছেন। বন্ধুদের সঙ্গে গিয়ে আমি বাবার গলা থেকে গামছা খুলি। তারপর মাকে খবর দেই।’

মুন্সিগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খাইরুল ইসলাম জানান, ‘মৃতদেহের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এটি আত্মহত্যাও হতে পারে বা শ্বাসরোধ করে হত্যাও হতে পারে। ময়নাতদন্তের পর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

আরও খবর

Sponsered content

Powered by